বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু করে দৃষ্টান্ত স্কুল

স্কুলের প্রধান ফটকের বাইরে দাঁড়িয়ে দেরি করে আসা কিছু ছাত্র।বেলা ১১টা বেজে গিয়েছে।হঠাৎ হনহন করে এসে ছাত্রদের পাশ কাটিয়ে ভিতরে ঢুকে গেলেন এক শিক্ষক। ছেলেরা চেঁচামেচি জুড়ে দিল— শিক্ষক যদি দেরি করে এসে ঢুকতে পারেন, তবে তাদের কী দোষ?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হরিহরপাড়া শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:২৯
Share:

স্কুলের প্রধান ফটকের বাইরে দাঁড়িয়ে দেরি করে আসা কিছু ছাত্র।

Advertisement

বেলা ১১টা বেজে গিয়েছে।

হঠাৎ হনহন করে এসে ছাত্রদের পাশ কাটিয়ে ভিতরে ঢুকে গেলেন এক শিক্ষক। ছেলেরা চেঁচামেচি জুড়ে দিল— শিক্ষক যদি দেরি করে এসে ঢুকতে পারেন, তবে তাদের কী দোষ?

Advertisement

কিছু শিক্ষকের প্রায়ই দেরি করে আসার ইতি ঘটাতে এ বার বাওমেট্রিক হাজিরা নেওয়া চালু করল হরিহরপাড়ার স্বরূপপুর হাইস্কুল। যার ফলে, এখন আর কেউ পরে এসেও হাজিরা খাতায় সই করতে পারবেন না। যন্ত্রে আঙুল ছোঁয়ালেই লিপিবদ্ধ হয়ে যাবে, শিক্ষক নিয়ম অনুযায়ী বেলা পৌনে ১১টার মধ্যে স্কুলে ঢুকেছেন কি না।

কলেজে বাওমেট্রিক হাজিরা চালু করা নিয়ে গত শনিবার কলকাতায় সরকারি শিক্ষক সম্মেলনে যেখানে কোনও ঐকমত্য হয়নি, একটি প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুল নিজের উদ্যোগে তা করে ফেলল। গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকেই এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে। মঙ্গলবার স্কুলের ৬০ বছর পূর্তি উৎসবের সূচনায় তা আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণাও করা হল।

গোটা মুর্শিদাবাদ জেলায় এই ব্যবস্থা চালু হল এই প্রথম। জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) পূরবী দে বিশ্বাস বলেন, ‘‘জেলা দফতরে এই ব্যবস্থা চালুর ব্যবস্থা নিয়েছি আমরা। জেলার ৫০টি স্কুলেও তা শুরু করার প্রাথমিক উদ্যোগ হচ্ছে্, তবে তা চালু হয়নি এখনও। হরিহরপাড়া স্বরূপপুর হাইস্কুলকে কৃতিত্ব দিতেই হবে।’’

কেন এই ব্যবস্থা চালু করা হল?

স্কুল সূত্রের খবর, সেখানে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ২৬০০। শিক্ষকের সংখ্যা মাত্র ২৯। ১৫টি আসন শূন্য। এর উপরে শিক্ষকেরা দেরি করে এলে বা দুমদাম কামাই করলে সমস্যা আরও বাড়ে। তবে সবাই যে নতুন পদ্ধতি মানতে রাজি ছিলেন, এমন নয়। কিছু শিক্ষক বাধা দেওয়ার চেষ্টাও করেন। কিন্তু পরিচালন সমিতি ও স্কুলের চার সদস্যের কোর কমিটি অনড় ছিল। প্রধান শিক্ষক চন্দন মণ্ডল বলেন, ‘‘শিক্ষক সুশীল রায় ও সিরাজুল হক জোরালো সওয়াল করেন। পরে সবাই তা মেনে নেন।’’ হায়দরাবাদ থেকে যন্ত্র কিনে বহরমপুর থেকে প্রশিক্ষিত কর্মী নিয়ে এসে সেটি বসানো হয়। তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি শেখ ফুরকান থেকে কংগ্রেসের পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি মহাফুজ আলম, সকলের মতেই এই দৃষ্টান্ত বাকিরা যত দ্রুত অনুসরণ করে, ততই মঙ্গল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন