পতাকা পাল্টাতেই উধাও ইন্দিরা

গোলটা বেঁধেছে তার পরেই। তৃণমূলে যোগ দিয়ে ইন্দিরার জন্মদিন পালন ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। অথচ রেজোলিউসনে পরিষ্কার লেখা রয়েছে, পুরসভা যে সব মণিষীর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করবে, তাঁদের জন্ম এবং মৃত্যু দিন পুরসভার পক্ষ থেকে পালন করা হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বেলডাঙা শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৭ ০২:২৯
Share:

দল বদলাতেই উবে গেল শ্রদ্ধাও!

Advertisement

দু’বছর আগেও যখন তিনি কংগ্রেসে, ঘটা করে পালন করতেন ইন্দিরা গাঁধীর জন্মদিন। একরকম তাঁরই উদ্যোগে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে দিয়ে সেই মূর্তি উদ্বোধন করানো হয়েছিল। কিন্তু তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে বেলডাঙা পুরসভার পুরপ্রধান হয়ে গিয়েছেন ভরত ঝাওর।

গোলটা বেঁধেছে তার পরেই। তৃণমূলে যোগ দিয়ে ইন্দিরার জন্মদিন পালন ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। অথচ রেজোলিউসনে পরিষ্কার লেখা রয়েছে, পুরসভা যে সব মণিষীর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করবে, তাঁদের জন্ম এবং মৃত্যু দিন পুরসভার পক্ষ থেকে পালন করা হবে। অভিযোগ, ভরত সে সবের ধার ধারছেন না।

Advertisement

১৯ নভেম্বর ছিল ইন্দিরার জন্ম শতবর্ষ। বেলডাঙা পুরসভার বিরোধী কাউন্সিলররা চি‌ঠি দিয়ে পুরপ্রধানের কাছে জানতে চেয়েছেন কেন ইন্দিরার জন্মদিন পালন করা হল না। এ বিষয়ে অবশ্য কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি ভরত।

বেলডাঙা শহরের রেলবাজারে ইন্দিরা গাঁধীর মূর্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে। তার পর থেকে পরপর দু’বছর কংগ্রেসের বোর্ড ছিল। তাই জন্ম দিন পালনও হয়েছিল। ২০১৬ তে অধিকাংশ কংগ্রেস কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেয়। বোর্ড তাদেরই দখলে আসে।

পুরসভার বিরোধী কাউন্সিলর ছ’জন। তাদের মধ্যে কংগ্রেস ২, সিপিএমের ১ ও বিজেপির ৩ জন। পুরপ্রধানের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন তৃণমূলের কয়েকজন কাউন্সিলরও। কংগ্রেস কাউন্সিলারদের অভিযোগ, তাঁদের সাংসদ বর্তমান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এই মূর্তির উদ্বোধন করেছিলেন। সেই সময় ভরত পুরসভার কাউন্সিলার ছিলেন। পুরপ্রধান হন ২০১৫ সালে। তখনও তিনি অধীর বাবুর ঘনিষ্ঠ। দলবদলের পরেই অধীরের সঙ্গে যোগাযোগে ছেদ পড়ে।

৭ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলার কিশোর ভাস্কর বলেন, ‘‘পুরসভা মূর্তি তৈরী করেছিল। সেই মূর্তির জন্মদিন পালনের লিখিত রেজোলিউশনও রয়েছে পুরসভায়। আমরা মঙ্গলবার বেলডাঙার ৬ বিরোধী কাউন্সিলর লিখিত ভাবে পুরপ্রধানের কাছে জানতে চেয়েছি কেন ইন্দিরার জন্মদিন পালন
হল না।’’

দিন কয়েক আগে নিজে সকলকে আমন্ত্রণ করে মাতঙ্গিনী হাজরার জন্মদিনে গরহাজির ছিলেন পুরপ্রধান নিজেই। সেই বিতর্ক কাটতে না কাটতে ফের ইন্দিরা বিতর্ক। সিপিএম কাউন্সিলর মোহন ছাজের বলেন‌, ‘‘২০১৬ সালের পর থেকে মনীষিদের নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে।’’

এ বিষয়ে ভরত কার্যত এড়ানোর কৌশলই নিলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি এ ক্ষেত্রে বিরোধী কাউন্সিলরদেরও উদ্যোগ দেখিনি। সব সময় আমার উপর না চাপিয়ে সকলেরই দায়িত্ব নেওয়া উচিত।’’ পুরসভা সরকারিভাবে মনিষীদের জন্মদিন পালন করবে এটাই স্বাভাবিক। সেখানে বিরোধী কাউন্সিলরদের দায়িত্ব আসছে কোথা থেকে। তার উত্তর দেননি ভরত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন