লুট হওয়া এটিএম। —নিজস্ব চিত্র।
আবার শিলিগুড়িতে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম লুট করে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। ভক্তিনগর থানার আশিঘর আউটপোস্টের লোকনাথ বাজারের একটি এটিএম এ বার লুট করে তারা। অপারেশনের পর চম্পট দেওয়ার সময় পুলিশের নজরেও পড়েছিল দুষ্কৃতীদের গা়ড়ি। কিন্তু তাড়া করেও দুষ্কৃতীদের ধরতে পারেনি পুলিশ!
আশিঘর আউটপোস্ট থেকে মেরেকেটে ৫০০ মিটারের মধ্যে একটি এটিএম কী ভাবে দুষ্কৃতীরা লুট করল, তা নিয়ে নানা প্রশ্নের মুখে পড়ছে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট। শুধু তা-ই নয়, নাগালে থাকার পরেও দুষ্কৃতীরা পালিয়ে গেল কী ভাবে, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) রাকেশ সিংহ বলেন, ‘‘পুলিশ তাড়া করেছিল। দুষ্কৃতীদের ধরার চেষ্টা চলছে।’’ এসি রবীন থাপাও বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টির তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাত ৩টে নাগাদ একটি টাটা সুমো করে এসে অপারেশন চালায় দুষ্কৃতীরা। রং লাগিয়ে দেওয়া হয় এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরাগুলিতেও। এর পর গ্যাস কাটার দিয়ে এটিএম মেশিন কেটে সর্বস্ব লুট করে দুষ্কৃতীরা। পরে আগুনও ধরে যায় ভাঙা মেশিনটিতে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। খবর দেওয়া হয় দমকলকে। দমকল এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সূত্রের খবর, অন্তত ১৫ লাখ টাকা লুট হয়েছে।
এটিএম লুট করে পালানোর সময় আশিঘর আউটপোস্টের পুলিশ ভ্যানের নজরে পড়েছিল দুষ্কৃতীদের টাটা সুমো। গাড়িটিকে দেখতে পেয়ে তাড়াও করেছিলেন পুলিশকর্মীরা। কিন্তু গাড়িটিকে শেষমেশ ধরা যায়নি। এর পরেই পার্শ্ববর্তী সমস্ত থানাকে সতর্ক করা হয়। খবর দেওয়া হয় জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং উত্তর দিনাজপুর জেলা পুলিশকেও।
পুলিশ সূত্রে খবর, টাটা সুমোটি সাদা রঙের ছিল। পালানোর সময় দলের এক জনকে ফেলে রেখেই পালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। পরে আবার তারা ফিরে আসে। ওই সদস্যকে নিয়ে পালানোর সময়েই তাদের দেখতে পায় আশিঘর আউটপোস্টের পুলিশ। কিন্তু মাঝে অন্য একটি গাড়ি এসে তাদের বিভ্রান্ত করে। সেই সুযোগে বাইপাস ধরে সেবক রো়ড দিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, টাটা সুমোটি শিলিগুড়ির অম্বিকানগর থেকে চুরি করেছিল দুষ্কৃতীরা। গাড়ির মালিকেরও খোঁজ পায় পুলিশ। সুজিত সুর নামে ওই মালিকের বক্তব্য, ‘‘মঙ্গলবার রাতেই সিকিম থেকে ভাড়া খেটে শিলিগুড়িতে ফিরেছিলাম। বাড়িতেই রেখেছিলাম গাড়িটা। বুধবার সকালে এক জন আমায় ফোন করে জানান, আমার গাড়ি মাটিগাড়ার হিমাচল বিহারে পড়ে রয়েছে। তার পরেই আমি বিষয়টা পুলিশকে জানাই। পরে ওই গাড়ি থেকে স্প্রে, জ্যাকেট আর গ্যাসকাটার মিলেছে।’’