প্রতীকী চিত্র।
‘টেস্ট ড্রাইভ’ যে কত দীর্ঘ হতে পারে, বছর খানেক ভেবেও তার কূল-কিনারা পাননি সুদীপ সাহা। ‘এক বার চালিয়ে দেখি’ বলে তাঁর সাধের কেটিএম মোটরবাইক নিয়ে সেই যে উধাও হল যুবক, তার সন্ধান মেলেনি।
সুদীপ এখনও সেই উত্তর হাতড়ে গেলেও, নবদ্বীপ থানার পুলিশের জালে পড়েছে সেই কেপমার। দামি বাইক বিক্রির টোপ ফেলেই সোমবার তাকে ধরে পুলিশ। তার নাম সুমন ঘোষ। বাড়ি কৃষ্ণনগরের বাঘাডাঙায়।
ঘটনা গত বছর ১৬ আগস্টের। নবদ্বীপ মণীন্দ্র নন্দী রোডের বাসিন্দা সুদীপ তার কয়েক দিন আগে পুরনো জিনিসপত্র বিক্রির একটি ওয়েবসাইটে নিজের কেটিএম মোটরবাইক বিক্রির জন্য বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন। বিজ্ঞাপন দেখে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে এক যুবক। নাম বলেছিল ভাস্কর। জানিয়েছিল নবদ্বীপের উল্টো দিকে গঙ্গার ওপারে স্বরূপগঞ্জে তার বাড়ি।
পেশায় ব্যবসায়ী সুদীপ জানান, প্রাথমিক যোগাযোগের পর ওই যুবক একাধিকবার নবদ্বীপে আসেন বাইকটি কেনার জন্য কথা বলতে। শেষ পর্যন্ত মোটর বাইকটির দাম ঠিক হয় এক লক্ষ ষাট হাজার টাকা। প্রথম দিন তাকে গাড়িটি চালিয়ে দেখতে বলেছিলেন তিনি। কিন্তু ভাস্কর (সুমন) তাকে জানায় ১৬ আগস্ট টাকা দিয়ে একেবারে মোটরবাইক চালিয়ে বাড়ি ফিরবে। নির্দিষ্ট দিনে সুদীপ ওই যুবককে নবদ্বীপ আদালত সংলগ্ন সরকার পাড়ায় এক দোকানে আসতে বলেন। সে ভোটের সচিত্র পরিচয়পত্র নিয়ে বেলা ১১টা নাগাদ চলে আসে। জানায় জামাইবাবু আসছে টাকাপয়সা নিয়ে। এর পর গল্পগুজবের ফাঁকে একসময় বলে “ততক্ষণে একটু চালিয়ে দেখি।” সুদীপ বলেন, “বেশ কয়েকবার কথা এবং দেখা হয়েছে বলে একটা বিশ্বাস তৈরি হয়েছিল। আমি তাতে রাজি হয়ে যাই।’’
মিনিট পনেরো কেটে যাওয়ার পরেও ভাস্কর না ফেরায় টনক নড়ে সুদীপের। ততক্ষণে তিনি বুঝে যান কী হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই ছুটে যান থানায়। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, ওই যুবকের দেওয়া নাম-ঠিকানা ভুয়ো। যে মোবাইল নম্বর থেকে যোগাযোগ করেছিল, সেই সিম কার্ডটিও জাল। হাওড়ার এক বৃদ্ধের নামে নেওয়া।
পুলিশ এবার জাল পাতে অন লাইনে। দামি বাইক বিক্রির বিজ্ঞাপন দেয় পুলিশ। এ বারও যোগাযোগ করে সুমন। কথাবার্তা বলার জন্য তাদের কৃষ্ণনগরে ডাকে সে। সোমবার সকালে বাইক দেখতে এসে সুমন দেখে তার সামনে যারা দাঁড়িয়ে, তারা পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, একসময় খেলাধুলার জন্য এলাকায় পরিচিতি ছিল তার। নবদ্বীপ আদালত সুমনকে চার দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তাকে জেরা করে আরও তথ্য পাওয়া যাবে।