কুয়াশায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস পড়ল নয়ানজুলিতে, মৃত ৯

বুঝলাম, জল এগিয়ে আসছে

হই হই করে ওঠার আগেও একটা ঝপাং শব্দ, আমি মাথাটা উঁচু করে রাখলাম, একেবারেই রিফ্লেক্সে। তবু ঠুকে গেল মাথাটা, উল্টে গেলাম মনে হয়, পায়ের চটি ছিটকে গেল। ব্যাগটা কোথায় ছিটতে গেল বুঝতেই পারলাম না।

Advertisement

শীলা রবিদাস (বাসের যাত্রী)

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:১৩
Share:

চলছে উদ্ধার কাজ। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

কানাপাড়ায় একটা ইট ভাটায় কাজ করি। শনিবার বাড়ি ফেরার কথা। প্রতি সপ্তাহে যা করি, বহরমপুর থেকে বাস ধরে বীরভূম যাব বলে কাক ভোরে উঠে বাস ধরেছিলাম। বাসে উঠে দেখি জনা জনা পঞ্চাশ লোক। কেউ চাদর মুড়ি দিয়ে কেই আষ্টেপৃষ্টি মাফলারে মুড়ে রেখেছে নিজেকে, বেশ ঠান্ডা। কুয়াশা ঢাকা প্রায় অন্ধকার রাস্তা। বাসটা প্রথমে ডুবতলায় থামল তার পর, ত্রিমোহিনী। বাস এগোচ্ছে। খোঁরারগাছতলা পেরোতেই হঠাৎ স্পিড বাড়িয়ে দিল বাস। সাড়ে পাঁচটায় বেলডাঙা ষ্টেশনে ট্রেন ধরাতে হবে। বেগুবাড়ি পেরোতেই ভাঙাচোরা রাস্তা। অসম্ভব ঝাঁকুনি। দুলতে দুলতে চলেছি, গতি বাড়ছে বাসের। হঠাৎ দেখলাম একটা লরির মতো কিছু আসছে, ভাসল দেখা যাচ্ছে না। ড্রাইভারের সহকারী মৃদু গলায় সতর্কও করল। লরিটা এগিয়ে আসছে, একটা হর্ন বাসটা শেষ মুহূর্তে পাশ কাটাতে গেল দেখলাম একটা জলার দিকে নেমে যাচ্ছি আমরা।

Advertisement

হই হই করে ওঠার আগেও একটা ঝপাং শব্দ, আমি মাথাটা উঁচু করে রাখলাম, একেবারেই রিফ্লেক্সে। তবু ঠুকে গেল মাথাটা, উল্টে গেলাম মনে হয়, পায়ের চটি ছিটকে গেল। ব্যাগটা কোথায় ছিটতে গেল বুঝতেই পারলাম না। কেমন ভিজে ভিজে লাগছে চার দিক। বাসের মধ্যে জল ঢুকছে, বুঝলাম বাস ডুবছে।

কী করব এ বার, কিছু বুঝে ওঠার আগেইহুশ করে ভিজে গেলাম, জল ঢুকে গেল মুখে। জ্ঞান হারালাম কি, কে জানে, হঠাৎ দেখলাম আমাকে সবাই ধরাধরি করে বের করছে। কী করে বাঁচলাম সত্যিই জানি না।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন