বাস পেতে লাইন। বৃহস্পতিবার কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র
দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে শান্তিপুর ডাকঘর মোড়ের কাছে। কিন্তু কৃষ্ণনগর যাওয়ার বাসের দেখা নেই। বেশ কিছুক্ষণ পরে একখানা বাস এল বটে। তবে তাতে পা রাখারও জায়গা নেই। শেষপর্যন্ত একটি বেসরকারি বাসে কোনও মতে উঠতে পারলেন কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা অরিজিৎ রায়ের।
শুধু শান্তিপুরই নয়, বৃহস্পতিবার এ ছবি দেখা গেল জেলার বিভিন্ন জায়গায়। স্থানীয় সূত্রের খবর, কৃষ্ণনগরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক জনসভার জন্য এ দিন অনেক বাস তুলে নেওয়া হয়েছিল। সে জন্য রাস্তায় চলাচল করা বাসের সংখ্যা ছিল বেশ কম। ফলে দু’দিন বন্ধের পরে বৃহস্পতিবারও সাধারণ মানুষের ভোগান্তি অব্যাহত থাকল।
এ দিন দুপুরে কৃষ্ণনগরে প্রশাসনিক জনসভা করেন মমতা। সেখানে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে যাওয়ার জন্য জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাস ভাড়া করা হয়। পলাশিপাড়া, রানাঘাট, কৃষ্ণনগর— মোটামুটি সব জায়গা থেকেই নানা রুটের বেসরকারি বাস ভাড়া করা হয়। জেলা বাস মালিক সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা জেলায় বিভিন্ন রুটে প্রায় সাতশোর মতো বাস চলাচল করে। এর মধ্যে বেশ কিছু বাস এ দিন কৃষ্ণনগরের প্রশাসনিক জনসভায় যায়। এক বাস মালিক জানান, বাসের ভাড়া এবং সঙ্গে তেল খরচ দিয়েই বাস ভাড়া নেওয়া হয়। ক্ষতি হচ্ছে না দেখেই ভাড়া দেওয়া হয়। জেলা বাস মালিক সমিতির সহ সভাপতি নিমাই ঘোষ বলেন, “যেখানকার বাস ভাড়া নেওয়া হয়েছে, সেখানকার বিডিও অফিস থেকে বাস ভাড়া মেটানো হবে বলে আমাদের জানানো হয়েছে। আমরা তাদের নির্দেশ মতো বাস দিয়েছি।’’ বাস মালিক সমিতির কার্যকরী সমিতির সভাপতি অসীম দত্তের দাবি, রাস্তায় এ দিন পর্যাপ্ত বাস ছিল। তিনি বলেন, “বিভিন্ন রুটে বাসের সংখ্যা ঠিক রেখেই বাস দেওয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত বাস ছিল রুটে। যাত্রীদের অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।’’
গত দু’দিনের বন্ধে জেলায় অধিকাংশ বেসরকারি বাস চলেনি। এর পরে বৃহস্পতিবার বাস নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে মানুষকে। এ দিন সকালে কৃষ্ণনগর বাসস্ট্যান্ড, পলাশি স্টেশনের পাশের বাসস্ট্যান্ডে বাসের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় মানুষকে। রানাঘাট, শান্তিপুর-সহ সর্বত্রই ছবিটা একই ছিল। বাসের অভাবে টোটো, ট্রেকার, অটোর উপর ভরসা করতে হয় যাত্রীদের। সেখানেও ছিল ভিড়। এর আগে দু’দিনের ধর্মঘটের সময়ে যান পরিষেবা সচল রাখতে শাসক দল এবং প্রশাসন সক্রিয় ছিল। কিন্তু এ দিন খোদ মুখ্যমন্ত্রীর সভাকে ঘিরে বাস দুর্ভোগকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। নদিয়ার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তকে ফোন করা হলে তিনি ব্যস্ত আছি বলে ফোন কেটে দেন।