পকেট থেকে বেরিয়ে এল পিস্তল

নবদ্বীপ ষ্টেট জেনারেল হাসপাতালের নার্স, তাপসী চক্রবর্তীর এই উপস্থিত বুদ্ধিতেই ছিনতাইবাজ ছেলেটি গিয়েছিল পালিয়ে। আর নবদ্বীপের মন্দিরতলায় এলাকায় নিশ্চিৎ ডাকাতির সম্ভাবনা গিয়েছিল মাঠে মারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৮ ০১:১৩
Share:

ঘটনার পর বাড়িতে তাপসী। —নিজস্ব চিত্র

দরজা খুলতেই ছেলেটি বলেছিল, ‘মাসিমা টাকাটা রাখুন দেখি!’ তবে, পকেটে হাত ঢুকিয়ে টাকা নয়, বেরিয়ে এসেছিল চকচচকে একটা পিস্তল।

Advertisement

আর তা দেখেই, হাঁউ মাঁউ করে মহিলা আছড়ে পড়েছিলেন ছেলেটির উপরে। মাটিতে গড়াগড়ি খাওয়ার মুখে মহিলা ছুটেছিলেন রাস্তা ধরে, ‘‘দেখ রে, কে কোথায় আছিস....বাড়িতে ডাকাতি করতে এসেছে রে!’’

নবদ্বীপ ষ্টেট জেনারেল হাসপাতালের নার্স, তাপসী চক্রবর্তীর এই উপস্থিত বুদ্ধিতেই ছিনতাইবাজ ছেলেটি গিয়েছিল পালিয়ে। আর নবদ্বীপের মন্দিরতলায় এলাকায় নিশ্চিৎ ডাকাতির সম্ভাবনা গিয়েছিল মাঠে মারা।

Advertisement

শুক্রবার সন্ধ্যায় তুলসীতলায় সাঁঝের প্রদীপ দিয়ে ঘরের কাজ সারছিলেন তাপসী। বাড়ির লাগোয়া মন্দিরে সন্ধ্যারতি শুরু হয়েছে সবে। ঘড়িতে সোয়া মেরেকেটে সোয়া সাতটা। সদরে কড়া নড়েছিল ঠিক তখনই, “হারুদা আছেন নাকি বাড়িতে?” দোতলার জানালা দিয়ে মুখ বের করে তাপসী দেখেছিলেন, একটা দোহারা চেহারার ছেলে দাঁড়িয়ে। জানিয়েছিলেন “এ সময় তো উনি বাড়ি থাকেন না। সকালে আসুন, পাবেন।” সঙ্গে সঙ্গে নিচে থেকে কাতর অনুরোধ “তা হলে আপনি একবার নিচে আসুন। দাদা কিছু টাকা পেত, দিতে এসেছি।”

দ্বিধায় পড়ে যান তাপসী। স্বামী হারাধন চক্রবর্তী পেশায় ঠিকাদার হলেও, তাঁকে এ ভাবে তো কেউ কোনদিন টাকা দিতে আসেনি। ইতস্তত করতে করতে নিচে নেমে সদর দরজা খুলে দেন তিনি। তাঁর কথায়, “দেখি বছর চব্বিশ পঁচিশের সাধারন চেহারার একটি ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। পড়নে জিনস আর শার্ট। মুখটা খুব চেনা চেনা লাগছিল কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারছিলাম না কোথায় দেখেছি।”

কিসের টাকা দিতে এসেছেন জানতে চাওয়ার আগেই ছেলেটি পকেট থেকে টাকা বের করতে শুরু করে। কত টাকা? ছেলেটি জানায়, কুড়ি হাজার। কিন্তু সেকেন্ড কয়েক পরে টাকার বদলে হাতে উঠে আসে আস্ত একটা পিস্তল। তাপসী বলেন, ‘‘আমি দরজাটা বন্ধ করতে যাই ছেলেটি চেপে ধরে আমার হাত, তাতেই হুমড়ি খেয়ে পড়ি। ছেলেটিও পড়ে যায়। এ বার আমি উঠেই চিৎকার করে রাস্তা ধরে ছুটতে তাকি। পিছন ফিরে দেখি ছেলেটি পাল্টাচ্ছে।’’

নবদ্বীপ পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা, পরিচিত ঠিকাদার হারাধন চক্রবর্তীর বাড়িতে ভরসন্ধ্যায় এমন ঘটনায় এলাকায় ফের ভয়ের আবহ। শহরের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ চৈতন্য জন্মস্থান আশ্রমের পিছন দিকের সীমানা প্রাচীর লাগোয়া বাড়ি হারাধনবাবুর।

শুক্রবার সন্ধ্যায় যখন বাড়িতে কেউ ছিলনা তখন ঘটে ওই কান্ড। হারাধনবাবু বলেন, “নবদ্বীপে এমন ঘটনা এই প্রথম শুনছি। আমি দীর্ঘ দিন ঠিকাদারি করলেও কোন দিন কারুর সঙ্গে কোন বিরোধ নেই। ফলে কিছুই বুঝতে পারছি না। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন