হাঁসখালির অ্যাসিড হামলা

সাজা শুনে মনে পড়ছে মেয়েকে

সরকার পক্ষের আইনজীবী নাসিরুদ্দিন আহমেদের ঘরে সোফায় চুপ করে বসেছিলেন অ্যাসিড হামলায় নিহত মৌ রজকের মা টুলু রজক। অভিযুক্তের সাজা হয়েছে। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। অথচ টুলু মুখ ভার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর  শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৭ ০০:৫৮
Share:

কান্না: সাজার খবর শুনে ভেঙে পড়লেন মৌয়ের মা। নিজস্ব চিত্র

সরকার পক্ষের আইনজীবী নাসিরুদ্দিন আহমেদের ঘরে সোফায় চুপ করে বসেছিলেন অ্যাসিড হামলায় নিহত মৌ রজকের মা টুলু রজক। অভিযুক্তের সাজা হয়েছে। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। অথচ টুলু মুখ ভার।

Advertisement

আঁচল দিয়ে চোখটা মুছে টুলুদেবী বলছেন, “আমরা ভেবেছিলাম ওর ফাঁসি হবে। তাছাড়া মেয়েটাকে তো আর ফিরে পাব না।” কিছুক্ষণ চুপ করে থাকেন তিনি। তারপর বিড়বিড় করেন, ‘‘মেয়েটার খুব মনের জোর ছিল। দাঁতে দাঁত চেপে বাঁচতে চেয়েছিল। কিন্তু পারল না!’’

৮ মে রাতেই তিনি জানতে পেরেছিলেন, অভিযুক্ত ইমান আলি শেখকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন বিচারক। এ দিন সকাল সকাল তাই বড় ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে হাঁসখালি এলাকার বাসিন্দা টুলু হাজির হয়েছিলেন কৃষ্ণনগর আদালতে।

Advertisement

এজলাসের বাইরে তিন সন্তানকে নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ইমানের স্ত্রী। বিচারক সাজা ঘোষনা করতেই তিন সন্তানকে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন ইমানের স্ত্রী। মাকে জড়িয়ে কেঁদে চলে তিন ছেলেমেয়ে। ওই মহিলা বলেন, ‘‘আমি বিশ্বাস করি না যে আমার স্বামী এমনটা করতে পারে। আমিও হাল ছাড়ব না। হাইকোর্টে যাব।’’

অ্যাসিড হামলায় নিহত কিশোরীর পরিবার না হয় সুবিচার পেলেন। কিন্তু জেলার অন্য অ্যাসিড হামলার মামলাগুলো কী অবস্থায় আছে? গত বছরেই একাধিক অ্যাসিড হামলার ঘটনা ঘটেছে নদিয়ায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর ৬ নভেম্বর ধানতলায় পারিবারিক অশান্তির জেরে স্ত্রীর গায়ে অ্যাসিড ছোড়ার অভিযোগ উঠেছিল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে।

এ বছর ৩ ফেব্রুয়ারি পুলিশ চার্জশিট জমা দিয়েছে আদালতে। তবে এখনও আদালতে চার্জ গঠন হয়নি। আবার ওই একই থানা এলাকায় কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত বছর ২০ মে সকালে পড়শি এক মহিলার গায়ে অ্যাসিড ছোড়ার অভিযোগ ওঠে এক যুবকের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনাতে পুলিশ ২৮ জুলাই চার্জশিট জমা দিয়েছে। রানাঘাট আদালতে মামলার শুনানি চলছে। ওই বছরই ৭ জুলাই চাকদহে এক মহিলা কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাঁর গায়ে অ্যাসিড ঢালা হয়। সেই মামলাতেও পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে ১৯ সেপ্টেম্বর চার্জশিট জমা দিয়েছে।

জেলার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলোর জন্য মনিটরিং সেল তৈরি হয়েছে। অ্যাসিড হামলার মামলাগুলোও আমরা সেই সেলের মাধ্যমে নিয়মিত নজরে রাখছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন