প্রতিবাদ: চকবাজারে নিজেদের পিঠে টিউবলাইট ভেঙে বিক্ষোভ দেখালেন মোর্চা সমর্থকেরা। নিজস্ব চিত্র
দুপুরে পাহাড়ে জিটিএ চুক্তি পুড়িয়ে, নিজেদের শরীরে টিউবলাইট ভেঙে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে রক্ত ঝরালেন মোর্চা সমর্থকেরা। আর বিকেলে রাজ্য সরকার জানিয়ে দিল, পাহাড়ের ক্ষেত্রে তাদের অবস্থান বদলের কোনও সম্ভাবনা নেই। এত দিন যে নীতি নিয়ে এগোচ্ছিল তারা, এখনও সেই পথে চলবে।
মোর্চা নেতৃত্ব গত কয়েক দিন ধরে জানাচ্ছিলেন, তাঁরা আন্দোলন আরও তীব্র করবেন এ বার। তখনই টিউবলাইট মিছিল করার কথা বলা হয়। প্রয়োজনে আমরণ অনশন বা আত্মাহুতি দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। মঙ্গলবার তারই এক ঝলক দেখা গেল পাহাড়ে। খালি শরীরে দাঁড়ালেন কয়েক জন মোর্চা কর্মী। আর অন্য সমর্থকেরা তাঁদের পিঠে টিউবলাইট ভাঙলেন। এই ঘটনায় অনেকের শরীর থেকেই রক্ত ঝরল।
একই সঙ্গে এ দিন জিটিএ চুক্তি পুড়িয়ে মোর্চার দাবি: এই চুক্তির সঙ্গে আর তাঁদের কোনও সংশ্রব নেই। এর পরেও যদি জিটিএ ভোট হয়? মোর্চার সহকারী সাধারণ সম্পাদক বিনয় তামাঙ্গ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘সেই জিটিএ ভোটে কেউ অংশ নিলে সেটা তাঁর পক্ষে ঝুঁকির হয়ে যাবে।’’
হঠাৎ কেন সুর চড়াচ্ছে মোর্চা? পাহাড়ের একাংশ বলছে, আন্দোলনের নেতৃত্ব যাতে তাদের হাত থেকে চলে না যায়, সে জন্যই এই ধরনের বিক্ষোভ। পাহাড়ে অন্য দলগুলির বক্তব্য, জিটিএ-র মেয়াদ ফুরোতে আর মাত্র এক মাস। তার আগে আর্থিক তদন্তের মুখে পড়ে শুধু চুক্তি বাতিল করে ইস্তফা দিলেই হবে না। জিএনএলএফের প্রশ্ন: মোর্চার বিধায়ক, কাউন্সিলররা কেন এখনও ইস্তফা দেননি?
এই চাপের মধ্যেই ২৯ জুন পাহাড়ে দ্বিতীয় সর্বদল বৈঠক। তার আগে আন্দোলনের তীব্রতা বাড়িয়ে রাশ নিজেদের হাতে রাখতে মরিয়া গুরুঙ্গের দল। তাদের বক্তব্য, ২০০৭ সাল থেকে মোর্চা একক আন্দোলন করছে। এখন হঠাৎ অন্যরা নেতৃত্বে উঠে আসবে কী করে? চাপ বাড়ছে দলের নিচুতলা থেকেও। মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিনীতা রোকা বলেন, ‘‘সর্বদল বৈঠকে যে যা মতামত দিক, আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’’ যা জানার পরে পাহাড়ের অনেক দলের নেতাই একান্তে জানান, মোর্চা যদি একা আন্দোলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েই থাকে, তবে আর সর্বদল মঞ্চ গঠনের নাটক করার প্রয়োজন কী, সেটাই সর্বদলে জানতে চাওয়া হবে।
এ দিনই নবান্নে পাহাড় পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে জাভেদ শামিম একটি রিপোর্ট পেশ করেন। পরে জানানো হয়, পাহাড় নিয়ে এখনই নীতি বদলাচ্ছে না সরকার।