বৃদ্ধার গলায় দা, গ্রেফতার প্রৌঢ়

প্রতিবেশী এক মহিলার সঙ্গে ‘সম্পর্কে’ জড়িয়ে পড়েছিল প্রৌঢ়। সে কথা জানতে পেড়ে যান পড়শি বৃদ্ধা। সেই রাগেই রাতের অন্ধকারে বৃদ্ধার বাড়িতে হানা দিল সে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিপুর শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৬ ০০:৩৩
Share:

প্রতিবেশী এক মহিলার সঙ্গে ‘সম্পর্কে’ জড়িয়ে পড়েছিল প্রৌঢ়। সে কথা জানতে পেড়ে যান পড়শি বৃদ্ধা। সেই রাগেই রাতের অন্ধকারে বৃদ্ধার বাড়িতে হানা দিল সে। শুধু তা-ই নয়, একা পেয়ে বৃদ্ধাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগও উঠল বছর পঞ্চাশের ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

Advertisement

মঙ্গলবার ফুলিয়ার ঘটনা। আরও অভিযোগ, বৃদ্ধা বাধা দিতে গেলে তাঁর গলায় দা দিয়ে আঘাত করে আততায়ী। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় বৃদ্ধাকে স্থানীয় ফুলিয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র নিয়ে যাওয়া হলে গলার ক্ষত স্থানে চারটি সেলাই পড়ে। অভিযোগ পাওয়ার পরই শান্তিপুর থানার পুলিশ খামারপাড়ার বাসিন্দা গোবিন্দ সরকারকে গ্রেফতার করেছে।

নদিয়ায় বৃদ্ধার উপরে এই ধরনের অত্যাচারের ঘটনা প্রথম নয়। আগেও এই ফুলিয়াতেই একই ভাবে ঘরের ভিতরে ঢুকে এক বৃদ্ধাকে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছিল। আবার রানাঘাটে ডাকাতি করতে এসে এক বৃদ্ধা সন্ন্যাসিনীকে ধর্ষণ করেছিল দুষ্কৃতীরা। সে বার এই ঘটনায় হইচই পড়ে গিয়েছিল গোটা বিশ্বে।

Advertisement

ঠিক কী ঘটেছিল গত কাল রাতে?

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর সাতাত্তরের ওই বৃদ্ধার বাড়ি ফুলিয়ার সুবজপল্লী এলাকায়। বেশ কয়েক বছর আগে স্বামী মারা গিয়েছেন। স্বামীর ভিটেতে একাই থাকতেন তিনি। দু’-তিনটে বাড়ি পরে অন্য একটি বাড়িতে থাকেন দুই ছেলে। সারা দিন সেখানে কাটিয়ে রাতের খাওয়াদাওয়া সেরে রোজকার মতো মঙ্গলবারও রাত ন’টা নাগাদ পুরনো বাড়িতে শুতে যান বৃদ্ধা। খেজুর পাতার চাটাই বুনতে বুনতে এক সময় মশারির ভিতরে ঘুমিয়েও পড়েন।

রাত দু’টো নাগাদ আচমকাই ঘুমটা ভেঙে যায়। অনুভব করেন, গলার উপরে আঙুলের ফাঁস। বৃদ্ধা বলেন, “দমবন্ধ হয়ে আসছিল। বুকের উপরে কীসের যেন একটা চাপ। চোখ মেলতেই দেখি, বুকের উপরে বসে আছে গোবিন্দ। গা দিয়ে মদের গন্ধ বেরোচ্ছে। গলায় ছুরি ধরে বলল আমাকে ধর্ষণ করবে। বাধা দিলে নাকি ছেলেদের খুন করে দেবে।” তিনি বলেন, “তার
পরও আমি বাধা দিলে আমার গলায় দা দিয়ে টেনে দেয়। কোনও রকমে মুখ সরিয়ে চেঁচামেচি শুরু করি। পালিয়ে যায় গোবিন্দ।”

ওই অবস্থাতেই বড় ছেলের বাড়িতে ছুটে যান বৃদ্ধা। খুলে বলেন সবটা। রাতেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। তাঁর ছেলের কথায়, “আমাদের পুরনো বাড়িতে কালী মন্দির আছে। তা ছাড়া বাবার ভিটে। ও সব ছেড়ে মা কোথাও থাকতে চায় না। পুরনো আমলের ঘর। দরজা-জানলা খুবই নড়বড়ে। ওই জানলার ছিটকানি ভেঙেই ভিতরে ঢুকেছিল গোবিন্দ।”

বুধবার শান্তিপুর থানায় এসে বৃদ্ধা নিজে অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু এ ভাবে এক বৃদ্ধার উপরে হামলা করা হল কেন? প্রাথমিক তদম্তের পরে পুলিশের অনুমান, ওই বৃদ্ধার পাশের বাড়ির এক মহিলার সঙ্গে ‘সম্পর্ক’ ছিল গোবিন্দর। সে কথা জানতে পেরে যান বৃদ্ধা। এলাকার কয়েক জনকে সে সব জানিয়েও দেন। সেই রাগেই হয়তো হামলা। রানাঘাটের এসডিপিও ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন