দুপুরেই সন্ধ্যা ঘনাল, শঙ্কায় বাজল শাঁখ

সন্ধ্যে নেমেছিল দুপুরেই! সেই সঙ্গে পাগলা হাওয়া। আর ঝেঁপে বৃষ্টি। মঙ্গলবার মিনিট কয়েকের জন্য দেখা দিয়ে মিলিয়ে গিয়েছিল মুহূর্তেই। বুধবার অবশ্য নিরাশ করেনি। ঘন কালো মেঘে ছেয়ে গেল আকাশ। ঘরে ঘরে বেজে উঠল শাঁখ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৬ ০১:২৫
Share:

মেঘের আড়ালে হারিয়ে গেল শহর। বহরমপুরে গৌতম প্রামাণিকের তোলা ছবি।

সন্ধ্যে নেমেছিল দুপুরেই!

Advertisement

সেই সঙ্গে পাগলা হাওয়া। আর ঝেঁপে বৃষ্টি। মঙ্গলবার মিনিট কয়েকের জন্য দেখা দিয়ে মিলিয়ে গিয়েছিল মুহূর্তেই। বুধবার অবশ্য নিরাশ করেনি। ঘন কালো মেঘে ছেয়ে গেল আকাশ। ঘরে ঘরে বেজে উঠল শাঁখ। নারকেল গাছের মাথা নুইয়ে, কৃষ্ণচূড়ার ডাল ভেঙে অবশেষে এল কালবৈশাখী। বৃষ্টি-স্নানে মেতে উঠল উচ্ছ্বসিত শহর। কেউ বেরিয়ে এলেন পথে। কেউ তরতর করে উঠে গেলেন ছাদে। কেউ আবার স্রেফ ভিজবেন বলেই বাইক নিয়ে বেরিয়ে
পড়লেন রাস্তায়।

রাজপথ জুড়ে গাড়ির সারি। ভরদুপুরেই আঁধার পথে ভরসা কেবল হেডলাইটের তীব্র আলো। তা হোক। কাকভেজা হয়েই তরুণ বাইক চালক ধরে ফেললেন, ‘‘এই পথ যদি না শেষ হয়।’’ নয়ানজুলির শুকনো ঘাসগুলো যেন প্রাণ ফিরে পেল। বৃষ্টি পেয়ে আহ্লাদি হয়ে উঠল জামগাছ। দমকা হাওয়ায় ছাতা গেল উল্টে। কাকভেজা হয়ে খেত থেকে বাড়ি ফিরল রাখাল। হইহই করে অফিসপাড়াও যেন বেরিয়ে এল বারান্দায়। ইনবক্স, হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক জুড়ে সাঁ সাঁ কালবৈশাখী আর টাপুর-টুপুরের কাব্য।

Advertisement

চাঁদিফাটা রোদ আর প্যাচপ্যাচে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল তামাম জেলা। এ দিন অবশ্য স্বস্তি ফিরেছে। তবে বৃষ্টি-বরাতে বহরমপুর, লালবাগ, জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জের সঙ্গে এঁটে উঠতে পারেনি কান্দি, জঙ্গিপুর, ফরাক্কা, লালগোলা কিংবা ডোমকল। দমকা হাওয়ার সঙ্গে এক পশলা বৃষ্টির দেখা মিলছে বটে। কিন্তু তৃষ্ণার্ত শহর বলছে, ‘‘আরও বৃষ্টি চাই।’’ সিটি মুর্শিদাবাদ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘গরমে কাহিল হয়ে পড়েছিলেন ক্রেতা বিক্রেতা সকলেই। অবশেষে শান্তি পেলাম মশাই।’’ তবে উল্টো দিকও রয়েছে। কালবৈশাখী তাণ্ডবে কপালে ভাঁজ আমচাষিদের। এ বার দীর্ঘ দিন বৃষ্টি না হওয়ায় আমের বোঁটা শুকিয়েই ছিল। এমন অবস্থায় দমকা ঝোড়ো হাওয়ায় অনেক আম নষ্ট হয়েছে। মুর্শিদাবাদের আমচাষি হায়াতুন নবী বলেন, ‘‘এক বছর ভাল ফলন হলে পরের বছর বহু গাছে আমের মুকুল আসে না। ফলনও অর্ধেক হয়ে যায়। এ বার সেই অর্ধেক ফলনের বছর। তার উপরে এ দিনের ঝড়ে বহু আম নষ্ট হয়েছে।’’ সেই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘খরার মতো পরিস্থিতে এ বারের আমচাষ করতে হয়েছে। তাতে আমের আকার-আয়তন ছোট হওয়ার পাশাপাশি স্বাদ-গন্ধও তেমন ভাল হয়নি। এ দিনের বৃষ্টিতে আমের স্বাদ-গন্ধ অনেকটাই ফিরতে পারে।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, এ দিনের ঝড়ে জেলায় কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই। জেলা কৃষি দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এ দিনের বৃষ্টিতে পাট, শশা, পটল, ঝিঙে- সহ বিভিন্ন সব্জি চাষে বেশ উপকার হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন