বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হলো মুকুল রায়কে। রাহুলবাবুর জন্মদিন ছিল শুক্রবার। এই উপলক্ষে আগামী বুধবার কলকাতা বন্দরের অতিথিশালায় একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন রাহুলবাবুর অনুগামী এবং শুভানুধ্যায়ীরা। সেখানে যোগ দেওয়ার জন্য মুকুলবাবুকে আমন্ত্রণ জানাতে এ দিনই কলকাতার একটি বাড়িতে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন রাজ্য বিজেপির এক নেতা।
বিজেপি সূত্রের খবর, রাহুলবাবু মুকুলবাবুকে দলে নেওয়ার বিরোধী ছিলেন। লোকসভা নির্বাচনের পর প্রায় এক বছর যখন মুকুলবাবুর সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব এবং তাঁর বিজেপিতে আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়, তখন রাহুলবাবুই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে ওই নেতার বিরুদ্ধে জোরালো সওয়াল করেন। তাঁর যুক্তি ছিল, সারদা কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত এক জনকে নিয়ে জনমানসে দলের দুর্নীতি বিরোধী ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা নির্বুদ্ধিতা হবে। এর পর মুকুলবাবু নারদ কেলেঙ্কারিতেও অভিযুক্ত হন। কোনও অভিযোগ থেকেই আইনের চোখে তাঁর এখনও মুক্তি ঘটেনি।
এই পরিস্থিতিতে রাহুলবাবুর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মুকুলবাবুকে আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে দলের অন্দরেই জল্পনা শুরু হয়েছে। রাজ্য বিজেপি-র একাংশের প্রশ্ন, তা হলে কি দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ মুকুলবাবুকে দলে নিচ্ছেন বুঝেই রাহুলবাবু নিজের পুরনো অবস্থান থেকে সরে যাওয়ার বার্তা দিলেন? রাহুলবাবুর জবাব, ‘‘আমার জন্মদিনের অনুষ্ঠান আমি করি না। আমার শুভানুধ্যায়ীরা করেন। সেখানে আমিও আমন্ত্রিতই থাকি। তাই তাঁরা কাকে এবং কেন আমন্ত্রণ করেছেন, আমি বলতে পারব না।’’
আর ওই অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক উমাশঙ্কর ঘোষ দস্তিদারের ব্যাখ্যা, ‘‘রাহুলবাবুর জন্মদিন পালন একটা সামাজিক অনুষ্ঠান। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের আরও তিন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ রায়, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, কংগ্রেসেরই সোমেন মিত্র— এমন অনেক ভিন্ন মতের রাজনীতির মানুষকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তা হলে মুকুল রায়কে আমন্ত্রণ নিয়ে হইচই কীসের?’’
কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ হল, মুখ্যমন্ত্রী-সহ তৃণমূল, কংগ্রেস, এমনকী বাম রাজনীতির নেতাদের ২০১৬ সালেও ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু মুকুলবাবু সে বার আমন্ত্রণ পাননি। এ বার আমন্ত্রিতের তালিকায় তাঁর নাম নতুন সংযোজন!