সামাজিক সুরক্ষা যোজনায় পিছিয়ে মুর্শিদাবাদ

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদে এখন পর্যন্ত ৬.৯৭ লক্ষ শ্রমিককে এর আওতায় আনা গিয়েছে। অথচ পাশের জেলা নদিয়ায় ৯.০২ লক্ষ এবং মালদহে ৭.২৫ লক্ষ শ্রমিক এসেছেন সামাজিক সুরক্ষা যোজনার আওতায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৮ ০৫:০০
Share:

ফাইল চিত্র

সামাজিক সুরক্ষা যোজনায় অনেকটাই পিছিয়ে শ্রম প্রতিমন্ত্রীর জেলা মুর্শিদাবাদ। জেলায় প্রায় ১৫ লক্ষেরও বেশি নির্মাণ ও বিড়ি শ্রমিক থাকা সত্ত্বেও পর্যন্ত তাদের মাত্র ৪৬ শতাংশকে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা গিয়েছে। বিরোধী শ্রমিক সংগঠনগুলির মতে, ওই ব্যর্থতার পিছনে রয়েছে সরকারি স্তরে প্রচারের ঘাটতি এবং শ্রমিকদের হয়রানি।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদে এখন পর্যন্ত ৬.৯৭ লক্ষ শ্রমিককে এর আওতায় আনা গিয়েছে। অথচ পাশের জেলা নদিয়ায় ৯.০২ লক্ষ এবং মালদহে ৭.২৫ লক্ষ শ্রমিক এসেছেন সামাজিক সুরক্ষা যোজনার আওতায়। বিড়ি শ্রমিকের বাইরেও রাজমিস্ত্রি, কৃষি শ্রমিকের সংখ্যাও এই জেলায় যথেষ্ট সংখ্যক রয়েছে। গত বছর ঘটা করে প্রতিটি মহকুমায় শ্রমিক মেলা করে অনলাইন রেজিষ্ট্রেশনের ব্যবস্থাও করা হয়। তার পরেও অবস্থার বিশেয বদল ঘটেনি। জেলা জুড়ে পাঁচ মহকুমায় শ্রমিক মেলা করার কারণ শ্রমিকদের কাছে তাদের প্রাপ্য অধিকার ও সুবিধার কথা জানান। কিন্তু ব্লক স্তরেই তা সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। তাকে পঞ্চায়েত ও গ্রাম স্তরে প্রচারের আলোয় নিয়ে আসা যায় নি।

এই প্রকল্পে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক দেবেন মাসে ২৫ টাকা করে আর রাজ্য সরকার দেবে ৩০ টাকা। বিনিময়ে স্কুল কলেজে শিক্ষা, চিকিৎসার সুবিধা ছাড়াও স্বাভাবিক মৃত্যুর জন্য ৫০ হাজার টাকা ও দুর্ঘটনায় মৃত্যুতে দুই লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ পাবেন তারা। রাজ্য শ্রম কমিশনার জাহেদ আখতার জানান, ২০১৯ সালের মার্চের মধ্যে মুর্শিদাবাদে ৭.২১ শ্রমিককে এর আওতায় আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু এই সংখ্যাটা অন্যান্য জেলার তুলনায় যে অনেকটাই কম মানছেন তাও।

Advertisement

সিটুর জেলা সভাপতি জ্যোতিরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “শ্রমিকেরা নাম নথিভুক্ত করতে গেলে সরকারি অফিসে নানা ভাবে হয়রান হচ্ছেন। একাধিক দিন কামাই করে অফিসে যাওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না । এর ফলেই উতসাহ হারাচ্ছেন।” আই এন টি ইউসির বিড়ি শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদক বাদশার আলির অভিযোগ, “আগে শ্রমিক সংগঠনের স্বাক্ষরে নাম নথিভুক্ত করা যেত। এখন নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া তা করা হয় না। এর ফলে বিরোধী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকেরা প্রকল্পে যুক্ত হতে পারছেন না।” এসইউসি’র শ্রমিক সংগঠনের নেতা মির্জা নাসিরুদ্দিন বলেন, “মৃত বহু শ্রমিক পরিবারকে তিন-চার বছর পেরিয়েও তাদের প্রাপ্য দেওয়া হচ্ছে না। সরকারি সভা মঞ্চে শ্রম দফতরের কর্তারা এক কথা বলছেন। কিন্তু বাস্তবে অফিসে গেলে কর্মী নেই বলে শ্রমিকদের ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই হয়রানি বন্ধ না হলে কাজে গতি আসবে কি করে ?” শ্রম দফতরের জেলা শ্রম কমিশনার পতিত পাবন দাস সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে জেলা খুব একটা পিছিয়ে আছে তা মানছেন না। তবে তার কথা, “জেলার ৫ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে এই প্রকল্প নিয়ে গ্রামে গঞ্জে প্রচারে লাগানো হয়েছে। প্রতি পরিবারেই শ্রমিক রয়েছেন। তারা প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হলেই এক বছরের মধ্যেই মুর্শিদাবাদ জেলায় দশ লক্ষ শ্রমিক এর আওতা ভুক্ত হবেন। সেই পথেই কাজ শুরু হয়েছে।” মন্ত্রী জাকির হোসেন দীর্ঘদিন থেকে অসুস্থ। ফোন করা হলে তা বেজেই গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন