—ফাইল চিত্র।
জনপ্রতিনিধিদের উপর হামলা রুখতে এবং সামাজিক অস্থিরতা তৈরিতে প্ররোচনা ঠেকাতে রাজ্য এবং কলকাতা পুলিশকে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিলেন রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুরজিৎ করপুরকায়স্থ। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে পুলিশকর্তাদের উদ্দেশে লেখা উপদেষ্টার ওই চিঠির সিংহভাগ অংশে রাজ্যের সামগ্রিক পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ এবং নির্দেশের উল্লেখ রয়েছে। গোটা বিষয়টির পরিপ্রেক্ষিতে গোয়েন্দা তৎপরতা যে বাড়ানো প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টা।
সম্প্রতি নদিয়ায় শাসক দলের এক বিধায়ককে গুলি করে খুন করেছে দুষ্কৃতীরা। বজবজেও তৃণমূলের কাউন্সিলর গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। তার পরেই রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী ও শাসক দলের নেতার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রের খবর। রাজ্যে শুরু হয়েছে নানান গুজব এবং উস্কানিমূলক প্রচার। সে সবের পরিপ্রেক্ষিতে কয়েক দিন আগেই পুলিশের সর্বস্তরের উদ্দেশে বলেন, গুজব, প্ররোচনা, উস্কানি ছড়ানোর মতো অপরাধ কড়া হাতে মোকাবিলা করতে হবে। পুলিশের গা-ছাড়া মনোভাব প্রশাসন বরদাস্ত করবে না।
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই হিংসাত্মক আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। তাতে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার হচ্ছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্ন ঘটাতে এবং সামাজিক অস্থিরতা বাড়াতে কিছু দল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে গুজব রটাচ্ছে। তৎপরতার সঙ্গে এই সব অপরাধ সংক্রান্ত গোয়েন্দা-তথ্য আগেভাগে জোগাড় করতে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে জেলা স্তরের পুলিশকর্তাদের।
বিভিন্ন সময়ে যে সব নির্দেশিকা জারি করেছে সরকার, তার বাস্তবায়ন এবং নজরদারিতে পদস্থ অফিসারদের গা-ছাড়া মনোভাব মেনে নেওয়া হবে না। পুলিশ সুপার এবং তার থেকে উপরের স্তরের অফিসার এবং সর্বস্তরের গোয়েন্দা-অফিসারেরা নবান্নের নির্দেশগুলি যাতে যথাযথ ভাবে মেনে চলেন, তা নিশ্চিত করতে রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর সামগ্রিক পর্যবেক্ষণ এবং নির্দেশের প্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ করা হল, তার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চেয়েছেন সুরজিৎবাবু। নবান্নের খবর, রাজ্য পুলিশের ডিজি, কলকাতার পুলিশ কমিশনার, এডিজি (আইনশৃঙ্খলা), এডিজি (আইবি)-সহ জেলাস্তরের পুলিশকর্তাদেরও কাছে এই নির্দেশিকা পৌঁছেও গিয়েছে।
পুলিশের একাংশ মনে করছেন, নির্বাচনের আগে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে যাতে কোনও প্রশ্ন না-ওঠে সেটাই নিশ্চিত করতে চেয়েছেন নিরাপত্তা উপদেষ্টা। তাই এসপি, ডিআইজি, আইজি পদের অফিসারদেরও মাঠে নামতে বলা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামলাতে নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে নির্দেশ দিতে হল কেন? তা হলে কি পুলিশের একাংশে গা-ছাড়া মনোভাব তৈরি হয়েছে?
সে ব্যাপারে অবশ্য সরাসরি কিছু বলতে চাইছেন না নবান্নের কর্তারা।