সারদা কমিশন নিয়েই প্রশ্ন এমপিএসের

বাজার থেকে বেআইনি ভাবে টাকার তোলার অভিযোগ তাঁদের বিরুদ্ধে। অথচ সারদা কমিশনে হাজিরা দিতে এসে সেই কমিশনের বৈধতাকেই চ্যালেঞ্জ করে বসলেন এমপিএস গ্রিনারি ডেভেলপারস লিমিটেড কর্তৃপক্ষ। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রমথনাথ মান্না-সহ সব ডিরেক্টরকে সোমবার ডেকে পাঠিয়েছিলেন কমিশনের চেয়ারম্যান শ্যামলকুমার সেন। সেখানেই ওই সংস্থার আইনজীবী কমিশনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা ও গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:২৫
Share:

বাজার থেকে বেআইনি ভাবে টাকার তোলার অভিযোগ তাঁদের বিরুদ্ধে। অথচ সারদা কমিশনে হাজিরা দিতে এসে সেই কমিশনের বৈধতাকেই চ্যালেঞ্জ করে বসলেন এমপিএস গ্রিনারি ডেভেলপারস লিমিটেড কর্তৃপক্ষ। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রমথনাথ মান্না-সহ সব ডিরেক্টরকে সোমবার ডেকে পাঠিয়েছিলেন কমিশনের চেয়ারম্যান শ্যামলকুমার সেন। সেখানেই ওই সংস্থার আইনজীবী কমিশনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

Advertisement

কমিশন সূত্রের খবর, এমপিএসের আইনজীবী এ দিন বলেছেন, যে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রাজ্য সরকার সারদা কমিশন গঠন করেছে তা ঠিক নয়। কমিশনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁরা হাইকোর্টেও আবেদন জানিয়েছেন বলে ওই আইনজীবী জানান। বক্তব্য শুনে রীতিমতো স্তম্ভিত কমিশনের চেয়ারম্যান শ্যামলবাবু। তিনি বলেন, “ওঁরা বলেছেন, হাইকোর্টে আর্জি জানিয়েছেন। তাই এ দিনের মতো বিষয়টি স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। আগামী ৮ সেপ্টেম্বর বিষয়টি ফের কমিশনে তোলা হবে।” কমিশনের বিরুদ্ধে এমপিএসের অভিযোগ সম্পর্কে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্যামলবাবু বলেন, “এটা সরকার এবং হাইকোর্টের ব্যাপার। আমাদের কিছু বলার নেই।”

প্রায় ১৫ মাস আগে সারদা কমিশন গঠন করেছে রাজ্য। সারদায় ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা ফেরানোর পাশাপাশি অন্যান্য অর্থলগ্নি সংস্থার কর্তা-ব্যক্তিদের ডেকেও পাঠাচ্ছে কমিশন। সূত্রের খবর, সেবির নির্দেশ অগ্রাহ্য করে জুলাই মাসেও বাজার থেকে টাকা তুলেছিল এমপিএস। সেই কথা শুনে মাসখানেক আগে কমিশনে শুনানির সময়ে এমপিএসের কর্ণধার প্রমথনাথ মান্নার উদ্দেশে শ্যামলবাবু বলেছিলেন, “এত সবের পরেও আপনি কী করে বাইরে থাকেন? আপনার তো বাইরে থাকার কথা নয়!” সে দিনই তিনি ওই সংস্থার অন্য সব ডিরেক্টরকে কমিশনে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাঁদের কমিশনে হাজির করানোর জন্য সংশ্লিষ্ট থানার ওসি-দের নির্দেশও দেয় কমিশন। তারই প্রেক্ষিতে এ দিন ১০ জন ডিরেক্টরকে নিয়ে কমিশনে হাজির হন ৬টি থানার অফিসারেরা।

Advertisement

আমানতকারীদের আইনজীবী অরিন্দম দাস জানান, কমিশন বসার পরেই এমপিএসের আইনজীবী বলতে থাকেন, তাঁদের ডিরেক্টরদের এ ভাবে পুলিশ দিয়ে হাজির করানোর কোনও এক্তিয়ার কমিশনের নেই। তখনই তিনি হাইকোর্টে যাওয়ার কথা জানান। শ্যামলবাবু শুনানি স্থগিত করে দেন।

শীর্ষ কর্তারা আসতে পারেন জেনে এমপিএসের শ’তিনেক আমানতকারী এ দিন কমিশনের অফিসের নীচে অপেক্ষায় ছিলেন। কমিশন ছেড়ে বেরোনোর সময়ে ডিরেক্টরদের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ার চেষ্টা করেন কেউ কেউ। বেশ কিছুক্ষণ ধরে চলে বিশৃঙ্খলা। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়। একাধিক আমানতকারী বলেন, “সারদার আমানতকারীদের মতো আমরাও সর্বস্বান্ত হয়েছি। পুজোর আগে অন্তত যাতে কিছুটা ফেরত পাই, সে ব্যাপারে প্রশাসন ব্যবস্থা নিক।”

একই অবস্থা চলছে অসমে। হাজার-হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে একের পর এক অর্থলগ্নি সংস্থার দফতর বন্ধ করছে পুলিশ। তারই সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন গ্রাহকেরা। ১৩ সেপ্টেম্বর রাজ্যের তিনটি কেন্দ্রে উপনির্বাচন। ফলে চিন্তায় শাসক দল কংগ্রেস। কিছুটা ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা যায় কি না, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ভুবনেশ্বর কলিতা। সম্প্রতি অসমের বিভিন্ন জেলায় রোজ ভ্যালি-র অফিস বন্ধ করেছে পুলিশ। একই ভাবে অমৃৎ প্রোজেক্ট, ড্যাফোডিল, পিএসিএল-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সোমবার গুয়াহাটি, নগাঁও-সহ বিভিন্ন জেলায় অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির দফতরে হামলাও চালান গ্রাহকেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন