গ্রিল কেটে হোম-ছুট চোদ্দো জন কিশোর

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার বহরমপুর কাদাই এলাকার কাজি নজরুল ইসলাম শিশু আবাস নামের ওই হোম থেকে পলাতকদের বয়স ৭ বছর থেকে ১২ বছরের মধ্যে। তাদের বাড়ি বিহার, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদ জেলায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:০৯
Share:

কান্দিতে উদ্ধার হওয়া দুই কিশোর। নিজস্ব চিত্র

দাওয়াই অনেক। কিন্তু রোগ সারছে কই? বহরমপুরের হোম থেকে আবাসিক কিশোর-বালকদের পালানো অব্যাহত। শনিবার কাকভোরে ফের হোমের গ্রিল কেটে চম্পট দেয় ১৪ জন। তারমধ্যে ১১ জনকে খুঁজে ফের হোমে নিয়ে আসা গেলেও, সরকারি হোমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আবারও বেআব্রু হয়ে পড়ল।

Advertisement

কারণ, মাস ছয়েক আগে এই হোমের পাশের হোমের গ্রিল কেটে দু’দফায় পালিয়েছিল বেশ কয়েকজন বাংলাদেশী কিশোর। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, তার জন্য প্রশাসন বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু, সেই দাওয়াই যে কথার কথা ছিল, তা ফের প্রমাণিত হয়ে গেল।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার বহরমপুর কাদাই এলাকার কাজি নজরুল ইসলাম শিশু আবাস নামের ওই হোম থেকে পলাতকদের বয়স ৭ বছর থেকে ১২ বছরের মধ্যে। তাদের বাড়ি বিহার, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদ জেলায়। মুর্শিদাবাদ জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) সমনজিৎ সেনগুপ্ত ওই হোমে তদন্তের সময় বলেন, ‘‘১৪ জনের মধ্যে জন ৩ বাদে সবাইকে উদ্ধার করে ফের হোমে রাখা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।’’

Advertisement

বহরমপুর পুরনো কান্দি বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া ওই হোমে ৬ থেকে ১৮ বছর বয়সের হারিয়ে যাওয়া, অথবা দূঃস্থ পরিবারের শিশুদের থাকা ও লেখাপড়া করার ব্যবস্থা রয়েছে। হোমে মোট ৫৫ জন শিশু ছিল।

স্থানীয় চায়ের দোকনদার অপু বিশ্বাস বলেন, ‘‘পিঠে ব্যাগ কয়েকটি শিশুকে দৌড়তে দেখে আমরাও ছুট লাগায়। দু’জনকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিই।’’ ওই হোমের কর্মীদের জানান পাঁচ জনকে তাঁরা নতুনবাজার এলাকা থেকে উদ্ধার করেন। বহরমপুর থানার পুলিশও ৪ জনকে উদ্ধার করে।

হোমের কর্মীদের কয়েকজন জানান, দোতলা ঘরের দক্ষিণ-পশ্চিম কোনের জানালার গ্রিল ভেঙে শিশুরা পাইপ বেয়ে এক তলায় নেমে পালিয়ে যায়। তার পরে গেট টপকে বাইরে। গেট টপকানোর সময় নিজেদের ব্যাগ তারা ফেলে যায়। হোম সূত্রের খবর, খাতা-কলমে তিন জন নৈশ প্রহরি থাকলেও আদতে একজনও নেই। মাত্র দু’জন ঝাডুদার রয়েছে। তাঁরা কেউ রান্না করেন, কেউ গেট পাহারা দেন।

খাতা-কলমে শিক্ষক থাকলেও সেই কাজ করেন এক জন গায়িকা। আবাসিক শিশুদের অভিযোগ খারেরর মান, পরিমাণ খুবই খারাপ। তাদের মারধরও করা হয়। ওই শিশুদের পালিয়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) সমনজিৎ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, চার দিকে পাচিল দেওয়া বদ্ধ জায়গার মধ্যে শিশুমন থাকতে চায়নি। তবে ওই বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন