‘সুস্থ’ শিশুর খোঁজ মর্গে

 ভোলানাথবাবুর দাবি, দু’টি শিশুর মায়ের নাম কাছাকাছি হওয়ার কারণেও ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকতে পারে। মৃত শিশুটির মায়ের নাম নাসিমা খাতুন। অন্য দিকে, নাসিরা খাতুন নামে আরেক মহিলার সন্তানও সেখানে ভর্তি ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৯ ০১:০১
Share:

প্রতীকী ছবি।

চার দিন ধরে হাসপাতালের মর্গে পড়ে ছিল সদ্যোজাতের দেহ। শিশুটির পরিবারের দাবি, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে শিশুটির মৃত্যুর খবর তাঁদের সময়মতো দেওয়া হয়নি। তাঁদের বলা হয়েছিল, শিশুটি ভাল আছে। হঠাৎ, সোমবার রাতে মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়। যদিও অভিযোগ মানতে চাননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

সূত্রের খবর, এক সপ্তাহ আগে বেলডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন জালালপুরের বাসিন্দা জনৈক জলিল শেখের স্ত্রী নাসিমা বিবি। ওজন কম এবং শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দেখা দেওয়ায় গত ২৫ জুলাই রাতে শিশুটিকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেদিনই হাসপাতালের এসএনসিইউয়ে ভর্তি করা হয়েছিল। নাসিমা বেলডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালে কয়েকদিন ভর্তি থাকার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান। জলিল শেখ মঙ্গলবার দাবি করেন, ‘‘যখনই খোঁজ নিতে গিয়েছি, বলা হয়েছে ছেলে ভাল আছে। ভিতরে ঢোকা যায় না। তাই বাইরে থেকেই খোঁজ নিয়ে গিয়েছি নিয়মিত। সোমবার হঠাৎ বলা হল, পাঁচদিন আগে নাকি বাচ্চা মারা গিয়েছে।’’

অভিযোগ নিয়ে মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপি দেবদাস সাহার প্রতিক্রিয়া, ‘‘শিশুটির মৃত্যুর পর আমরা পরিবারকে খবর দেওয়ার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করি। ফোন করা হয়েছে। হাসপাতালে মাইকে ঘোষণাও করা হয়। কিন্তু ওদের কাউকে পাওয়া যায়নি।’’ এসএনসিইউ-এর ইনচার্জ, চিকিৎসক ভোলানাথ আইচ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘শিশুটির ওজন কম ছিল। শ্বাসকষ্ট নিয়ে এসএনসিইউতে ভর্তি করা হয়েছিল। বাচ্চাটির শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে পরিবারের লোকজনের খোঁজ করা হয়। কিন্তু কাউকে পাওয়া যায়নি। ভর্তির ২৩ ঘণ্টা পরই শিশুটি মারা যায়।’’ তাঁর আরও দাবি, শিশুটির পরিবার যে ফোন নম্বর দিয়েছিল, সেই নম্বরে নানাভাবে যোগাযোগ করেও কাউকে পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত পুলিশকে জানানো হলে তারা দেহ মর্গে পাঠায়।

Advertisement

ভোলানাথবাবুর দাবি, দু’টি শিশুর মায়ের নাম কাছাকাছি হওয়ার কারণেও ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকতে পারে। মৃত শিশুটির মায়ের নাম নাসিমা খাতুন। অন্য দিকে, নাসিরা খাতুন নামে আরেক মহিলার সন্তানও সেখানে ভর্তি ছিল। তাঁর দাবি, দু’টি শিশুর মায়ের নাম প্রায় একই রকম হওয়ায় মাইকে ঘোষণা হওয়া সত্ত্বেও নাসিমার পরিবার ভুল করতে পারে।

যদিও সে কথা মানতে চাননি জলিল। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের বাড়ির কোনও না কোনও সদস্য সর্বক্ষণ এসএনসিইউয়ের পাশে ছিলেন। তাই ঘোষণার পরেও শুনতে পাইনি, এমন কথার কোনও মানে হয় না।’’ নাসিমার মা সুবাতন বেওয়াও দাবি করেছেন ‘‘কিন্তু আমিও তো ওয়ার্ডের পাশেই সব সময় থাকতাম!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন