রামনবমীর শোভাযাত্রায় ‘সরবত’ নিয়ে মুজিবরেরা

বেশ কিছু এলাকাতেই দেখা গিয়েছে, রামনবমীর শোভাযাত্রায় যোগ দেওয়া মানুষদের দিকে সরবতের গ্লাস বা়ড়িয়ে দিচ্ছেন পিরু খান, মুজিবর রহমান, সৈয়দ আলিম হোসেনরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর ও অন্ডাল শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৮ ০১:২০
Share:

শোভাযাত্রায় চক্কর কাটল ড্রোন। উখড়ায়। নিজস্ব চিত্র

ইদ, মহরম সুষ্ঠু ভাবে পালন করার জন্য সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেন। রামনবমী উপলক্ষে রবিবার সেই একই রকম সম্প্রীতির ছবিটাই দেখা গিয়েছে দুর্গাপুর, অন্ডাল-সহ পশ্চিম বর্ধমানের নানা এলাকায়। বেশ কিছু এলাকাতেই দেখা গিয়েছে, রামনবমীর শোভাযাত্রায় যোগ দেওয়া মানুষদের দিকে সরবতের গ্লাস বা়ড়িয়ে দিচ্ছেন পিরু খান, মুজিবর রহমান, সৈয়দ আলিম হোসেনরা।

Advertisement

ঘটনাস্থল, পানাগড়ের পাঠানপাড়া। পানাগড় গ্রাম থেকে আসা রামনবমীর শোভাযাত্রাটি এলাকায় ঢোকে। তা দার্জিলিং মোড় হয়ে ফের পানাগড়ে শেষ হয়। মাঝে পাঠানপাড়া এলাকায় মূলত ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষই বেশি থাকেন। সেখানে শোভাযাত্রা ঢুকতেই দেখা গেল, পা়ড়ার লোকজন মিছিলের সবার হাতে তুলে দিচ্ছেন সরবতের গ্লাস। তাতে চুমুক দিয়ে বিশ্বজিৎ সাঁই বলেন, ‘‘এই সহাবস্থানই আমাদের ঐতিহ্য। খুবই ভাল লাগছে।’’

কেন এমন উদ্যোগ? এক প্রবীণের দিকে সরবতের গ্লাস এগিয়ে দিতে দিতে পিরু খান বললেন, ‘‘ইদ, মহরমে সকলেই পাশে থাকেন। এখানে হিন্দু, ইসলাম, শিখ, খ্রিস্টান-সহ সব ধর্মের মানুষই রয়েছে। সবাই বড় হয়েছি এক সঙ্গেই। মিছিলে সব বয়সের মানুষ ছিলেন। গরমে হেঁটে অনেকেই ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। তাই এই ভাবনা।’’ একই ছবি দেখা গিয়েছে অন্ডালের ধাণ্ডাডিহি গ্রামেও। সেখানেও ব্যবস্থা ছিল, জল, সরবতের।

Advertisement

এ ছাড়া উখড়ায় নানা এলাকা থেকে সাতটি আখড়ার শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রা হয়েছে রানিগঞ্জবাজার, কালীতলা, আমকোলা কোলিয়ারি, জেকে নগর প্রভৃতি জায়গাতেও। কাঁকসা ও দুর্গাপুরের নানা এলাকাতেও বেরিয়েছিল শোভাযাত্রা। পৃথক শোভাযাত্রা বের করে বিজেপি ও তৃণমূল।

বেনাচিতির মসজিদ মহল্লার আলিবাবাও এই দিনে সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত তৈরি করলেন। কিছু দিন আগে হজযাত্রা সেরে আসা আলিবাবা এক সময় সিআর দাস এলাকায় হনুমান মন্দির তৈরিতে ভূমিকা নেন। এ দিন দেখা গেল, সেখানে পুজোর তদারকি করছেন তিনি। রামনবমীর শোভাযাত্রা যাতে ঠিক ভাবে যেতে পারে, তারও তদারকি করেন তিনি। সেই সঙ্গে বলেন, ‘‘ধর্ম মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে না। বরং সবাইকে এক হতে শেখায়।’’

শোভাযাত্রা উপলক্ষে জেলা জুড়েই পুলিশি নজরদারি ছিল কড়া। বেশ কিছু জায়গায় ড্রোন ব্যবহার করা হয়। আসানসোল, দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক মোদী বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ মেনে এ বার মিছিলে অস্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। আগেই মিছিলের উদ্যোক্তাদের সে কথা জানিয়ে দিয়েছিল পুলিশ।’’ তার পরেও শোভাযাত্রায় দু-এক জনের হাতে অস্ত্র দেখা গিয়েছে বলে পুলিশ জানায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন