কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস।
মন্ত্রীর নাম করে কোথাও বন্যাত্রাণের টাকা তোলা হচ্ছে, কোথাও বা রক্তদান শিবির হচ্ছে। অথচ কিছুই ঘুণাক্ষরেও জানেন না মন্ত্রী। সম্প্রতি এমনই ঘটনা ঘটেছে একটি সংশোধনাগারে। এর পরেই কারা দফতরের ডিজি অরুণকুমার গুপ্তকে এ ধরনের অসাধু অভ্যাস বন্ধ করার নির্দেশ দেন কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস। দিন তিনেক আগে রাজ্যের সমস্ত জেলে এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন ডিজি। তাতে বলা হয়েছে, অনুমতি ছাড়া মন্ত্রী বা কারা দফতরের কোনও কর্তার নাম-ছবি ব্যবহার করা যাবে না পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুনে। করলে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সংগঠনের নেতার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কারা দফতর সূত্রের খবর, মাস দেড়েক আগে রাজ্যের শাসক দল প্রভাবিত কারাকর্মীদের যে সংগঠন আছে, তারই একটি গোষ্ঠী বন্যাত্রাণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ত্রাণ তহবিলে টাকা তুলতে শুরু করে। সেখানে বলা হয়েছিল, কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসের অনুমতিক্রমেই কাজ হচ্ছে। ঘটনাটি জেনে মন্ত্রী ব্যক্তিগত ভাবে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান করেন। জানতে পারেন, বন্যাত্রাণের জন্য টাকা তুলে তা নয়-ছয়ের কয়েকটি অভিযোগ আছে ওই গোষ্ঠীর নামে।
যদিও কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস এবং ডিজি অরুণকুমার গুপ্ত এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তবে কারা দফতর সূত্রে খবর, এর আগেও তৃণমূল প্রভাবিত কারারক্ষী সংগঠন ‘বঙ্গীয় কারারক্ষী সমিতি’ এবং অফিসারদের সংগঠন ‘স্টেট গভর্নমেন্ট জেল এমপ্লয়িজ ফেডারেশন’-এর বিরুদ্ধে অনিয়মের বেশ কয়েকটি অভিযোগ উঠেছে। কিছু দিন আগে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বঙ্গীয় কারারক্ষী সমিতির সংগঠন ভেঙে দেন। তাই বন্যাত্রাণে টাকা তোলা নিয়ে অভিযোগ ওঠায় মন্ত্রী আর ঝুঁকি নিতে চাননি। যদিও কারারক্ষীদের সব সংগঠনই এ সব অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছে। অফিসারদের সংগঠনটির এক নেতার কথায়, ‘‘আমরা কখনওই এ সবে ছিলাম না।’’ অন্য দিকে, বঙ্গীয় কারারক্ষী সমিতির নেতা নিরুপম খাঁড়া বলেন, ‘‘আমাদের সংগঠনের কেউই এ সবে নেই। তবে যাঁরা করেছেন, তাঁরা খুবই অনৈতিক কাজ করেছেন।’’