মদ ব্যবসায়ীর থেকে ১২ লক্ষ টাকা তোলার অভিযোগ ১৬ আবগারি কর্তার বিরুদ্ধে

সুপারিনটেন্ডেন্ট সাহেবের বোতল-পিছু মাসোহারা ২০ পয়সা। আর বিশেষ আবগারি কনস্টেবলের বোতল-পিছু প্রাপ্তি মাসে দু’পয়সা।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:২৭
Share:

নবান্ন একযোগে পুরুলিয়ার ১৬ জন আবগারি অফিসারকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করেছে।—ফাইল চিত্র।

সুপারিনটেন্ডেন্ট সাহেবের বোতল-পিছু মাসোহারা ২০ পয়সা। আর বিশেষ আবগারি কনস্টেবলের বোতল-পিছু প্রাপ্তি মাসে দু’পয়সা।

Advertisement

সব মিলিয়ে পুরুলিয়ার মদ বিক্রেতাদের কাছ থেকে মাসে ১২ লক্ষ টাকার তোলাবাজির অভিযোগ উঠেছিল আবগারি কর্তাদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ করেছিলেন পুরুলিয়ার মদ বিক্রেতারাই। ঘুষ নেওয়ার এমন অভিযোগ পেয়ে নবান্ন একযোগে পুরুলিয়ার ১৬ জন আবগারি অফিসারকে সাসপেন্ড বা সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করেছে। তাঁদের মধ্যে জেলার আবগারি সুপারিনটেন্ডেন্ট তো আছেনই। সেই সঙ্গে রয়েছেন সাব-ইনস্পেক্টর, কনস্টেবলরাও।

নবান্নের এক মুখপাত্র জানান, সাম্প্রতিক কালে এক দিনে একসঙ্গে জেলার প্রায় পুরো আবগারি টিমকেই সাসপেন্ড করার ঘটনা ঘটেনি। অভিযোগ পেয়ে তদন্তের নির্দেশও দিয়েছেন আবগারি কমিশনার রণধীর কুমার। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়িয়েছে যে, আজ, শুক্রবার থেকে পুরুলিয়া জেলার আবগারি দফতরের কাজকর্ম কী ভাবে চলবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, নতুন অফিসারেরা গিয়ে জেলার দায়িত্ব নেবেন। এই বিষয়ে আবগারি কমিশনারকে বারবার ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএসেরও জবাব দেননি।

Advertisement

নবান্ন সূত্রের খবর, পুরুলিয়ার মদ বিক্রেতারা সরকারকে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন, দিশি মদের একটি বোতল বিক্রি করে তাঁরা এক টাকা ৭৪ পয়সা লাভ করেন। কিন্তু তার মধ্যে ঘুষ দিতেই চলে যায় ৮০ পয়সা। আবগারি দফতরের জেলা সুপার, অতিরিক্ত সুপার, ডেপুটি সুপার থেকে ওসি, এসআই, এএসআই এবং কনস্টেবলরাও প্রতি বোতল থেকে ‘ভাগ’ পান। সব মিলিয়ে ১২ লক্ষ টাকা তোলা প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে ডাকবাবুর কাছে পৌঁছে দিতে হয়।

মদ বিক্রেতারা সরকারকে লেখা অভিযোগপত্রে জানান, পুরুলিয়ায় দিশি মদের দু’টি বটলিং প্ল্যান্ট রয়েছে। সেখান থেকেও প্রতি মাসে টাকা পাঠানো বাধ্যতামূলক ছিল। এ ছাড়া ‘বড়সাহেবদের’ নাম করেও প্রতি মাসেই দামি মদের বোতল সরবরাহ করতে হত বলে অভিযোগ জানিয়েছেন মদ বিক্রেতারা।

নবান্নের এক কর্তা জানান, মদ বিক্রেতাদের অভিযোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেই কারণেই পুরুলিয়ার আবগারি সুপার, তিন ডেপুটি সুপার, চার জন সাব-ইনস্পেক্টর এবং আট এএসআই-কে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

‘‘অনেক দিন ধরেই ঘুষ চক্র থেকে বেরিয়ে আসার জন্য জেলার অফিসারদের অনুরোধ করা হচ্ছিল। নদিয়ায় ব্যবস্থাও নেওয়া হয়।

তাতেও অফিসারদের একাংশের শিক্ষা হয়নি। তাই জেলার পুরো আবগারি টিমকেই সরাতে হল। তদন্ত চলবে,’’ বলেন আবগারি দফতরের এক কর্তা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন