বর্ষা-আমেজ কি ভরসা রাখবে

এ দিন বৃষ্টির জেরে কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় জল জমে গিয়েছিল। কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, গুরুসদয় দত্ত রোড, বাসন্তী হাইওয়ে এবং ক্যানাল সার্কুলার রো়ডে একটি করে গাছ পড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৮ ০২:১৭
Share:

থইথই: এক পশলা বৃষ্টিতেই জলমগ্ন রাস্তা। বুধবার সকালে, সায়েন্স সিটির কাছে। ছবি: শৌভিক দে

এ যেন ভোজবাজি! চলছিল তাপপ্রবাহ, হয়ে গেল বর্ষার মেজাজ।

Advertisement

মঙ্গলবারও গরমে নাকাল হতে হয়েছিল কলকাতাবাসীকে। বুধবার সকাল হতেই বদলে যায় পরিবেশ। আকাশে কালো মেঘ জমে শুরু হয় হুড়মুড়িয়ে ব়ৃষ্টি। ঘন ঘন বাজও প়ড়েছে। এই মেঘ-বৃষ্টির জেরে শহরের তাপমাত্রা তো নামলই, ফিরে এল স্বস্তিও। কিন্তু এ বার প্রকৃতির খামখেয়ালে নাজেহাল বাঙালি কিন্তু এই স্বস্তিতেও নিশ্চিন্ত হচ্ছে না। রাত পোহালেই ফের গরমের জ্বলুনি শুরু হবে না তো, প্রশ্ন অনেকের।

আলিপুর হাওয়া অফিস বলছে, বিহার থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত নিম্নচাপ অক্ষরেখার জন্যই এমন বৃষ্টি। যার হাত ধরে ফের বর্ষা চাঙ্গা হওয়ার আশা করছেন আবহবিজ্ঞানীরা। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘বর্ষা আচমকা সক্রিয় হয় না। তা ধাপে ধাপে নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে হয়। সেই পদ্ধতি শুরু হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’’

Advertisement

এ দিন বৃষ্টির জেরে কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় জল জমে গিয়েছিল। কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, গুরুসদয় দত্ত রোড, বাসন্তী হাইওয়ে এবং ক্যানাল সার্কুলার রো়ডে একটি করে গাছ পড়েছে। তবে কোনও হতাহতের খবর নেই। শহরে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে তপসিয়া এলাকায়, ৪৫ মিলিমিটার। বালিগঞ্জ ও পামারবাজারে যথাক্রমে ৩৮ ও ৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের দাবি, পার্ক সার্কাস কানেক্টর, দমদম আন্ডারপাস, উল্টোডাঙা আন্ডারপাস, ঠনঠনিয়া, কেশব সেন স্ট্রিট-সহ বিভিন্ন জায়গায় জলে জমেছিল। তার ফলে যান চলাচলে সমস্যা হয়েছে। উল্টোডাঙা আন্ডারপাসে জল জমে যাওয়ায় গাড়ির গতি ঢিমে হয়েছিল। ফলে কাঁকুড়গাছি এবং ভিআইপি রোড থেকে আসা গাড়ির গতিও থমকে গিয়েছিল।

আবহবিজ্ঞানীরা জানান, সাগর থেকে জোলো হাওয়া ঢুকছিল না বলে বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে গরম হাওয়া ঢুকে তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছিল। অক্ষরেখার টানে ফের সাগর থেকে জোলো বাতাসের সরবরাহ শুরু হয়েছে। সেই জলীয় বাষ্প গাঙ্গেয় বঙ্গে ঢুকে আরও গরম হয়ে উপরে উঠেছে এবং ঘনীভূত হয়ে মেঘ তৈরি করেছে। রেডার চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিদেরা বলছেন, সকাল থেকেই বজ্রগর্ভ মেঘ জমেছিল কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার আকাশে। হাওয়ার গতিবেগ বেশি না হওয়ায় তা থিতু হয়েছিল এবং নাগাড়ে বৃষ্টি হয়েছে। জলীয় বাষ্পের সরবরাহে ঘাটতি না হওয়ায় মেঘও মিলিয়ে যায়নি। অক্ষরেখা থাকলেও প্রকৃতি যে খামখেয়ালি, তা মেনে নিচ্ছেন আবহাওয়া দফতরের কর্তারাও। এক বিজ্ঞানী বলছেন, ‘‘অক্ষরেখার জেরে মেঘলা আকাশ ও বৃষ্টি হতে পারে বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু তা যে সকাল থেকেই শুরু হবে, সেটা বুঝিনি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement