ভোগান্তি বাস ধর্মঘটে, হুঁশ নেই প্রশাসনে

জাতীয় সড়কের উপরে নবগ্রাম থানার শিবপুর ও মেহেদিপুরের মাঝে এবং সুতি থানার চাঁদের মোড়ে দু’জায়গায় টোল আদায় করে থাকে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। বেসরকারি বাস মালিক সংগঠন ওই টোল আদায়ের প্রতিবাদে সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য যে বাস ধর্মঘটের ডাক দেয়, তাতে ভোগান্তির মুখে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৫ ০১:১১
Share:

বাস ধর্মঘটে দিনভর যাতায়াত চলল এভাবেই। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।

জাতীয় সড়কের উপরে নবগ্রাম থানার শিবপুর ও মেহেদিপুরের মাঝে এবং সুতি থানার চাঁদের মোড়ে দু’জায়গায় টোল আদায় করে থাকে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। বেসরকারি বাস মালিক সংগঠন ওই টোল আদায়ের প্রতিবাদে সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য যে বাস ধর্মঘটের ডাক দেয়, তাতে ভোগান্তির মুখে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।

Advertisement

যদিও ওই বাস ধর্মঘটের কথা জানিয়ে কয়েক দিন ধরে বহরমপুর-রঘুনাথগঞ্জ ফুলতলা বাসস্ট্যান্ড, মালদহ-বালুরঘাট-শিলিগুড়ি বাস টার্মিনাস থেকেও মাইকে ঘোষণা করার পাশাপাশি লিফলেট বিলি করা হয়। তাতেও রক্ষা হয়নি। এ দিকে স্কুলে গরমের ছুটি চলায় এবং রাজ্য সরকার গরমের ছুটি আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর ফলে ওই দুর্ভোগ চরম আকার নেয়নি। কিন্তু স্কুল খোলার পরে কী অবস্থা হবে, তা ভেবে মালিক সংগঠনও চিন্তিত! মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের তাতে অবশ্য কোনও হেলদোল নেই। মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক তথা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের জেলা আধিকারিক অরবিন্দ মিনা বলেন, ‘‘টোল আদায়ের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের করণীয় কিছু নেই। বাস ধর্মঘট হলে হবে! জাতীয় সড়কে টোল আদায়ের বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের এক্তিয়ারে পড়ে। রাজ্য সরকারের কোনও ভূমিকা নেই।’’

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, বাস ধর্মঘটের ফলে বিপাকে পড়বেন জেলার মানুষ। সে ক্ষেত্রে টোল আদায়ের বিষয়টি ‘কেন্দ্রীয় সরকারের এক্তিয়ারে’ বলে জেলা প্রশাসন নিজেদের দায় এড়াতে পারে কি? অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস ধর্মঘট জেলার অর্থনীতির উপরেও ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন জেলা চেম্বার অফ কমার্সের কর্তা স্বপন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘সাধারণ যাত্রী থেকে নিত্যযাত্রীদের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যবসায়ী নিয়মিত যাতাযাত করে থাকেন। কোনও দাবির ভিত্তিতে বাস বন্ধ থাকলে জেলা প্রশাসনের উচিত আলোচনার মধ্যে দিয়ে মীমাংসা সূত্র বের করা।’’

Advertisement

যদিও বাস ধর্মঘটের ১২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও রফাসূত্র বের করার ব্যাপারে এখনও উদ্যোগী হয়নি জেলা প্রশাসন। বাস মালিক সংগঠনের পক্ষে তপন অধিকারী বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনিক কোনও কর্তা আমাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য বা কী কারণে ধর্মঘট তা জানার প্রয়োজন মনে করেননি।’’ এ দিকে, বেসরকারি বাস বন্ধ থাকায় বহরমপুর থেকে খড়গ্রাম ভায়া পলসণ্ডা-নবগ্রাম-পাঁচগ্রাম-নগর, বহরমপুর থেকে সাগরদিঘি, বহরমপুর থেকে রঘুনাথগঞ্জ, বহরমপুর থেকে মালদহ-বালুরঘাট-শিলিগুড়ি, বহরমপুর থেকে রামপুরহাট ভায়া মোড়গ্রাম যাতায়াতে এখন সরকারি বাসের উপরেই নির্ভরশীল থাকতে হবে সাধারণ যাত্রীদের। কিন্তু সরকারি বাসও তো হাতেগোনা।! মূলত বেসরকারি বাসে করেই জেলার ওই সব প্রান্তের স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে ছাত্রছাত্রীরা যাতায়াত করে থাকেন। জেলা প্রশাসন অবিলম্বে পদক্ষেপ না করলে স্কুলগুলি বিপাকে পড়বে। ভুগবেন নিত্যযাত্রীরাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন