বিশ্ব মাটি দিবস

মাটির নাড়ি দেখে হেল্‌থ কার্ড চাষিদের

উপরন্তু লাগামছাড়া রাসায়নিক সার, কীটনাশকের ব্যবহারে চাষের জমির বেহাল দশা। চাষির এ সমস্যার সমাধান এক রকম মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছিল কৃষিবিজ্ঞানীদের। দিশেহারা চাষিকে সাহায্য করতে এবং জমির স্বাস্থ্যরক্ষায় এল ‘সয়েল হেল্‌থ কার্ড’। জমির রোগ কতটা গভীর, কেমন করে সারবে সেই রোগ, এই সব কিছুরই উত্তর মিলবে ওই কার্ডে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:০৬
Share:

খেতে পা রাখলেই শুনতে হচ্ছে কথাটা— ‘‘ফসল ভাল হচ্ছে না দাদা। পোকা লেগে যাচ্ছে... সেই সঙ্গে নানা রোগভোগ লেগেই রয়েছে।’’

Advertisement

উপরন্তু লাগামছাড়া রাসায়নিক সার, কীটনাশকের ব্যবহারে চাষের জমির বেহাল দশা। চাষির এ সমস্যার সমাধান এক রকম মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছিল কৃষিবিজ্ঞানীদের। দিশেহারা চাষিকে সাহায্য করতে এবং জমির স্বাস্থ্যরক্ষায় এল ‘সয়েল হেল্‌থ কার্ড’। জমির রোগ কতটা গভীর, কেমন করে সারবে সেই রোগ, এই সব কিছুরই উত্তর মিলবে ওই কার্ডে।

সোমবার, ৫ ডিসেম্বর বিশ্ব মাটি দিবসে রাজ্যের প্রতি ব্লকে কিছু চাষির হাতে সয়েল হেল্‌থ কার্ড তুলে দিচ্ছে কৃষি দফতর। এ দিন বিকেলে যেমন কৃষ্ণনগরে উদ্যানপালন বিভাগের অফিসের সভাগৃহে বিশ্ব মৃত্তিকা দিবসের আয়োজন করা হয়েছিল। এ দিন সেখানে নদিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি বাণীকুমার রায় থেকে শুরু করে জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত, জেলা পরিষদের কৃষিদফতরের কর্মাধ্যক্ষ কমলেশ বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন। এ দিন সেখানে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা একশো জন কৃষকের হাতে ‘সয়েল হেল্‌থ কার্ড’ তুলে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

মুর্শিদাবাদের বড়ঞা, কান্দি, খড়গ্রাম, ভরতপুর ১ ও ২ নম্বর মোট পাঁচটি ব্লকে আবার হেল্থ কার্ড এসে পৌঁছয়নি। কিন্তু আলাদা করে শিবির হয়েছে। প্রত্যেক ব্লক এলাকার শতাধিক চাষিদের সঙ্গে নিয়ে ওই শিবির করা হয়।

আসলে কৃত্রিম রাসায়নিক সারের অত্যধিক ব্যবহার ও স্বাভাবিক পুষ্টির অভাবে ক্রমশই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে জমির স্বাস্থ্য। কমছে উর্বরতা। কমছে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও। এই পরিস্থিতিতে চাষের জমির স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করতে রাজ্যের কৃষিদফতর চালু করেছে সয়েল হেল্‌থ কার্ড। রাজ্যের প্রতিটি মৌজা ধরে ধরে চাষির কাছ থেকে জমির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে সেই নমুনা পরীক্ষা করে তৈরি করা হচ্ছে এই হেলথ কার্ড।

কী থাকছে ওই কার্ডে? উত্তরে বর্ধমান জেলার সহকারি কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ জানান, যে ভাবে মানুষের রোগ হলে আগে নানা রকম পরীক্ষা করে তবেই চিকিৎসা করেন ডাক্তারবাবুরা। ঠিক তেমনই আগে পরীক্ষাগারে জমির মাটির হাল-হকিকত জেনে নিয়ে, কৃষি বিজ্ঞানীদের সেই জমির জন্য দেওয়া ‘প্রেসক্রিপশন’ মোতাবেক চাষাবাদ করতে পারবেন চাষিরা। আর জমির নমুনা পরীক্ষা থেকে শুরু করে হেল্‌থ কার্ড হাতে পাওয়া পর্যন্ত সবটাই রাজ্য কৃষিদফতর বিনামূল্যে করে দিচ্ছেন।

রাজ্যের প্রত্যেক চাষিই এই হেল্‌থ কার্ড পাবেন। জমির নমুনা সংগ্রহের সময় জেনে চাষির কাছ থেকে জেনে নেওয়া হচ্ছে তিনি জমিতে কোন কোন মরশুমে কী কী চাষ করেন। জমির নমুনা পরীক্ষার ভিত্তিতে তৈরি কার্ডে সেই অনুযায়ী সমস্যার প্রতিবিধান দেওয়া থাকছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন