কাজ শুরু হতেই ভাঁজ কপালে

ঘোষণা মতোই, শনিবারও উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গমুখী ভারী গাড়ি, সাগরদিঘি থেকে ফরাক্কা— পাঁচটি জায়গায় থামিয়ে রেখেছিল জেলা পুলিশ। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের কোল ঘেঁষে সেই দীর্ঘ সারিতে দিনভর অপেক্ষা করেছে অন্তত শ’তিনেক ট্রাক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ফরাক্কা শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৩৬
Share:

জোরকদমে: ফরাক্কায়। নিজস্ব চিত্র

যানজট ছিল, তা নিয়ে ট্রাকচালক থেকে বাসযাত্রী— কপালে ভাঁজও ছিল। তবে রাস্তা সংস্কারের গতি দেখে দ্বিতীয় দিনেও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কর্তারা। পূর্ত থেকে জেলা প্রশাসন, পুলিশ থেকে ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ, সকলেই বলছেন, ‘সবুর করুন মেওয়া ফলবে!’

Advertisement

ঘোষণা মতোই, শনিবারও উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গমুখী ভারী গাড়ি, সাগরদিঘি থেকে ফরাক্কা— পাঁচটি জায়গায় থামিয়ে রেখেছিল জেলা পুলিশ। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের কোল ঘেঁষে সেই দীর্ঘ সারিতে দিনভর অপেক্ষা করেছে অন্তত শ’তিনেক ট্রাক। তবে, ‘ফাঁকি’ চোখে পড়েছে এর মধ্যেও। বেশ কিছু পণ্যবাহী ট্রাক থেকে মাল নামিয়ে ছোট ভ্যান বা ম্যাটাডোরে চাপিয়ে সেতু পারাপারের চেষ্টা করেছেন বেশ কিছু ব্যূবসায়ী। জিগরি থেকে তারাপুর পর্যন্ত এই কাণ্ড চোখে পড়ায় পুলিশ তা বন্ধ করতে তৎপরও হয়েছে।

৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে মূলত পাথর বোঝাই লরিগুলিই যানজটের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এমনই প্রায় একশোটি লরি আটকে রাখা হয়েছে এ দিন। তাদের থমকে রাখা হয়েছে এনটিপিসির কাটানে, বারহারোয়া থেকে বেওয়া ৮০ নম্বর জাতীয় সড়ক বরাবর। চাঁদপুর-ঝাড়খন্ড রাজ্য সড়কেও থমকে রয়েছে ঝড়খন্ড থেকে পাথর বোঝাই লরিগুলি। বহু মাল বোঝাই লরিকে আটকে দেওয়া হয়েছে বীরভূম-মুর্শিদাবাদ সীমান্তের নাকপুর চেকপোস্টের কাছে। ফলে কোনোমতেই সে সব লরি দিনের বেলায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে উঠতে পারেনি। পুলিশের এক কর্তা জানাচ্ছেন, এর ফলে, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে যে তুমুল যানজটের আশঙ্কা করা গিয়েছিল, তা এড়ানো গিয়েছে। থমকে থাকা লরির সামনে চালক-খালাসিদের রেঁধে বেড়ে খাওয়ার তুমুল তোড়জোড়ও তাই দেখা গিয়েছে বিভিন্ন জায়গায়।

Advertisement

জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “মোরগ্রাম থেকে ফরাক্কা পর্যন্ত দিনরাত টহলদারি চালাচ্ছে পুলিশ। কারণ ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক যানজট মুক্ত রাখাটা একটা চ্যালেঞ্জ। বিভিন্ন জায়গায় পণ্যবাহী লরিগুলিকে আটকে দিতে পারায় ফরাক্কা ব্যারাজের উপর কাজ করতে কোনও সমস্যা হয়নি এ দিনও।”

ফরাক্কার বিধায়ক মইনুল হক ফরাক্কার সেতু সড়ক সংস্কারে ৬ মাস সময় লাগা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর অভিযোগ, “জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব দিলে সড়ক সংস্কার করা যেত খুব কম সময়ে। লরিগুলিকে এ ভাবে আটকে থাকতেও হত না।” একই সুরে অভিযোগ তৃণমূলের জেলা সম্পাদক সোমেন পান্ডেরও। তাঁর প্রশ্ন, “৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ফোর লেনের রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে পাঁচ বছর আগে। তা হলে তখন থেকেই ফরাক্কায় ফোর লেনের দ্বিতীয় সেতু তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয় নি কেন?’’

ফরাক্কা ব্যারাজের জেনারেল ম্যানেজার শৈবাল ঘোষ অবশ্য জানান, সংস্কারটা শুধু সড়কের হচ্ছে না। ফরাক্কা ব্যারাজের সড়কের নিচে মূল সেতুর বহু অংশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার সবটাই সারাতে হবে। ব্যারাজের মূল পিলারের প্লাস্টার খসে পড়ছে। এমনকি বদল করতে হবে বল বেয়ারিংও। ১০.৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে ব্যারাজ সংস্কারের জন্য। টেন্ডার হয়েছে ২০১৭ সালের এপ্রিলে। কিন্তু কাজে বহু বাধা বিঘ্ন আসায় সে কাজ শুরু করা যায় নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন