টাকা বরাদ্দ হয়েছে গত ডিসেম্বরে। বছর পেরিয়ে ফের ডিসেম্বর এলেও এখনও লালগোলার ময়ায় ভাঙন রোধের কাজ শুরুই হল না।
বরাদ্দ টাকার পড়ে থাকার কথা মানছেন রঘুনাথগঞ্জের ভাঙন রোধ দফতরের ইঞ্জিনিয়র জয়ন্ত দাস। তিনি জানান, ২১ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু ময়ায় যে ৭৫০ মিটার স্পার বাঁধানোর কথা রয়েছে গত বর্ষার পর থেকে নদীর পলি জমে ভরাট হয়ে গিয়েছে। রাজ্য সেচ দফতর এই অবস্থায় খড়গপুর আইআইটি ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই বিশেষজ্ঞকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। রাজ্যের সেচ দফতরের কর্তাদের সঙ্গে ১০ ডিসেম্বর বৈঠক হয়। তাঁরা জানান, স্পার বাঁধানোর প্রয়োজন নেই।
এ দিকে, বরাদ্দ টাকা পড়ে ভরা শীতেও কাজ শুরু না হওয়ায় পঞ্চায়েত কর্তা থেকে স্থানীয় বাসিন্দা সকলেরই আগামী বর্ষায় ফের ভাঙনের আশঙ্কা করছেন। আবার কাজ না হওয়ার পিছনে ষড়যন্ত্রও দেখছেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের কেউ কেউ।
তৃণমূলের লালগোলা ব্লকের সভাপতি শুভরঞ্জন রায়ের অভিযোগ, “বর্ষাকালে ভাঙন রোধের কাজে পুকুর চুরির সুবিধা হয়। সে জন্যই কাজটি বিলম্বিত হচ্ছে।’’ স্থানীয় বিধায়ক কংগ্রেসের আখরুজ্জামানের অভিযোগ, “টেন্ডার হয়ে, ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়েছে। তবু সে কাজ বিলম্বের পিছনে বর্ষায় পুকুর চুরিই যে লক্ষ্য এটা তো পরিষ্কার।”
২০১২ সাল থেকে পদ্মার ভাঙন চলছে ময়ায়। গত চার বছরে একশোর’রও বেশি বাড়ি তলিয়ে গিয়েছে। খবর পেয়ে ভাঙন রোধে পাথরের স্পার বাঁধানোর জন্য ২১ কোটি টাকা বরাদ্দ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
রঘুনাথগঞ্জে ভাঙন প্রতিরোধ দফতরে বরাদ্দের অর্থও চলে আসে। কিন্তু গত এক বছরেও ময়ায় ভাঙন রোধের সে কাজ শুরু হয়নি এ পর্যন্ত।
ময়ার গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান দীপিকা সাহা বলেন, “ভাঙনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বার বার ভাঙনের কাজ শুরুর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তাতে কেউ কান দেয়নি।’’ পাশেই পণ্ডিতপুরে মাস দুয়েক আগে ভাঙন শুরু হয়। তাই সকলেই খুব আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি।”
পদ্মা পাড়েই বাড়ি শেফালি মুনিয়ার। ১০ মিটার দূরে নদী এখন শান্ত। কিন্তু শেফালি দেবীর আশঙ্কা, “সামনে বর্ষা। এখনই কাজ শুরু না হলে যে কোনও মুহূর্তে ভাঙন শুরু হতে পারে। জানি না কপালে কী আছে।”