বন্‌ধে মিশ্র সাড়া পুরুলিয়ায়

জেলার বেশির ভাগ এলাকাতেই এ দিন জনজীবন ছিল স্বাভাবিক। তবে বেসরকারি বাস চলেনি। ছোট গাড়িও ছিল হাতে গোনা। রেলের আদ্রা ডিভিশন সূত্রের দাবি, বন‌্‌ধের প্রভাব পড়েনি ট্রেন চলাচলে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৮ ০১:২৩
Share:

আদ্রা স্টেশনের কাছে। নিজস্ব চিত্র

রবিবার হওয়ায় এমনিতেই সরকারি অফিস, আদালত বন্ধ ছিল। জঙ্গলমহলের পাঁচটি ব্লক ও রঘুনাথপুর মহকুমার পাড়া ছাড়া বন্‌ধে বিশেষ সাড়া মিলল না। বলরামপুরে দলীয় কর্মী দুলাল কুমারকে খুনের অভিযোগ তুলে রবিবার ১২ ঘণ্টার পুরুলিয়া জেলা বন্‌ধ ডেকেছিল বিজেপি। জেলার বেশির ভাগ এলাকাতেই এ দিন জনজীবন ছিল স্বাভাবিক। তবে বেসরকারি বাস চলেনি। ছোট গাড়িও ছিল হাতে গোনা। রেলের আদ্রা ডিভিশন সূত্রের দাবি, বন‌্‌ধের প্রভাব পড়েনি ট্রেন চলাচলে।

Advertisement

তৃণমূল দাবি করেছে, বিজেপির ডাকা বন্‌ধে মানুষ সাড়া দেননি। দলের জেলাসভাপতি শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘বন্‌ধ সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। ছুটির দিনে এমনিতেই বাজার হাট একটু ফাঁকা থাকে। এ দিনও সে রকমই ছিল।” তবে বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর পাল্টা দাবি, সর্বাত্মক বন্‌ধ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল যে ভাবে খুনের রাজনীতি শুরু করেছে তার বিরুদ্ধে আমরা বন্‌ধ ডেকেছিলাম। মানুষ সাড়া দিয়ে বন্‌ধ সফল করেছেন।”

বন্‌ধ সফল করতে রাজনৈতিক দলগুলির যে ধরনের তৎপরতা দেখা যায়, সেই ছবিটা এ দিন চোখে পড়েনি। পুরুলিয়া-রাঁচী সড়কে জয়পুরের ফরেস্ট মোড় ও তুলিনে পথ অবরোধ করেছিলেন বিজেপির কর্মীরা। অবরোধ হয়েছে পুরুলিয়া জামসেদপুর ৩২ নম্বর জাতীয় সড়কে আড়শার কাঁটাডিতে। কিছু সময়ের জন্য বোরো থানার সামনে অবরোধ করেন বিজেপির কর্মী সমর্থকেরা। পুরুলিয়া শহরে বন্‌ধ সফল করার জন্য মিছিল করেছিল বিজেপি। আর কোথাও সে ভাবে বিজেপির কর্মীদের রাস্তায় নামতে দেখা যায়নি।

Advertisement

কেন? বিজেপির জেলা সভাপতির দাবি, মানুষের কাছে বন্‌ধে সাড়া দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন। জোর করে বন্‌ধের রাজনীতি করতে চাননি। অন্য দিকে, বন্‌ধের বিরুদ্ধে তৃণমূল মিছিল করেছে বেশ কিছু জায়গায়। মানবাজারে বড় মিছিল হয়েছে। রঘুনাথপুর শহরে রঘুনাথপুর শহর তৃণমূল ও রঘুনাথপুর ১ ব্লক তৃণমূলের উদ্যোগে দু’টি বন্‌ধ বিরোধী মিছিল হয়।

বস্তুত, বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গিয়েছে, এ দিনের বন্‌ধে প্রভাব পড়েছে মূলত বেসরকারি বাস ও ছোট গাড়ির পরিষেবায়। বাস না চলায় পুরুলিয়া শহরের বাসস্ট্যান্ড ছিল সুনসান। স্ট্যান্ড লাগোয়া বাজার ছিল বন্ধ। রঘুনাথপুর শহরের দোকানপাট খোলা থাকলেও বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া বাজার ফাঁকাই ছিল।

বন্‌ধের সর্বাত্মক প্রভাব পড়েছে বলরামপুর, ঝালদা, জয়পুর, বাঘমুণ্ডিতে। এ দিন বলরামপুর বাজার পুরোপুরি বন্ধ ছিল। রাস্তায় লোকজন কার্যত ছিল না। বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি কর্মীদের জটলা দেখা গিয়েছে। ঝালদা শহরেও দোকানপাট বন্ধ ছিল। বরাবাজারে বন্‌ধের প্রভাব ছিল আংশিক। বনধের ভাল সাড়া মিলেছে পাড়া ব্লক সদর ও আনাড়ায়।

স্বাভাবিক ছিল মানবাজার, পুঞ্চা, বান্দোয়ান। রঘুনাথপুর মহকুমার পাড়া ব্লক বাদ দিয়ে অন্য এলাকায় বন্‌ধের প্রভাব পড়েনি। রেল শহর আদ্রায় জনজীবন ছিল স্বাভাবিক। স্টেশন লাগোয়া বাজার সকাল থেকেই ছিল জমজমাট। রঘুনাথপুর শহরেও একই ছবি। বন্‌ধের সাড়া মেলেনি সাঁতুড়ি, নিতুড়িয়া, কাশীপুর, রঘুনাথপুর ১ ও ২ ব্লকে। বাস চলাচল না করলেও ওই এলাকায় দোকানপাট খোলা ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন