লঙ্কেশ্বর ঘোষেরা নয়, গুলি চালিয়েছিল পুলিশই, পুলিশের গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে অপর্ণা বাগের।
ঘুঘড়াগাছিতে অপর্ণা বাগ খুনের মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশে দ্বিতীয় দফা সওয়াল-জবাবে এমনটাই দাবি করলেন আসামি পক্ষের আইনজীবী রণেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা (তৃতীয়) আদালতের বিচাকর মধুমিতা রায়ের এজলাসে তিনি বলেন, “সে দিন নাইন এমএম কার্তুজ ব্যবহার করা হয়েছিল। এই কার্তুজ পুলিশ ও সেনা ছাড়া কেউ ব্যবহার করতে পারে না। মামলার দ্বিতীয় তদন্তকারী অফিসার এবং কৃষ্ণগঞ্জের সিআই সাক্ষ্যে তা বলেও গিয়েছেন।”
পুলিশ মিথ্যা মামলা সাজিয়েছে বলে দাবি করে আইনজীবী বলেন, ‘‘নিহতের স্বামী নিজে সাক্ষ্যে বলে গিয়েছেন যে পুলিশের কথা শুনে এফআইআর করা হয়েছিল। নাম পুলিশই বলে দিয়েছে।” তাঁর দাবি, লঙ্কেশ্বর ও পলাশ ঘোষকে গ্রেফতার করার পরে পুলিশ বলেছিল, তাঁরাই বাকি অভিযুক্তদের শনাক্ত করবেন এবং অস্ত্র উদ্ধার করবেন। কিন্তু অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টাই করেনি পুলিশ, কারণ অস্ত্র পুলিশের কাছেই ছিল।
২০১৪-র ২৩ নভেম্বর কৃষ্ণগঞ্জের ঘুঘড়াগাছি গ্রামে লঙ্কা-বাহিনীর জমি দখলের সময়ে গুলিতে মৃত্যু হয় অপর্ণা বাগের। ২০১৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি কৃষ্ণনগর আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (তৃতীয়) পার্থসারথী মুখোপাধ্যায় ধৃত ১১ জনেরই ফাঁসির সাজা ঘোষণা করেন। কিন্তু ফৌজদারি কার্যবিধির ৩১৩ ধারা অনুযায়ী আসামির বক্তব্য শোনা থেকে শুরু করে পুনরায় রায় দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
লঙ্কাদের কৌঁসুলির দাবি, জমি দখল করিয়ে দেওয়ার জন্য পুলিশ গুলি চালিয়েছিল। মৃতার দুই মেয়ে সাক্ষ্যে বলেছিল যে তারা বাবা-মায়ের সঙ্গে মাঠে গিয়েছিল। কিন্তু মৃতার স্বামী জানিয়েছেন, তিনি সেই সময়ে বাড়িতে ছিলেন না। ভ্যান নিয়ে বেড়িয়েছিলেন। মাঝপথে খবর পেয়ে এসে দেখেন, অপর্ণার মৃতদেহ পড়ে আছে। তার মানে দুই মেয়ে মিথ্যে বলেছে। তারা বাড়িতেই ছিল না, মামার বাড়ি গিয়েছিল।
আইনজীবী আরও বলেন, ঘটনার সময়ে দুই মেয়ের উল্লেখই করেননি তদন্তকারী অফিসার। চার্জশিটে নাম না থাকা সত্ত্বেও বিচারক মামলার মাঝপথে ‘গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী’ হিসেবে তাদের আনিয়েছিলেন। অথচ দু’জন তদন্তকারী অফিসার তাদের গুরুত্বপূর্ণ বলে মনেই করেননি। বাবা দেবানন্দ বাগও তাদের কথা উল্লেখ করেননি। রণেন্দ্রনাথবাবুর মতে, “বিচারক প্রথম থেকেই ঠিক করে রেখেছিলেন যে তিনি আসামিদের শাস্তি দেবেন। তাই ফৌজদারি কার্যবিধির ৩১৩ ধারা মোতাবেক অভিযুক্তদের কথা শোনেননি তিনি। শনাক্তকরণের জন্য টিআই প্যারেড করারও অনুমতি দেননি। পরের শুনানি ২৩ মে।