কৃষি সচিবের চিঠি, থমকে গেল নিয়োগ

বিতর্কের সূত্রপাত দু’টি পদ নিয়ে। ২০১৬ সালে কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে দুই জন প্রাণিসম্পদ বিশেষজ্ঞ নিয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। কিন্তু নানা জটিলতায় প্রক্রিয়া বাতিল হয়ে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৬:১০
Share:

বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বিসিকেভি)-র অধীন তিনটি কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের বিভিন্ন পদে নিয়োগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজ্যের কৃষি দফতরের মধ্যে বিরোধ বেধেছে।

Advertisement

গত ১ ডিসেম্বর থেকে ২৭টি পদে নিয়োগের জন্য ইন্টারভিউ হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই, ৩০ নভেম্বর কৃষি দফতরের সচিব এস চক্রবর্তী চিঠি দিয়ে এ নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন। তড়িঘড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে জানানো হয়, নিয়োগ প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত করা হচ্ছে।

বিতর্কের সূত্রপাত দু’টি পদ নিয়ে। ২০১৬ সালে কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে দুই জন প্রাণিসম্পদ বিশেষজ্ঞ নিয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। কিন্তু নানা জটিলতায় প্রক্রিয়া বাতিল হয়ে যায়। মাসখানেক আগে ওই দুটি ছাড়াও আরও নানা পদে গয়েশপুর, হাওড়া এবং পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারের কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল। আগের প্রাণিসম্পদের পদ দু’টি মৃত্তিকা বিজ্ঞানের জন্য বরাদ্দ করা হয়।

Advertisement

প্রসঙ্গত, কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে নিয়োগ করার ক্ষমতা বিশ্ববিদ্যালয়ের থাকলেও, বেতন দেয় ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব এগ্রিকালচারাল রিসার্চ (আইসিএআর)। গত ২৭ সেপ্টেম্বর আইসিএআর-এর প্রধান বিজ্ঞানী ফিরোজ এইচ রহমান উপাচার্য তরণীধর পাত্রকে চিঠি দিয়ে জানান, ওই দুই পদে প্রাণিসম্পদ বিশেষজ্ঞই নিয়োগ করতে হবে। কিন্তু তা অগ্রাহ্য করে বিশ্ববিদ্যালয় মৃত্তিকা বিজ্ঞানের বিশেষজ্ঞ নিয়োগের ব্যাপারেই অনড় থাকে বলে অভিযোগ। ইন্টারভিউয়ের চিঠিও পাঠানো হয় কর্মপ্রার্থীদের।

টিএমসিপি এই পদ পরিবর্তনের বিরোধিতা করে রাজ্য কৃষি দফতরে চিঠি পাঠিয়েছিল। শুক্রবার কৃষি সচিব নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করার নির্দেশ জারি করেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, উপাচার্য আইসিএআর-এর নির্দেশ না মেনে নিয়োগ করছেন। কৃষি দফতর দিন পাঁচেক আগে ইন্টারভিউয়ের চিঠি বাতিল করতে বলেছিল। উপাচার্য তা করেননি। ফলে অদক্ষতার কারণে উপাচার্যকে সরানো হতে পারে।

বিসিকেভি-র এক পদস্থ কর্তার মতে, এই চিঠি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারকেই আসলে অগ্রাহ্য করছে। ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া বাতিল সঙ্গে এক আধিকারিক বলেন, ‘‘জলে থেকে তো কুমিরের সঙ্গে লড়াই করা যায় না। তাই শেষমেশ আমরা গোটা প্রক্রিয়াই বাতিল করে দিলাম।’’ উপাচার্য এই চিঠি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কিছু বিধি থাকে। বিষয়টি শুনেছি। তবে ভাল করে খোঁজ না নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’ কৃষি সচিবের চিঠি কি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারে হস্তক্ষেপ নয়? মন্ত্রী এই প্রশ্নের কোনও জবাব দেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন