স্কুল ব্যাগে বইয়ের পাতার ভাঁজেই ছিল ব্লেড। স্কুলের টিফিনে সুযোগ বুঝে তা আছড়ে পড়ে এক সহপাঠীর হাতে। নবম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে বাঁচাতে গেলে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ব্লেড দিয়ে আঘাত করে নবম শ্রেণির ছাত্রটি। পুলিশ এসে অভিযুক্ত ছাত্রটিকে স্কুল থেকেই আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আহত এক ছাত্রীকে ভর্তি করা হয় জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে। শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে রঘুনাথগঞ্জ শহর লাগোয়া শ্রীকান্তবাটি হাইস্কুলে।
দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীর বাড়ি পাশেই বাণীপুরে। নবম শ্রেণির পড়ুয়া অন্য ছাত্রী মিঞাপুরের বাসিন্দা। অভিযুক্ত ছাত্র স্কুলের পাশেই গোপালনগরের। এ দিন শুক্রবার হওয়ায় এক ঘন্টার টিফিন ছিল স্কুলে। স্কুলের প্রধান ফটকও ছিল বন্ধ। আক্রান্ত এক ছাত্রীর অভিযোগ, “নবম শ্রেণির ওই ছাত্র অন্য বিভাগে পড়ে। আমি তাকে চিনি না। এ দিন আমরা দোতলায় ক্লাশ ঘরের পাশেই কয়েকজন বন্ধু মিলে দাঁড়িয়েছিলাম। তখন আমাদের ঘরের সামনে এসে ব্লেড নিয়ে আচমকা আঘাত করে ছাত্রটি। আমার কাঁধের অনেকটা অংশ কেটে রক্ত পড়তে থাকে। চিৎকার শুনে সে পালানোর চেষ্টা করে।”
আহত ছাত্রীকে স্কুলেরই অফিস ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য। সেই সঙ্গে খবর দেওয়া হয় বাড়িতেও। স্কুলের অফিসে খবর আসে ছাত্রটি পালানোর চেষ্টা করা সময়ে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর উপরেও ব্লেড দিয়ে আঘাত করেছে। তাকেও চিকিৎসার জন্য অফিস ঘরে নিয়ে আসা হয়। খবর দেওয়া হয় তার বাড়িতেও। প্রধান শিক্ষক উৎপল মণ্ডল বলেন, ‘‘ছাত্রটি কেন এই কাণ্ড ঘটিয়েছে, তা আমার কাছেও স্পষ্ট নয়।’’ আহত ছাত্রীকে দু’জন শিক্ষক হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তির বন্দোবস্ত করেন। রঘুনাথগঞ্জ থানায় ফোন করলে পুলিশ এসে ছাত্রটিকে থানায় নিয়ে যায়। প্রধান শিক্ষক বলছেন, “স্কুলের তরফে থানায় অভিযোগ করা হয়নি। অভিভাবককে ডেকে পাঠানো হয়েছে।’’
আহত ছাত্রীর মা বলেন, “যেহেতু স্কুলে ঘটনাটি ঘটেছে তাই প্রধান শিক্ষককে বলেছিলাম, পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে। কারণ স্কুলে ছাত্র ছাত্রীদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব তাঁরই। তা না হলে মেয়ে কেমন থাকে দেখে আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ করার কথা চিন্তা করব।”
এ দিন আটক অভিযুক্ত ছাত্র বলে, ‘‘প্রতি দিনই কয়েক জন ছাত্রী স্কুলে আমাকে উত্যক্ত করত। এ দিন সিঁড়ি দিয়ে তিন তলায় যাওয়ার পথে ফের তারা আজেবাজে কথা বলে। নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনি। ব্লেড দেখিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করি। এ ভাবে আঘাত লেগে যাবে বুঝতে পারিনি।’’