বাংলায় সম্ভাষণ, নমো মুখে নমি মেদিনীপুর

বিপ্লবের মাটির সাহসকে কুর্নিশ

মোদীর এ দিনের সভার পোশাকি নাম ছিল ‘কৃষক কল্যাণ সমাবেশ’। বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ মোদী যখন সভাস্থলে পৌঁছন, মেদিনীপুরের আকাশে তখন দুর্যোগের ঘনঘটা। নাগাড়ে বৃষ্টি হচ্ছে। সেই বৃষ্টির মধ্যেই সভাস্থলে পৌঁছন মোদী।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৮ ০২:২৪
Share:

সাদরে: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত বিজেপির আদিবাসী মোর্চার রাজ্য সভাপতি ক্ষুদিরাম টুডুর। সোমবার মেদিনীপুরে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে নারী শিক্ষার প্রসার, বিপ্লব থেকে মানুষের সেবা— শহরের অলিতেগলিতে ছড়িয়ে ইতিহাস। সেই মেদিনীপুরে পা রেখে ইতিহাসের কথাই বললেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। মেদিনীপুরের মাটি প্রণাম জানাতেও ভুললেন না নরেন্দ্র মোদী। বললেন, “এটা আমার সৌভাগ্য যে আজ আমি মেদিনীপুরের এই মাটিকে প্রণাম করার সুযোগ পেয়েছি।”

Advertisement

সোমবার মেদিনীপুরের কলেজ-কলেজিয়েট স্কুলের মাঠে সভা করেন মোদী। শহরের এই মাঠে আগেও অনেক বড় বড় সভা হয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রামীরা এসেছেন, ‘হেভিওয়েট’ নেতানেত্রীরা এসেছেন। মেদিনীপুরের এই মাঠে সভা করেছেন মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী, সুভাষচন্দ্র বসু। সেই সব স্মৃতি ফিরে আসে প্রধানমন্ত্রীর কথায়। মোদী মনে করিয়ে দেন, “মহাত্মা গাঁধী, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, ঋষি অরবিন্দ, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়—একের পর এক মহান ব্যক্তি এখানে এসেছেন। মেদিনীপুরের এই মাঠ ঐতিহাসিক। মেদিনীপুর ইতিহাস তৈরি করেছে। ইতিহাস তৈরি হতে দেখেছে।”

মোদীর এ দিনের সভার পোশাকি নাম ছিল ‘কৃষক কল্যাণ সমাবেশ’। বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ মোদী যখন সভাস্থলে পৌঁছন, মেদিনীপুরের আকাশে তখন দুর্যোগের ঘনঘটা। নাগাড়ে বৃষ্টি হচ্ছে। সেই বৃষ্টির মধ্যেই সভাস্থলে পৌঁছন মোদী। শুরুতে বাংলায় বলে ওঠেন, “আপনাদের সবাইকে আমার নমস্কার। ভারতের এগিয়ে যাওয়ার পথে কৃষকদের অবদান অমূল্য। আমার চাষিদের এই বিপুল জনসমাগম দেখে আমি খুব আনন্দিত।” প্রধানমন্ত্রীর মুখে বাংলা শুনে করতালিতে ফেটে পড়ে সভাস্থল। ‘মোদী মোদী’ রব ওঠে।

Advertisement

এ দিন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ফিরে ফিরে এসেছে মেদিনীপুরের মনীষীদের কথা, বিদ্যাসাগর, ক্ষুদিরাম, মাতঙ্গিনীর নাম। তিনি বলেন, “স্বাধীনতা আন্দোলন, সামাজিক কাজকর্ম, শিক্ষার প্রসার— মেদিনীপুরের ইতিহাস একটা বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, শহিদ ক্ষুদিরাম বসু, মাতঙ্গিনী হাজরা, রানি শিরোমণি, আমি সকলকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। এঁরা সকলেই দেশের সেবায় নিজেদের জীবন সমর্পণ করেছেন।”

এই নিয়ে দ্বিতীয় কোনও প্রধানমন্ত্রী মেদিনীপুরে এলেন। ১৯৬৯ সালে শহরে সভা করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী। সেই সভা অন্য মাঠে হয়েছিল। মেদিনীপুরের এই মাঠে সভা করেছেন রাজীব গাঁধী, লালকৃষ্ণ আডবাণী, প্রণব মুখোপাধ্যায়রা। বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশের কথায়, “স্বাধীনতা আন্দোলনপর্বে তো বিপ্লবের সূতিকাগার হিসেবে পরিচিত ছিল মেদিনীপুর। প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতায় মেদিনীপুরের ইতিহাস উঠে এসেছে। মেদিনীপুরের মানুষ খুব খুশি।” দলের রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “সোমবার মেদিনীপুরে ঐতিহাসিক সভা হয়েছে। এই
সভা মেদিনীপুরের মানুষ অনেকদিন মনে রাখবেন।”

প্রধানমন্ত্রীকেও বলতে শোনা যায়, “মেদিনীপুরের এই সভা আমার সারা জীবন মনে থাকবে।” ফের ‘মোদী মোদী’ রব ওঠে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন