কৃষ্ণনগর উইমেন্স কলেজে টিএমসিপি নেত্রীর অভিযোগের জেরে সংগঠনের যে মুখ পুড়েছে এ দিন তা মেনে নিয়েছেন সংগঠনের রাজ্য স্তরের নেতা-নেত্রীরা। বৃহস্পতিবার, টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি জয়া দত্ত বলেন, ‘‘সমস্ত অভিযোগই আমরা খতিয়ে দেখছি। প্রশাসনের তদন্তে যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে তো ব্যবস্থা নেবই তবে অভিযোগ মিথ্যা হলেও আমরা ছেড়ে কথা বলব না।’’
কিন্তু সত্যি-মিথ্যা যাই হোক এমন অভিযোগ উঠল কেন? টিএমসিপি সূত্রেই জানা গিয়েছে, ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি সংক্রান্ত বিষয়ে মোটা টাকার লেনদেনই এর জন্য দায়ী। দু’ পক্ষেরই দাবি, ওই আর্থিক লেনদেন বাধা দিতেই অন্য পক্ষ তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্য়া মামলা করে ‘ফাঁসানোর’ চেষ্টা করছে। তবে, ওই ছাত্রীদের আনা অভিযোগের ভিত্তিতে এখনও পর্যন্ত পুলিশ কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি। উইমেন্স কলেজের সামনে অবশ্য পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে।
এ দিন, অভিযুক্তদের পক্ষে কৃষ্ণনগরের বিভিন্ন করেলেজের বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী জেলাশাসকের কাছে ডেপুটেশন জমা দেয়। তাদের দাবি, সাবির খাতুনরা যে অভিযোগ দায়ের করেছে তা সম্পুর্ণ ভিত্তিহীন। তাদের পাল্টা দাবি, সাবিরা খাতুনরা বহিরাগত কিছু সমাজবিরোধীদের নিয়ে এসে ভর্তি সংক্রান্ত বিষয়ে দুর্নীতি করতে চাইছে। তাতে বাঁধা দেওয়ার জন্যই নাকি এই ভাবে ছাত্রদের নামে মিথ্যা মামলা করা হচ্ছে। শুধু তাই নয় ডেপুটেশনে সমাজবিরোধীদের তালিকায় যাদের নাম আছে তাদের অন্যতম হল টিএমসিপিরই কৃষ্ণনগর শহর সভাপতি সুমিত ঘোষ। ডেপুটেশনে অংশ নেওয়া ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, ‘‘এই সুমিত ঘোষরাই তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে।’’ অন্যতম অভিযুক্ত সম্রাট পালকে ও শুভ ঘোষদেরকেও দেখা গিয়েছে এই ডেপুটেশনে।
কৃষ্ণনগর সরকারি কলেজের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক সম্রাট পাল বলেন,‘‘আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। তারই প্রতিবাদে আজ কৃষ্ণনগরের সমস্ত কলেজের ছাত্রছাত্রীরা এসেছেন জেলা শাসককে ডেপুটেশন দিতে।’’ জেলা প্রশাসনিক ভবনের চত্বরে দাঁড়িয়ে কার্যত হুমকির সুরেই তিনি বলেন,‘‘ আমাদের উপরে যদি এ ভাবে মিথ্যা মামলা করে পুলিশ দিয়ে হয়রানি চলতে থাকে তাহলে আগামী দিনে আমরাও অনেক বড় আন্দোলনে নামব।’’ এসএফআইয়ের জেলা সভাপতি রাজীব দাস বলেন,‘‘এরপরও মুখ্যমন্ত্রী কি করে বলবেন যে কলেজে ছাত্রভর্তি স্বচ্ছ ভাবে হয়। লক্ষ লক্ষ টাকা তুলছে টিএমসিপির ছেলে-মেয়েরা।’’