সন্ধ্যে হয়ে এসেছে। বছরের শেষ দিন তো, বেথুয়াডহরির জঙ্গলের সামনে তখনও বহু গাড়ি-মানুষ। সবাই পিকনিক করতে এসেছেন। আমরা ১৮ জন বন্ধুও গিয়েছিলাম দিনভর সবাই খুব হইচই করলাম। কেউ কেউ মদও খেল। চালককে বার বার বলেছিলাম, ‘ভাত-মাংস খাও, মদটা খেও না বাবা’, তা ও শুনল কোথায়! গাড়ি ছাড়ল। সবাইকে ডেকে ডেকে তুললাম গাড়িতে। তখনও কি জানতাম, যাদের নাম ধরে ডাকছি, তাদের আর কোনও দিন ডাকব না! গাড়ির বাঁ দিকে আমরা বসলাম। ডান দিকে বিজয়-নিমাইরা। কিন্তু গাড়িতে উঠেই বুঝলাম, ভুল হয়ে গেছে। চালক ছেলেটার চোখ টানছিল। বললাম ‘চোখে জল দাও’। উপেক্ষার হাসি দেখলাম ওর মুখে। উল্টে স্পিড বাড়িয়ে দিল। অন্ধকার হয়ে এসেছে। হঠাৎ দেখলাম উল্টো দিকে ট্রাকের আলো। বার বার হর্ন দিচ্ছিল ট্রাকটা। কয়েক সেকেন্ড হবে। চোখের সামনে দেখলাম উল্টো দিক থেকে হু হু করে ছুটে আসা লরিটা আমাদের গাড়ির দু’হাতের মধ্যে চলে এসেছে। ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলেছিলাম। তার পরে আর কিছু মনে নেই। জ্ঞান ফিরল গ্রামীণ হাসপাতালে। বুঝলাম, আমার পাশেই পড়ে আছে, নিমাইয়ের দেহ।