মানসিক হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে অসমে বাড়ি ফিরে গেল কিশোর

আশা যখন ছেড়ে দিলাম, তখনই এল চিঠিটা

সেই মতো ওই কিশোরের পরিবারের লোকজনের উদ্দেশে চিঠি লেখা হয়। কিন্তু পিন নম্বর ভুল থাকার জন্য সেই চিঠি ফিরে আসে। মাস কয়েক আগে পিন নম্বর মনে করতে পেরে নিজেই ঠিকানা লিখে দেয় ওই কিশোর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:১৪
Share:

মিলন। বাবা-মায়ের সঙ্গে কিসান। —নিজস্ব চিত্র।

বাবার নাম শাহরুখ খান। নিজের নাম মিঠুন চক্রবর্তী।

Advertisement

উত্তর শুনে হাসবেন না রাগবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না নাকাশিপাড়া থানার কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার। যদিও কিছু সময়ের মধ্যে তিনি বুঝে যান চোর নয়, কিশোরটি আসলে মানসিক ভারসাম্যহীন।

তাই ‘মিঠুন’কে পাঠানো হয় মোসলেম মুন্সির ‘নির্মল হৃদয়ে।’ বছর সতেরোর মানসিক ভারসাম্যহীন কিশোরের একটি ঠাঁই মেলে। ছ’মাসের মাথায় উপযুক্ত চিকিৎসা পেয়ে সেই কিশোর জানাল, মিঠুন চক্রবর্তী নয়, তার নাম কিসান দাস। বাবার নাম নিধন দাস। বাড়ি অসমের অভয়পুরি-তে।

Advertisement

সেই মতো ওই কিশোরের পরিবারের লোকজনের উদ্দেশে চিঠি লেখা হয়। কিন্তু পিন নম্বর ভুল থাকার জন্য সেই চিঠি ফিরে আসে। মাস কয়েক আগে পিন নম্বর মনে করতে পেরে নিজেই ঠিকানা লিখে দেয় ওই কিশোর। চিঠি পেয়ে পরিবারের লোকজন জানান শীঘ্রই তাঁরা কিসানকে নিয়ে আসছেন।

সেই মত শুক্রবার বেলা দশটা নাগাদ নাকাশিপাড়ার গলায়দড়ি এলাকায় নির্মল হৃদয়ে চলে আসেন নিধন দাস ও তার স্ত্রী বকুল। সন্তানকে জড়িয়ে ধরে তাঁরা কাঁদলেন-হাসলেন। তারপর নিজের হাতে নতুন জামা পড়িয়ে তারা রওনা হন বাড়ির পথে।

গত বছর ৪ নভেম্বর রাতের টহল দিতে গিয়ে মুড়াগাছা বাজার এলাকায় ওই কিশোরকে ‘সন্দেহজনক’ ভাবে ঘুরতে দেখেছিলেন নাকাশিপাড়ার পুলিশকর্মীরা। তারা চোর সন্দেহে তাকে ধরে এনেছিল থানায়। মানসিক ভারসাম্যহীন বুঝতে পেরে তুলি দেয় মোসলেম মুন্সির হাতে। সেই থেকেই সে নির্মল হৃদয়ের আবাসিক।

ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফেরা পথে নিধন দাস বলেন, “ছেলে আমার পড়াশুনোয় খুব ভালো ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে যে কী হয়ে গেল বুঝতে পারলাম না। চিকিৎসা চলছিল। তারই মধ্যে এক ফাঁকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ল। আর ফিরল না। যখন তাকে খুঁজে পাওয়ার আশাই ছেড়ে দিয়েছি তখনই চিঠিটা হাতে পেলাম।”

মোসলেম বলছেন, “এদের সুস্থ করতে অনেক বেগ পেতে হয়। কিন্তু ভাল লাগে যখন তাদেরকে আমরা পরিবারের হাতে তুলে দিতে পারি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন