সিবিআইয়ের খবর, ঝাড়গ্রামে ৬০০ একর জমিতে এমপিএসের রিসর্ট ছিল।
অর্থ লগ্নি সংস্থা এমপিএসের বিভিন্ন সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ, নিলাম এবং তা থেকে প্রাপ্ত টাকা আমানতকারীদের ফেরাতে প্রাক্তন বিচারপতি শৈলেন্দ্রপ্রসাদ তালুকদারকে মাথায় রেখে একটি কমিটি গড়ে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই কমিটি সম্প্রতি জানতে পেরেছে, ঝাড়গ্রামে এমপিএসের যাবতীয় অস্থাবর সম্পত্তিই নাকি চুরি হয়ে গিয়েছে! পুলিশকে সম্পত্তি রক্ষার ভার দেওয়ার পরেও যে-ভাবে সেগুলো ‘উধাও’ হয়ে গিয়েছে, তা দেখে বিস্মিত ওই প্রাক্তন বিচারপতি। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়িয়েছে যে, বিচারপতি তাঁর দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চেয়েছেন। রাজ্য পুলিশ ও প্রশাসনের অসহযোগিতা এবং এমপিএসের সম্পত্তি চুরির ঘটনার বিষয়টি তিনি জানিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্ট, সেবি এবং সিবিআই-কে।
সিবিআইয়ের খবর, ঝাড়গ্রামে ৬০০ একর জমিতে এমপিএসের রিসর্ট ছিল। সেখানকার গুদামে কয়েকশো এসি মেশিন, ফ্রিজ, খাট, দরজা, জানলা এবং অন্যান্য সামগ্রী রাখা ছিল। তার ‘ইনভেন্ট্রি’-ও (দাম-সহ মজুত মালপত্রের মূল্য নির্ধারণ) তৈরি করা ছিল। সম্প্রতি ওই রিসর্টে গিয়ে দেখা যায়, কোনও অস্থাবর সম্পত্তিই আর নেই। পুরো রিসর্ট ভগ্নস্তূপে পরিণত হয়েছে। দরজা, জানলার পরে এখন আবার গুদামের দেওয়াল ভেঙে ইট চুরি শুরু হয়েছে।
প্রাক্তন বিচারপতি শৈলেন্দ্রপ্রসাদ হাইকোর্টে পেশ করা চার পাতার রিপোর্টে জানিয়েছেন, লেক টাউনের সদর দফতর ছাড়াও এমপিএসের তিনটি সম্পত্তি ইতিমধ্যেই বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। আরও প্রায় ৫০ লক্ষ টাকাও উদ্ধার হয়েছে তাদের বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে। কিন্তু ক্রেতাদের হাতে সেই সম্পত্তি বা অর্থ তুলে দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ, সেখানকার অস্থাবর সম্পত্তি সরিয়ে রাখতে হচ্ছে। সেই প্রক্রিয়ার অঙ্গ হিসেবেই ঝাড়গ্রামের ৬০০ একরের জমির রিসর্টের যাবতীয় অস্থাবর সম্পত্তি গুদামে রাখা ছিল। পুলিশকে সেখানে নজরদারি চালাতে বলেছিল হাইকোর্ট নিযুক্ত কমিটি। কিন্তু সবই বেপাত্তা হয়ে গিয়েছে।
সিবিআইয়ের দাবি, স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, ট্রাকে ফ্রিজ, এসি, আসবাব সরিয়ে ফেলা হয়েছে। পুলিশ বাধা দেয়নি। কারা তা করেছে, এমপিএসের লোকজনই কি জড়িত, পুলিশের কী ভূমিকা ছিল— সবই দেখছে সিবিআই। পুলিশ জানিয়েছে, ৬০০ একর রিসর্টের জমি, বাড়ি, সম্পত্তি পাহারা দেওয়ার মতো পরিকাঠামো তাদের নেই। ফলে দিনরাতের রক্ষী রাখা সম্ভব হয়নি। রিসর্টের সম্পত্তি চুরি নিয়ে তদন্তেও কোনও অগ্রগতি নেই বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর।