ভোটে খুন-জখম হবেই ধরে নিয়ে তৈরি হচ্ছে ডোমকল মহকুমা হাসপাতাল

গত বছর বিধানসভা নির্বাচন চলাকালীন লাশ পড়েছিল গোটা রাজ্যে এক এই ডোমকলেই। কাজেই এখন সাজো-সাজো রব ডোমকল মহকুমা হাসপাতালে।

Advertisement

সুজাউদ্দিন

ডোমকল শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৭ ১০:০০
Share:

প্রচারে: ডোমকলে ফিরহাদ হাকিম ও সুলতান আহমেদ। নিজস্ব চিত্র

ভোট যেন যুদ্ধ!

Advertisement

গত বছর বিধানসভা নির্বাচন চলাকালীন লাশ পড়েছিল গোটা রাজ্যে এক এই ডোমকলেই। কাজেই এখন সাজো-সাজো রব ডোমকল মহকুমা হাসপাতালে।

১৪ মে ডোমকলে পুরভোট। ইতিমধ্যে ডাক্তার থেকে স্বাস্থ্যকর্মীর ছুটি বাতিল। ওষুধ থেকে ব্যান্ডেজ, সূচ-সুতো মজুত। ছুরিকাঁচিতেও শান দিয়ে রাখছেন শল্যচিকিৎসকেরা। এমনকী বেশি ভিড় হলে কী ভাবে মোকাবিলা করা হবে, তার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে নিরাপত্তারক্ষীদের। ইতিমধ্যেই জরুরি বিভাগে এক জনের বদলে বসছেন একাধিক চিকিৎসক।

Advertisement

হাসপাতালের সুপার প্রবীর মান্ডি বলেন, ‘‘সব চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর ছুটি বাতিল হয়েছে। জরুরি বিভাগে অতিরিক্ত চিকিৎসক বসছেন। ওষুধ ও সরঞ্জাম পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত থাকছে। যে কোনও রকম পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে আমরা প্রস্তত।’’ সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের চালকদেরও বলা হয়েছে, গাড়ি সার্ভিসিং করে টায়ার-টিউব চাঙ্গা রাখতে।

আসলে পুলিশ-প্রশাসন যতই আশ্বস্ত করুক, অনেকেরই আশঙ্কা, কার্যত বারুদের উপরে বসে আছে ডোমকল। তা যে অমূলক নয়, তার প্রমাণ মিলছে সন্ধ্যা নামলেই। নিয়ম করে হচ্ছে বোমা পরীক্ষা। বর্তনাবাদে বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণও ঘটেছে। বিশেষ করে ডোমকল দখলে তৃণমূল এতটাই মরিয়া যে বড়সড় গোলমাল হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই। রোজই নামজাদা নেতামন্ত্রীদের প্রচারে আনা হচ্ছে। অনুব্রতর পরে মঙ্গলবার প্রচারে আনা হয় তৃণমূলের অন্যতম প্রধান নেতা তথা পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিমকে। সঙ্গে ছিলেন আর নেতা সুলতান আহমেদ। অন্য দিকে অধীর চৌধুরী আর আনিসুর রহমান জোটকে চাঙ্গা রাখার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

ফলে, হাওয়া ক্রমশ তাতছে।

এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘অন্য হাসপাতালে দেখি, পুজোর সময়ে রোস্টার বদল হয়। এখানে দেখছি, ভোট বদলাচ্ছে। মনে হচ্ছে যুদ্ধের ময়দানে চলে এসেছি!’’ বছর কয়েক আগে এই ডোমকলে ভোটে ১৭ জন খুন হয়েছিলেন। জখমের সংখ্যা ছিল হিসেবের বাইরে।

সতর্ক হয়ে গিয়েছেন ওষুধ সংস্থার প্রতিনিধিরাও। মঙ্গলবার হাসপাতাল চত্বরে একটি চায়ের দোকানে কাপে চুমুক দিয়ে এ রকম চার জন ঠিকই করে ফেললেন, ১২ থেকে ১৫ মে আর ডোমকলে পা রাখা ঠিক হবে না। জীবনের ঝুকি নিয়ে লাভ নেই। স্থানীয় বাসিন্দা মফিকুল ইসলামের কথায়, ‘‘ডোমকলে ভোট মানেই তো খুন-জখম। আতঙ্ক থাকা তাই স্বাভাবিক!’’

এত প্রস্তুতি যদি কাজে না লাগে, তবেই সত্যি স্বস্তি পাবে হাসপাতাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন