মকাই পার্টি’ নিয়ে সতর্কবার্তা মোর্চায়

তাঁর কথায়, ‘‘আমরা জবরদস্তি মত চাপিয়ে দেব না। কোনও নেতা-ঠিকাদারের স্বার্থ দেখা হবে না।’’

Advertisement

কিশোর সাহা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৭ ০২:২৭
Share:

বিমল গুরুঙ্গের আমলে মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়েও শক্তিশালী হয়ে উঠেছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ কয়েক জন নেতা ও ঠিকাদার। যাঁরা পাহাড়ে পরিচিত ছিলেন ‘মকাই পার্টি’ নামে। সেই দল যাতে ফের মাথা তুলতে না পারে, সে জন্য বিনয় তামাঙ্গকে সতর্ক করলেন দলের নেতা-কর্মীদের অনেকেই।

Advertisement

মোর্চার অন্দরের খবর, বুধবার সকালে কালিম্পঙের কাছে ডেলোয় ঘরোয়া বৈঠকে একাধিক প্রবীণ নেতা-কর্মী বিনয়কে সাবধান করে দেন। তাঁরা জানান, মূলত ঠিকাদারদের নিয়ে গঠিত এই ‘মকাই পার্টি’র বাহুবলেই যেমন রাজত্ব করেছেন গুরুঙ্গ, তেমনই এদের বাড়তি গুরুত্ব দিতে গিয়েই শেষ অবধি ডুবতেও হয়েছে তাঁকে। তাঁরা মনে করিয়ে দিয়েছেন, এই দলবলের বিরোধিতা করায় বিনয়কেও সকলের সামনে অপমানিত হতে হয়েছে এক সময়ে। মোর্চা সূত্রে খবর, বিনয় জানান, তিনি ঠিকাদার পরিবৃত হয়ে পার্টি করতে চান না। বরং দলের নেতা-কর্মীদের মত মাথা পেতে নিয়েই এগোবেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা জবরদস্তি মত চাপিয়ে দেব না। কোনও নেতা-ঠিকাদারের স্বার্থ দেখা হবে না।’’

কী এই ‘মকাই-পার্টি’? মোর্চা সূত্রের খবর, এঁরা হলেন ৫৬ জনের কেন্দ্রীয় কমিটির বাইরে থাকা কয়েক জন নেতা-ঠিকাদার। এক দিকে বাহুবলী বলে পরিচিত, অন্য দিকে ঠিকাদারির সূত্রে এই দলটির হাতে ছিল অগাধ ক্ষমতা। মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক হলে এঁরা কাছেই থাকতেন। বাইরে আগুন জ্বেলে ভুট্টা বা মকাই পুড়িয়ে খেতেন। সে জন্যই দলটির এই নাম। বৈঠকের মাঝে গুরুঙ্গ বেড়িয়ে এসে এঁদের পরামর্শ নিয়ে যেতেন। মোর্চার কেউ কেউ এখন বলছেন, পরামর্শ নিতেন বলা ভুল, এঁদের কথাতেই চলতেন গুরুঙ্গ।

Advertisement

এই দলের মাথা প্রবীণ সুব্বা, দেবেন শর্মারা এখন পুলিশের নজরে রয়েছেন। গুরুঙ্গ-ঘনিষ্ঠ এই নেতারা এখন চাইছেন বিনয়ের দলে ভিড়তে। তৃণমূলের পাহাড় কমিটির এক নেতাকে দেবেন অনুরোধ করেন বিনয়ের সঙ্গে মধ্যস্থতা করার জন্য। যদিও তৃণমূলের পাহাড় কমিটির কয়েক জন নেতা একান্তে জানিয়েছেন, দেবেনরা ফের পাহাড়ে ক্ষমতার অলিন্দে ঢুকলে তাঁরা তা মেনে নিতে পারবেন না। জন আন্দোলন পার্টির সভাপতি হরকাবাহাদুর ছেত্রী বলেন, ‘‘মকাই-পার্টি শুধু নয়, সুযোগসন্ধানী ঠিকাদারদের মাথায় তুলতে গিয়ে অতীতে পাহাড়-সমতলের অনেক নেতাই পথে বসেছেন। সেটা যাঁরা মাথায় রেখে এগোবেন তাঁরাই পাহাড়ে টিঁকে থাকবেন।’’

কিন্তু বিনয় কি পারবেন এই বাহুবলী ঠিকাদারদের বাদ দিয়ে পাহাড় শাসন করতে? এই প্রশ্ন পাহাড়বাসীদের মধ্যেই উঠেছে। কেউ কেউ বলছেন, মুখে বিনয় যা-ই বলুন, শেষ অবধি দেবেনদের ঠাঁই দিতে বাধ্য হবেন তিনি। যদিও বিনয়শিবির বলছে, বিনয়-অনীত থাপারা এদের সঙ্গে দূরত্ব রেখেই চলছেন। কিন্তু না আঁচালে বিশ্বাস নেই, বলছেন পাহাড়বাসী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন