কোচবিহারে শিল্প স্থাপনে উদ্যোগী রবি

জমি রয়েছে, শিল্পস্থাপন করার কেউ নেই। ভারী শিল্প তো নয়ই, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পেও তেমন ভাবে কাউকে এগিয়ে আসতে দেখা যাচ্ছে না। কোচবিহারে এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে শিল্পদ্যোগীদের নিয়ে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। আগামী ১৪ জুন তিনি কোচবিহারে ওই বৈঠক করবেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৬ ০৮:৩১
Share:

জমি রয়েছে, শিল্পস্থাপন করার কেউ নেই। ভারী শিল্প তো নয়ই, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পেও তেমন ভাবে কাউকে এগিয়ে আসতে দেখা যাচ্ছে না। কোচবিহারে এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে শিল্পদ্যোগীদের নিয়ে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। আগামী ১৪ জুন তিনি কোচবিহারে ওই বৈঠক করবেন। ওই দিন শিল্পদ্যোগীদের পক্ষ থেকে নতুন মন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। এর পরেই তিনি তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। কোচবিহারে ক্ষুদ্র শিল্প তৈরিতে পঞ্চাশ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়ার কথা আগেই ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে কথা টেনেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “এই জেলায় শিল্প তৈরির সমস্ত রকম সম্ভাবনা আছে। ক্ষুদ্র শিল্পের উপরে পঞ্চাশ শতাংশ ছাড় দেওয়া হচ্ছে। উত্তর-পূর্বের সাত রাজ্যের বাজার রয়েছে। আশা করছি বৈঠকে থেকে ফল পাব।”

Advertisement

কোচবিহার ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অ্যান্ড কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সম্পাদক রাজেন্দ্রকুমার বৈদ এ বারে শিল্পস্থাপনের ব্যপারে আশাবাদী। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী কোচবিহারে শিল্প স্থাপনের ব্যাপারে বহু আগেই উদ্যোগ হয়েছেন। তাতে অনেকটাই সাড়া মিলেছে। নতুন ভাবে অনেকেই যোগাযোগ করছেন। এ বারে রবীন্দ্রনাথবাবু উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী হওয়ায় শিল্প স্থাপনে অনেকেই এগিয়ে আসবে বলে আমরা মনে করছি।” কোচবিহার জেলা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুকুমার সাহাও ওই ব্যাপারে আশাবাদী। তিনি বলেন, “জেলার মানুষ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী হয়েছেন, সেই ফল আমরা পাবই। শুধু তাই নয়, রবীন্দ্রনাথবাবু শিল্প স্থাপনের ব্যাপারে বরাবর আগ্রহী। এবারে তাঁর ওই কাজ জোর আসবে বলেই আমরা মনে করছি।” তিনি চকচকা শিল্পকেন্দ্রে জুটপার্ক দ্রুত চালু করার ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়ার জন্য আর্জি জানয়েছেন। তিনি বলেন, “ওই জমি পড়ে রয়েছে। সেখানে জুট পার্ক গড়ে উঠলে ভাল হবে।”

কোচবিহার কেন শিল্পস্থাপনে পিছিয়ে রয়েছে? এই প্রশ্ন তুলে বার বার এলাকার বিভিন্ন ব্যাবসায়ী সংগঠন সরব হয়েছেন। এমনকি একটি মাত্র শিল্পাঞ্চল চকচকা, সেখানেও নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। তা মেটাতে কারও কোনও আগ্রহ নেই বলে অভিযোগ। রবীন্দ্রনাথবাবু মন্ত্রী হওয়ার পরে এই অবস্থারই পরিবর্তন ঘটাতে চান। তিনি দাবি করেন, ক্ষুদ্র, মাঝারি তো বটেই ভারী শিল্পস্থাপনেও তিনি উদ্যোগী হবেন। সঠিক সময়ে যাতে জমির অভাব না হয়, সে জন্য সেই কাজও সেরে ফেলছেন তিনি। অসম যাওয়ার রাস্তায় ডাওয়াগুড়িতে পাঁচ হাজার একর জমি দেখে রেখেছেন তিনি। জেলার অন্যত্রও জমি খোঁজার কাজ জারি রেখেছেন মন্ত্রী।

Advertisement

কোচবিহারে প্রতি দিন উত্তর-পূর্বের সাত রাজ্যে নানা সামগ্রী যাচ্ছে। নির্মাণ সামগ্রী থেকে শুরু করে নানা জিনিস ট্রাকের পর ট্রাক বোঝাই বাইরে থেকে ওই রাজ্যগুলিতে ঢুকছে। এমন সুবিধে থাকা সত্ত্বেও কেন কোচবিহার পিছিয়ে থাকবে, সে প্রশ্ন উঠেছে? যদিও শিল্পদ্যোগীদের দাবি, শিল্পস্থাপনের ক্ষেত্রে যে শর্তগুলি প্রধান তার ঘাটতি রয়েছে জেলায়। যোগাযোগ ব্যবস্থা, কাঁচামাল এবং নিরাপত্তার আশ্বাস সে ভাবে না মিললে সাড়া পাওয়া কঠিন। মন্ত্রীর দাবি, যোগাযোগ ব্যবস্থার এখন অনেক পরিবর্তন হয়েছে, আগে যে রাস্তা পাড়ি দিতে পাঁচ ঘণ্টা লাগত, এখন সেই পথ আড়াই ঘণ্টায় যাওয়া যায়। বিমান পরিষেবাও চালু হওয়ার মুখে। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা নেই বলে মন্ত্রী দাবি করেন। তিনি বলেন, “কৃষিজাত শিল্প গড়ে উঠতে পারে সহজেই। সে ক্ষেত্রে কাঁচামালের অভাব নেই। অন্য আরও কী শিল্প হতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। সরকার পাশে রয়েছে। যে কেউ আগ্রহী থাকলে তাঁকে সব রকম সহযোগিতা করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন