আষাঢ়ের প্রথম দিনের অপেক্ষা করতে হয়নি, উত্তরবঙ্গে বর্ষা ঢুকে গিয়েছে চার দিন আগেই।
মহাকবি কালিদাস আষাঢ়ের প্রথমদিনে যক্ষের বিরহদূত হয়ে মেঘকে পাঠিয়েছিলেন কৈলাসে। সেই থেকে সাহিত্যে বর্ষার শুরু ধরা হয় আষাঢ়ের পয়লা দিনে। যদিও এ বছর উপগ্রহ চিত্র দেখিয়েছিল ওড়িশা, সিকিম, অসম এবং উত্তরবঙ্গে গত ১২ জুন বর্ষা ঢুকে পড়েছে।
বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টিও শুরু হয়েছে এলাকাগুলিতে। আজ, শনিবার উত্তরবঙ্গের উত্তরের জেলাগুলিতে অর্থাৎ কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং ডুয়ার্সের আকাশ মেঘে ঢাকা থাকবে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টিও হবে বলে জানানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “সিকিমে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। লাগোয়া উত্তরবঙ্গেও বৃষ্টি হবে।”
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী এক সপ্তাহ ধরেই বৃষ্টি হবে উত্তরবঙ্গে। কোচবিহার, ডুয়ার্স-সহ আলিপুরদুয়ারেও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বর্ষা ঢোকার আগেই এ বছর উত্তরবঙ্গে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছিল। কালজানি, তোর্সা সহ লিস-ঘিস নদীর জল বিপদসীমা ছুঁয়ে ফেলে। সেই পরিস্থিতি মাথায় রেখে এ বছর স্বাভাবিকের থেকে বেশি পরিমাণ বৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদেরা।
সেই মতো প্রস্তুতিও চলছে প্রশাসনের। শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তথা এসজেডিএ-এর তরফে নৌকা বিলি করা হয়েছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এবং পুর কর্তৃপক্ষকে।
বন্যা মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই দশটি নৌকা আলিপুরদুয়ার শহরে চলে এসেছে পুরসভার চেয়ারম্যান আশিস দত্ত এ দিন জানিয়েছেন৷ পাশাপাশি এসজেডিএ-র তরফে আলিপুরদুয়ার- ১ ও ২নম্বর ব্লকে দুটি করে মোট চারটি নৌকা পাঠানও হয়েছে৷ আলিপুরদুয়ার পুরসবার চেয়ারম্যান জানান, আগাম সতর্কতা হিসাবে ইতিমধ্যেই পুরসভার তরফে শুকনো খাবার মজুত করাও শুরু হয়েছে৷ পাশাপাশি বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেই ফ্লাড শেল্টারে আশ্রয় নিতে নদী সংলগ্ন এলাকায় বাসিন্দাদের উদ্দেশ্যে প্রচার চালানো হচ্ছে।
প্রস্তুতি শুরু হয়েছে উত্তরের আরেক জেলা কোচবিহারেও। তোর্সার জলে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। তাই বাঁধগুলির পরিস্থিতি যাচাই থেকে শুরু করে, জল ঢুকে গেলে দুর্গতদের সাহায্যের সব ব্যবস্থাই করে রাখতে চায় প্রশাসন। জলপাইগুড়িতেও নদীর ভাঙন ঠেকাতে ও বন্যা দুর্গতদের সাহায্য করতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।