হরিহরপাড়া

বোমা-গুলি ছোড়াছুড়ি, প্রাণ গেল দু’জনের

বোমা-গুলি আর খুন খারাবিতে এই সেদিন পর্যন্ত উত্তপ্ত ছিল বেলডাঙার মহ্যমপুর গ্রাম। অবস্থা এমন ছিল যে দীর্ঘদিন স্কুল-কলেজে যেতে পারেনি পড়ুয়ারা। মহ্যমপুরের বাতাসে বারুদের গন্ধ এখনও মেলায়নি। তারমধ্যেই বোমা-গুলিতে উত্তপ্ত হল বেলডাঙার পাশের থানা হরিহরপাড়ার রুকুনপুর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হরিহরপাড়া শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৬ ০২:০২
Share:

পড়ে রয়েছে দেহ। নিজস্ব চিত্র।

বোমা-গুলি আর খুন খারাবিতে এই সেদিন পর্যন্ত উত্তপ্ত ছিল বেলডাঙার মহ্যমপুর গ্রাম। অবস্থা এমন ছিল যে দীর্ঘদিন স্কুল-কলেজে যেতে পারেনি পড়ুয়ারা। মহ্যমপুরের বাতাসে বারুদের গন্ধ এখনও মেলায়নি।

Advertisement

তারমধ্যেই বোমা-গুলিতে উত্তপ্ত হল বেলডাঙার পাশের থানা হরিহরপাড়ার রুকুনপুর। মঙ্গলবার দু’পক্ষের বোমা-গুলির লড়াই কেড়ে নিল দু’টি তাজা প্রাণ। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের একজনের নাম রহমত আলি (৩৮)। তিনি রুকুনপুরের বাসিন্দা। অন্যজনের পরিচয় জানা যায়নি। মাসখানেক আগেই মহ্যমপুরে বোমা-গুলির লড়াইয়ে দু’জন প্রাণ হারিয়েছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রুকুনপুর কলাবাগানপাড়া এলাকার দু’দল সমাজবিরোধীদের মধ্যে এলাকা দখলের লড়াইয়ে উত্তপ্ত ছিল এলাকা। গত কয়েক বছরে এই এলাকায় কয়েক জনের মৃত্যুও হয়েছে। তার পরেও পুলিশ অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে আচমকাই বোমাবাজি শুরু হয়। রহমত আলি মাঠে কাজ করছিল। দূর থেকে তাকে লক্ষ্য করে আচকমকা গুলি ও বোমা ছুড়তে শুরু করে এক দল দুষ্কৃতী। মৃত্যু হয় তার।

Advertisement

এর পরেই রহমতের গোষ্ঠীর লোকেরা পাল্টা বোমা-গুলি নিয়ে লড়াইয়ে নামে। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।

তারা রহমত আলির মৃতদেহ উদ্ধার করে। সেখান থেকে ৩০০ মিটার দূরের ধান ক্ষেতে একটি দেহে আর একটি দেহ মেলে। বোমা-গুলির সঙ্গে তার দেহে ধারাল অস্ত্রের কোপ ছিল। কিন্তু, এদিন রাত পর্যন্ত তার জানা যায় নি। পুলিশের ধারণা, রহমতের বিরোধী গোষ্ঠী হামলা চালাবে বলে বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসেছিল। সম্ভবত, তাদেরই কেউ এদিন খুন হয়ে গিয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, রহমতের বিরুদ্ধে সমাজবিরোধীমূলক কাজের অভিযোগ ছিল। পুলিশ ওই ঘটনায় রুকুনপুর এলাকা থেকে ১১ জন কে গ্রেফতার করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে গত কয়েক বছর ধরে গ্রামের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই চলছে। গ্রামে কাদের কর্তৃত্ব থাকবে, লড়াই মূলত তা নিয়েই। মাশ খানেক আগে রহমতের বিরোধী গোষ্ঠীর এক নেতার ছেলে খুন হয়। গ্রামবাসিদের ধারণা, সেই খুনের বদলার জেরেই এদিনের ঘটনা ঘটল। ঘটনার পর পুলিশ বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি চালায়।

সিপিএমের জোনাল কমিটির সম্পাদক ইনসার আলি বিশ্বাস বলেন,‘‘গ্রামের হাতে গোনা কিছু লোক এই সন্ত্রাস চালাচ্ছে। মানুষ এর থেকে মুক্তি চায়।’’ হরিহরপাড়া ব্লক কংগ্রেস সভাপতি মির আলমগীরের প্রশ্ন, ‘‘গ্রামে সমাজবিরোধীদের দৌরাত্ম অনেক দিনের। কিন্তু, পুলিশ কেন কিছু করছে না?’’ হরিহরপাড়ার তৃণমূলের বিধায়ক নিয়ামত শেখ বলেন, ‘‘ খুব দুঃখজনক ঘটনা। পুলিশকে বলব, তারা যেন নিজেদের দায়িত্ব ঠিকঠাক পালন করে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন