হাতে রশি মমতাজ সুচরিতার, চলল রথ

খানিক দূর পর্যন্ত হেঁইও হেঁইও করে রথের রশি টেনে কপালের ঘাম মুছছিলেন পারভিনা বিবি। বললেন, ‘‘তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে হবে, ইদে মেহমানরা আসবেন। ঘরের অনেক কাজ বাকি।

Advertisement

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

আমডাঙা শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৬ ০৪:১৮
Share:

খানিক দূর পর্যন্ত হেঁইও হেঁইও করে রথের রশি টেনে কপালের ঘাম মুছছিলেন পারভিনা বিবি। বললেন, ‘‘তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে হবে, ইদে মেহমানরা আসবেন। ঘরের অনেক কাজ বাকি।’’ রথের রশি টানতে টানতেই সুচরিতা সামন্তকে গলা তুলে বলতে শোনা গেল, ‘‘রুমা, তুই বাড়ি যা। কাল আসছি তোর ওখানে।’’ রুমা খাতুন সুচরিতার বন্ধু। বৃহস্পতিবার সেখানেই ইদের নিমন্ত্রণ সুচরিতার।

Advertisement

আমডাঙার সন্তোষপুর মোড় থেকে বুধবার যে রথ বেরোল, তার জাঁক তেমন না হলেও সম্প্রীতির বার্তায় উজ্জ্বল এখানকার রথযাত্রা। ৩৪ নম্বর জাতীয় জাতীয় সড়ক ধরে দত্তপুকুরের তালপুকুর হয়ে সন্তোষপুরে ফিরেছে রথ। হিন্দু-মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষই রথের রশি টেনেছেন হুড়োহুড়ো করে। দুই সম্প্রদায়ের মহিলারা তৈরি করেছেন ‘আমডাঙা সন্তোষপুর মোড় মহিলা বৃন্দ’ কমিটি। প্রায় আড়াইশো জন সদস্য। বছর দু’য়েক ধরে রথযাত্রা পালন করে আসছেন তাঁরা। আগে নমো নমো করে হলেও মহিলারা হাল ধরার পরে রথযাত্রার উদ্দীপনা আরও বেড়েছে বলে জানালেন সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই এলাকার মানুষজন।

এ বার রথযাত্রা-ইদ গায়ে গায়ে পড়ায় গোটা এলাকা ঝলমল করছে। জাতীয় সড়কের পাশে মেলা বসেছে। মঞ্চ বেঁধে অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে। পনেরো দিন ধরে হিন্দু-মুসলিম ঘরের মেয়ে-বৌরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে চাঁদা তুলেছেন বলে জানালেন মহিলা বৃন্দের সভাপতি স্বপ্না শূর। এক সদস্য মমতাজ মেহেদি বলেন, ‘‘এটা এখন দুই সম্প্রদায়েরই উৎসব। ছেলেকে কি বলতে পারি, রথের মেলায় যেও না?’’

Advertisement

উৎসবে সামিল স্থানীয় বিধায়ক রফিকুর রহমান, পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ নবীন মাইতিরাও। তাঁরা জানালেন, উৎসবপ্রিয় মানুষের মনে ধর্মের ভেদাভেদ নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন