Anganwadi

অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ওজনে কম, বিক্ষোভ

শান্তিপুর ব্লকের নবলা পঞ্চায়েতের পূর্ব পরেশনাথপুর এবং বেলগড়িয়া ১ পঞ্চায়েতের বয়রা এলাকায় এ দিন বিক্ষোভ হয়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২০ ০২:৫৬
Share:

নিজস্ব চিত্র

অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে চাল, ডাল ও আলু কম দেওয়ার অভিযোগ তুলে জেলার একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা। চাপড়ায় এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। কোতোয়ালি থানার ঝিটকিপোতা, ধুবুলিয়া থানার বাহাদুরপুর, শান্তিপুর ব্লকের একাধিক এলাকা এবং তেহট্টের একটি গ্রামেও বিক্ষোভ হয়েছে। করিমপুরের ৩১১টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মধ্যেও বেশ কয়েকটিতে চাল, ডাল ও আলু কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

শান্তিপুর ব্লকের নবলা পঞ্চায়েতের পূর্ব পরেশনাথপুর এবং বেলগড়িয়া ১ পঞ্চায়েতের বয়রা এলাকায় এ দিন বিক্ষোভ হয়। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী মাথা পিছু দু’কেজি করে চাল ও আলু এবং ৩০০ গ্রাম করে ডাল দেওয়ার কথা। শান্তিপুর এবং গ্রামাঞ্চল মিলিয়ে ৪৬১টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে এ দিন খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। বেলগড়িয়া ১ পঞ্চায়েতের বয়রায় গ্রামবাসীরা অভিযোগ অভিযোগ করেন, যতটা সামগ্রী পাওয়ার কথা, তার থেকে অনেকটাই কম দেওয়া হচ্ছে। সন্দেহ হওয়ায় অঙ্গনওয়াড়ি থেকে সামগ্রী নিয়ে তা তাঁরা অন্যত্র ওজন করিয়ে দেখেছেন। এর পরেই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের কর্মীরাও সেখানে যান। তবে তাঁদের দাবি, প্রত্যেককে নির্দিষ্ট পরিমান সামগ্রীই দেওয়া হয়েছে। কম দেওয়া হয়নি। অন্যত্র যে যন্ত্রে ওজন করা হয়েছে, তাতে সমস্যা থাকতে পারে।

নবলার পূর্ব পরেশনাথপুরেও একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে একই অভিযোগ ওঠে। সেখানে অনেক মহিলার অভিযোগ, মাথা পিছু ৩০০ গ্রাম ডালের জায়গায় ২০০ গ্রাম মতো দেওয়া হয়েছে। অন্য সামগ্রীও অনেকটাই কম। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগও উঠেছে। পরে সেখানে যান স্থানীয় নবলা পঞ্চায়েতের সদস্য নিখিল বিশ্বাস। তিনি বলেন, “একটা সমস্যা হয়েছিল। গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলেছি। সমস্যা মিটিয়ে নেওয়া হবে।”

Advertisement

তেহট্টের হাটখোলা গ্রামে ৬৮ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেও কম সামগ্রী দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তার জেরে গ্রামবাসী ওই কেন্দ্রের কর্মীদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। ঘণ্টাখানেক পরে বাকি চাল, ডাল, আলু দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলে বিক্ষোভ থামে। হাটখোলা গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জয় ঘোষ, বাপি হালদারদের দাবি, প্যাকেট করে খাদ্যসামগ্রী বিলি করা হচ্ছে দেখেই তাঁদের সন্দেহ হয়। এর পরে মেপে দেখা য়ায়, ওজনে কম আছে। কাউকে একশো গ্রাম, কাউকে আবার সাড়ে চারশো গ্রাম চাল কম দেওয়া হয়েছে। অঞ্জলি সর্দার নামে এক জনের অভিযোগ, ডালও কম দেওয়া হয়েছে। মীরা বিশ্বাস নামে ওই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর বিরুদ্ধে আগে থেকেই প্রসূতি ও শিশুদের ঠিক মতো না-খাওয়ানোর অভিযোগ ছিল গ্রামবাসীর। ওই কর্মী অবশ্য দাবি করেন, “দাঁড়িপাল্লায় মেপে আমি সব বিলি করেছি।“ তেহট্ট ১ ব্লকের সিডিপিও অনুপম নাথ বলেন, “আমি গিয়ে ওই কর্মীর সঙ্গে কথা বলেছি। যাঁরা চাল-ডাল কম পেয়েছিলেন বলে অভিযোগ, তাঁদের তা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে।“

চাপড়ায় ব্লক অফিসের কাছেই একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে সমস্ত উপকরণ পাঁচশো গ্রাম করে কম দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সব মেপে গ্রামবাসী অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ফিরে এসে বিক্ষোভ দেখান। খবর পেয়ে চাপড়ার বিডিও অনিমেষকান্তি মান্না গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। কোতোয়ালি থানার ঝিটকেপোতাতেও খাদ্যসামগ্রী কম দেওয়ার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশ গিয়ে ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মীকে আটক করে নিয়ে আসে। সমস্ত ক্ষেত্রেই অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেোয়া হবে বলে প্রশাসনের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন