Jangipur

Jangipur: স্কুলছুট রুখতে খোলা মাঠেই ক্লাস

বুধবার থেকে অষ্টম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাশেই মাঠের মধ্যে পিঠে রোদ লাগিয়ে শুরু হল ক্লাস

Advertisement

বিমান হাজরা

জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:২৬
Share:

মাঠে ক্লাস হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

খোঁজ নেই ২১০ জন ছাত্রছাত্রীর। এদের শতাধিক ছাত্র ভিন রাজ্যে গিয়েছে কাজে, অন্তত ১১ জন ছাত্রী শ্বশুরবাড়িতে সংসার পেতেছে। এক বছরেই স্কুলছুট দু’শো পেরিয়ে যাওয়ায় চিন্তার ভাঁজ স্কুলের কপালে।

Advertisement

স্কুলছুটদের স্কুলে ফেরাতে তাই স্কুল খুলল জঙ্গিপুরের জোতকমল হাইস্কুল। বুধবার থেকে অষ্টম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাশেই মাঠের মধ্যে পিঠে রোদ লাগিয়ে শুরু হল ক্লাস। তিনটি ক্লাসে হাজিরার সংখ্যা অবশ্য বেশ কম, ১৪০ জন। স্কুলের শিক্ষকদের ধারণা, প্রথম দিন বলে হাজিরা কম হলেও ক্রমশ উপস্থিতির হার অনেকটাই বাড়বে।

প্রধান শিক্ষক শিবশঙ্কর সাহা বলছেন, “প্রতি ক্লাসে প্রতি বছর ভর্তির নিয়ম রয়েছে। এ বারে ভর্তি করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে এখনও ক্লাসে ভর্তি হয়নি ২১০ জন। দু’সপ্তাহ থেকে শুরু করা হয় ওদের প্রত্যেকের বাড়িতে ফোন করে খোঁজ নেওয়া। স্কুলে না আসার কারণ খুঁজতে গিয়েই বেরিয়ে এল বাস্তব অবস্থাটা। দেখা গেল এদের কেউ আছে ওড়িশায়। কেউ কেরালায়, কেউবা দিল্লিতে। রাজমিস্ত্রির কাজে খাটতে গিয়েছে বাবা, দাদাদের সঙ্গে। আরও বিস্ময়ের ঘটনা হল ১১ জন ছাত্রী বিয়ে হয়ে চলে গেছে শ্বশুরবাড়িতে। সব মিলিয়ে জনা ৪০কে হয়ত ফেরানো যাবে। কিন্তু বাকিদের ?”

Advertisement

প্রায় ৩৮০০ ছাত্রছাত্রীর ওই স্কুলে দীর্ঘ কয়েক বছরে স্কুলছুট প্রায় শূন্যে নেমে এসেছিল। এ বছর সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১০-এ। এদের মধ্যে কত জনকে স্কুল ফেরানো যাবে তা নিয়ে চিন্তায় স্কুলের শিক্ষকেরা।
প্রধান শিক্ষক বলছেন, “বিড়ি শ্রমিক অধ্যুষিত এলাকা। কম বয়সে বিয়ের সংখ্যাও কম ছিল না। বছর দশেকে সংখ্যাটা কমে এসেছিল অনেকটাই। এমনও হয়েছে স্কুলে খবর এসেছে কোনও ছাত্রীর পাকা দেখা হচ্ছে তার বাড়িতে। সেখানে ছুটে গেছেন শিক্ষকেরা। বুঝিয়ে শুনিয়ে বন্ধ করেছেন সে বিয়ে।’’ বুধবার বসেছিল অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির ক্লাস। প্রায় এক হাজার ছাত্র ছাত্রী তিন ক্লাসের। এদিনের হাজিরা মাত্র ১৪০ জন মত। মাঠের তিন দিকে পিঠে রোদ মেখে প্রায় পৌনে তিন ঘন্টায় ৪টি করে ক্লাস নিলেন শিক্ষকেরা। দশম শ্রেণিতে বাংলা, অঙ্ক, জীবন বিজ্ঞান, ইংরেজি। নবমেও তাই। অষ্টমে বাংলা, ইংরেজি, জীবন বিজ্ঞান ও সংস্কৃত। ৪৬ জন শিক্ষকের মধ্যে হাজিরা ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। সেইমতই ক্লাস নিতে সমস্যা হয়নি।

ইংরেজির শিক্ষক সামাদ মণ্ডল বলছেন, “করোনা পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছিল স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের। স্কুল বন্ধ আছে দেখে তারা দুটো পয়সার লোভে ভিন রাজ্যে চলে যাচ্ছে। এটা ভেবেই মাঠের খোলা জায়গায় মাস্ক পরে দূরে দূরে বসে দিব্যি ক্লাস করানো গিয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন