বেপরোয়া অ্যাম্বুল্যান্স, ধাক্কায় মৃত্যু হল বৃদ্ধের

এ দিন মুরুটিয়ার ভোগাইপুরের বছর ত্রিশের এক মহিলা নিজের গলায় দড়ির ফাঁস আটকানোর চেষ্টা করেন। তাঁকে প্রথমে করিমপুর হাসপাতাল ও সেখান থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে শক্তিনগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সেই সময় ওই বৃদ্ধ পাটকাঠির বোঝা মাথায় নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তেহট্ট শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৯ ০২:১৩
Share:

কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মৃতের আত্মীয়েরা। রবিবার তেহট্টে। নিজস্ব চিত্র

গুরুতর আহত বা অসুস্থকে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছে দিয়ে প্রাণ বাঁচানোর দায়িত্ব থাকে যার উপর সেই অ্যাম্বুল্যান্সের ধাক্কায় প্রাণ গেল এক বৃদ্ধর। তাঁর নাম সুবোধ বিশ্বাস (‌৬৫)‌। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন অ্যাম্বুল্যান্সের চালক-সহ চার জন। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে কৃষ্ণনগর করিমপুর রাজ্য সড়কের তেহট্টের বেতাই নতুনপাড়ায়।

Advertisement

এ দিন মুরুটিয়ার ভোগাইপুরের বছর ত্রিশের এক মহিলা নিজের গলায় দড়ির ফাঁস আটকানোর চেষ্টা করেন। তাঁকে প্রথমে করিমপুর হাসপাতাল ও সেখান থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে শক্তিনগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সেই সময় ওই বৃদ্ধ পাটকাঠির বোঝা মাথায় নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। সেই সময় অ্যাম্বুল্যান্স দ্রুত গতিতে এসে তাঁকে ধাক্কা মেরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ঘটনাস্থলেই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। মাত্র আট দিন আগে বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ থেকে সুবোধবাবু ও তাঁর স্ত্রী রুবি বেতাইয়ে ছেলে সঞ্জয় বিশ্বাসের বাড়ি এসেছিলেন।

এই দুর্ঘটনায় অ্যাম্বুল্যআন্সে থাকা রোগী, তাঁর পরিবারের তিন জন ও চালকের আঘাত লাগে। তাঁদের তেহট্ট ও শক্তিনগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কয়েক মাস আগে একই ভাবে ‌বেপরোয়া অ্যাম্বুল্যান্সের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছিল বেতাইয়েরই দুই জনের। সে দিন করিমপুর থেকে কৃষ্ণনগরগামী একটি খালি অ্যাম্বুল্যান্স আপদকালীন সাইরেন বাজিয়ে দ্রুত গতিতে ছুটে যাওয়ার রাস্তার স্পিড ব্রেকারে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বেতাই বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা ছয় ব্যক্তিকে সজোরে ধাক্কা মারে। কৃষ্ণনগর হাসপাতালে পৌঁছনো মাত্র পবিত্র সরকার (৪০) ও শক্তিনগর থেকে কল্যাণী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে রাম হালদারের(৫৫) মৃত্যু হয়। এ দিনের দুর্ঘটনার পরে প্রশ্ন উঠেছে, অসুস্থ বা আগতকে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছতে অ্যাম্বুল্যান্সের গতি বেশি থাকে। কিন্তু সেই গতিই মারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে। এক জনকে বাঁচাতে গিয়ে অন্য অনেকের প্রাণ যাচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, অনেক অ্যাম্বুল্যান্স চালকই জোরে চালাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন এবং ট্রাফিক আইনের বিন্দুবিসর্গ মানেন না। রোগী না থাকলেও অহেতুক মারাত্মক গতিতে গাড়ি চালান। তাতেই বিপদ ঘটছে। আবার অনেক সময় মানুষের সচেতনতার অভাবেও দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানাচ্ছে, সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ নিয়ে এত প্রচার করার পরেও রাস্তায় চলাচল বা রাস্তা পারাপারের ব্যাপারে অনেকেই আনাড়ির মতো আচরণ করেন। ফলে এমন ঘটনা ঘটে। করিমপুর থেকে কৃষ্ণনগরের দূরত্ব প্রায় বিরাশি কিমি। অভিযোগ, ওই রাস্তায় উঁচু হয়ে থাকা প্রায় ষাটটি স্পিড ব্রেকারের জন্য সমস্যায় পড়তে হয়। ওই রাস্তায় অনেক অ্যাম্বুল্যান্স চলে। অপ্রয়োজনীয় স্পিড ব্রেকার গুলো তুলে দেওয়ার জন্য বহু বার প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তার পরেও কাজ হয়নি।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন