বিএলও-র বাড়িতে বিক্ষোভ

সেখানে পাথরঘাটা ও গোবিন্দপুর গ্রামের দুই বিএলও বিপ্লব ধর ও মোহিতুদ্দিন মোল্লা টাকা নিয়ে নিজেদের বাড়ির কম্পিউটরে ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড সংশোধন করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন গ্রামবাসীরা। এখানে

Advertisement

সাগর হালদার 

তেহট্ট শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০১
Share:

বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

ভোটার কার্ডে কোনও ভুল তথ্য থাকলে অনলাইনে তা সংশোধন করতে গ্রামবাসীদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে বিনামূল্যে সাহায্য করার কথা স্থানীয় বুথ লেভেল অফিসার বা বিএলও-দের। কিন্তু সরকার-নিযুক্ত এই কর্মীদের মধ্যেই কেউ-কেউ ‘সাহায্যকারী’র বদলে মওকা বুঝে ‘শোষণকারী’র ভূমিকা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে নদিয়ার তেহট্টে।

Advertisement

সেখানে পাথরঘাটা ও গোবিন্দপুর গ্রামের দুই বিএলও বিপ্লব ধর ও মোহিতুদ্দিন মোল্লা টাকা নিয়ে নিজেদের বাড়ির কম্পিউটরে ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড সংশোধন করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন গ্রামবাসীরা। এখানেই শেষ নয়, দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ যে তাঁরা জাতীয় নাগরিক পঞ্জির কথা বলে গ্রামের অনেককে ভয় দেখাচ্ছেন এবং জোর করে তাঁদের কাছে টাকা দিয়ে নথি সংশোধন করতে বাধ্য করছেন। এমনকি তাঁরা বোঝাচ্ছেন, স্থানীয় সাইবার ক্যাফেগুলি থেকে গ্রামের মানুষ অনলাইনে নথি সংশোধন করলে কাজ হবে না এবং তাতে নাগরিক তালিকা থেকে নাম বাদ পড়তে পারে।
বৃহস্পতিবার ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী অভিযুক্ত বিএলওদের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান। তেহট্রের বিডিও শেখর কুমার চৌধুরির কাছে তাঁরা দু’জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পরে বিডিও বলেন, ‘‘বিষয়টি তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং গ্রামে যাতে এনআরসি নিয়ে কোনও মিথ্যা প্রচার না-হয় সে ব্যাপারেও নজর রাখা হবে।’’

অভিযুক্ত দুই বিএলও-ই গোবিন্দপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। বিপ্লব পাথরঘাটা গ্রামের বিএলও -র কাজ করেন এবং মোহিতুদ্দিন গোবিন্দপুরে বিএলও হিসাবে কাজ সামলান। দু’জনেই কার্যত অভিযোগ অনেকাংশে মেনে নিয়েছেন। বিপ্লব যেমন বলেন, ‘‘টাকা নিয়ে কার্ড সংশোধন করেছি কিন্তু এনআরসি নিয়ে কোনও বিভ্রান্তি ছড়াইনি।’’ আবার মোহিতুদ্দিনের দাবি, ‘‘ভোটের কার্ড, রেশন কার্ড সংশোধনের জন্য অনেক নথির প্রতিলিপি লাগছে। যেহেতু জেরক্স মেশিন আমার বাড়িতেই আছে তাই আমি করে দিচ্ছি আর তার টাকাটুকু নিয়েছি।’’

Advertisement

বুধবার সন্ধ্যায় পাথরঘাটা গ্রামের রাস্তার মোড়ে এই দু’জনকে আটকে এক দফা বিক্ষোভ দেখান সাধারণ মানুষ। তার পর বৃহস্পতিবার সকালে বিপ্লবের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। দু’জনের বিরুদ্ধেই স্লোগান দেওয়া হয়।

ভিক্ষা করে খান স্থানীয় আসাতুন বিবি। তাঁরও অভিযোগ, ‘‘কার্ডের কাজ করতে ওরা আমার থেকেও ৬০ টাকা চায়। আমার কাছে ৫০ টাকা ছিল, সেটা দিয়ে দিই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন