ফাইল চিত্র।
বৃষ্টি উপেক্ষা করেই দার্জিলিং সদরের চকবাজার ও লাগোয়া এলাকায় অশোক তামাঙ্গের (৩৬) শোক মিছিলে ঢল নামল মোর্চা সমর্থকদের। যার জেরে বুধবার দিনভর থমথমে থাকল দার্জিলিং।
রাতে খবর মেলে শিলিগুড়ির কাছে সুকনায় একটি সরকার অফিসে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার পিছনে মোর্চাই রয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে সন্দেহ।
তবে মোর্চার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা কোনও সংঘাতের রাস্তায় যাবে না। কিন্তু এ দিন তামাঙ্গের অন্ত্যেষ্টির পরে যুব মোর্চার কয়েকজন সমর্থককে খুকুরি হাতে রীতিমতো উত্তেজিত অবস্থায় দেখা যায়। তাতে অনেক পাহাড়বাসীর উদ্বেগ বেড়েছে।
চার দিন আগে শুক্রবার পুলিশ ও মোর্চা সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় দার্জিলিং পুরসভার কর্মী অশোক গুলিবিদ্ধ হন। মোর্চার দাবি, পুলিশের গুলিই লেগেছিল তাঁর গায়ে। চিকিৎসার জন্য সিকিমের গ্যাংটকে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। মঙ্গলবার সকালে সেখানেই মারা যান তিনি। সেই রাতেই তাঁর দেহ দার্জিলিঙে আসে। বুধবার সকালে তাঁর দেহ নিয়ে শোকমিছিলের আয়োজন করে মোর্চা। রাস্তায় উপচে পড়ে ভিড়। তারপরেই চোখে পড়ে যুব মোর্চার উত্তেজিত কর্মীদের খুকুরি হাতে হুঙ্কার।
মোর্চা নেতারা মুখে কিন্তু বলে যাচ্ছেন, তাঁরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনই চান। বিনয় তামাঙ্গ জানান, তাঁরা আপাতত নেপালি কবি ভানুভক্তের জন্মজয়ন্তী পালনের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। আজ, বৃহস্পতিবার কবি ভানুভক্তের জন্মদিন। দিনটি ‘জাতি একতা দিবস’ হিসেবে পালন করার ডাক দিয়েছে মোর্চা। সেই মতো মোর্চার তরফে পাহাড় এবং তরাই ও ডুয়ার্সে অনুষ্ঠান হবে। সমতলেও একাধিক সংগঠন নেপালি কবির জন্মদিন পালন করবে। রাজ্য সরকারও ভানুভক্তের জন্মদিবস পালন করবে।
মোর্চা চাইছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হস্তক্ষেপ করুক। মোর্চার দাবি, ৮ জুন থেকে এ পর্যন্ত পাহাড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মোট ৮ জন মারা গিয়েছেন। কেন গুলি চালানো হল, তা তদন্তের দাবি তুলেছে তারা। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিক্রিয়া জানার পরে এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদনের কথাও ভাবছেন মোর্চা নেতারা। পুলিশের দাবি, অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।
এই অবস্থায় ডুয়ার্সে রিলে অনশন শুরু করে সমতলেও চাপ বাড়াতে নেমে পড়ল মোর্চা। বুধবার কালচিনিতে মঙ্গলাবাড়ি এলাকায় জয়গাঁ ১ গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের সমানে অনশনে বসেন মহিলা মোর্চার ১২ জন প্রতিনিধি।