অনুদানের বাধা খালি শিক্ষকপদ

দেশের ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেককে ১০০ কোটি টাকা দেবে কেন্দ্র। সেই তালিকায় এ রাজ্য থেকে আছে শুধু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।

Advertisement

মধুমিতা দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৮ ০৪:৪৩
Share:

রাজ্যের অন্তত তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক অনুদান পাওয়ার ক্ষেত্রেও বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে শূন্য শিক্ষকপদ।

উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকের অনেক পদ খালি থাকায় পঠনপাঠনের ক্ষতি তো হচ্ছেই। দেখা যাচ্ছে, রাষ্ট্রীয় উচ্চতর শিক্ষা অভিযান বা রুসা-র অঙ্গ হিসেবে রাজ্যের অন্তত তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক অনুদান পাওয়ার ক্ষেত্রেও বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে শূন্য শিক্ষকপদ।

Advertisement

দেশের ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেককে ১০০ কোটি টাকা দেবে কেন্দ্র। সেই তালিকায় এ রাজ্য থেকে আছে শুধু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক সম্প্রতি জানিয়েছে, এই আর্থিক সাহায্য পেতে হলে ওই ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়কে কমপক্ষে ৭০% শিক্ষকপদ অবশ্যই পূরণ করতে হবে। কিন্তু যাদবপুর এই শর্ত পূরণ করতে পারছে না। কেননা সেখানে অনেক শিক্ষকপদ শূন্য। অন্য দিকে পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়কে দেওয়া হবে ২০ কোটি টাকা। কিন্তু কম পক্ষে ৬৭% শিক্ষকপদ অবশ্যই ভর্তি থাকতে হবে। কিন্তু প্রেসিডেন্সিতে তা নেই। মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বা ম্যাকাউট-কে রুসা প্রকল্পে ২০ কোটি টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু তারাও শর্তমাফিক ৬৭% পদে শিক্ষক দেখাতে পারছে না।

শিক্ষা সূত্রের খবর, ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে যাদবপুরে যে-সব শূন্য শিক্ষকপদে নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছিল, তা সরকারি নির্দেশে বন্ধ রাখা হয়। প্রায় চার বছর এই নিয়ে টালবাহানা চলে। তার পরে উপাচার্য হয়ে আসেন অভিজিৎ চক্রবর্তী। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার কিছু দিন পরেই শুরু হয়ে হোক কলরব আন্দোলন। সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য প্রশাসনিক কাজের মতোই বিঘ্নিত হয় শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া। সুরঞ্জন দাস উপাচার্যের দায়িত্ব নেওয়ার পরে শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ শুরু হয়। কিন্তু ২০১৬ সালের জুলাইয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়ার কিছু নিয়ম পরিবর্তন করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। রাজ্য সরকার তখন নিয়োগের বিষয়ে ধীরে চলার নির্দেশ দেয়। ২০১৭ সালের শেষ দিকে রাজ্য আবার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে শিক্ষক নিয়োগ করার নির্দেশ দেয়। সেই অনুসারে চলতি বছরের গোড়ার দিকে শূন্য পদ পূরণের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের খবর, ৬৮% পদে এখন শিক্ষক রয়েছেন। বাকি পদ পূরণের জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। খুব দ্রুতই খালি পদ পূরণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Advertisement

প্রেসিডেন্সি ছেড়ে বারে বারেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চলে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পড়ুয়ারাও বারে বারেই শিক্ষকের অভাবে পঠনপাঠনে বিঘ্ন ঘটার কথা বলেছেন। উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া শুক্রবার বলেন, ‘‘এখন আমাদের ৫৪% পদে শিক্ষক আছেন। আমাদের নতুন বিশ্ববিদ্যালয়।
যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ৬৭% পদ পূরণের চেষ্টা করা হচ্ছে।’’ ম্যাকাউটের উপাচার্য সৈকত মৈত্রের বক্তব্য, প্রযুক্তি বিষয়ে পড়ানোর শিক্ষক পাওয়াটাই বড় সমস্যা। এর থেকে শিল্প ক্ষেত্রে চাকরি করা বেশি লাভজনক বলে মনে করেন অনেকেই। তবে তাঁরা নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন