আকচাআকচি রইল উপর তলায়, নিচুতলায় হাত ধরাধরির রেওয়াজে রইল না কোনও রাখঢাক।
ফরাক্কায় গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়তে বিজেপি’র হাত ধরল কংগ্রেস।
বুধবার বেওয়া ১ পঞ্চায়েতে বিজেপিকে প্রধান পদ ছেড়ে কংগ্রেস সাদরে গ্রহণ করেছিল উপপ্রধান পদ। সোমবার একই ভাবে বেওয়া ২ পঞ্চায়েতে প্রধান পদ নিয়ে কংগ্রেস বিজেপি’কে ছেড়ে দিল উপপ্রধান পদটি। তবে কংগ্রেস-বিজেপি দু’দলই জানিয়েছে, স্থানীয় রাজনীতিতে তৃণমূলকে ঠেকাতেই এই জোটে হেঁটেছেন তারা। অন্য দিকে একে ‘অশুভ সাম্প্রদায়িক জোট’ বলে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল।
সোমবার বেওয়া ২ পঞ্চায়েতে কংগ্রেসের ছোটন মেহেরা প্রধান হয়েছেন। উপপ্রধান হয়েছেন বিজেপি’র অনিতা মন্ডল। বুধবার ছিল বেওয়া ১ পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন। ১৫ সদস্যের পঞ্চায়েতে কংগ্রেসের এক সদস্য তৃণমূলে যোগ দিলেও ৮-৭ ব্যবধানে প্রধান হন বিজেপির কুণাল ঘোষ ও উপপ্রধান হন কংগ্রেসের আব্দুল ফারুক। ফরাক্কায় সামগ্রিক ভাবে ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে কংগ্রেস, সিপিএম ও বিজেপি মিলিয়ে ৭০টি আসনে জয়ী হয়েছে। এর মধ্যে ৫’টি আসনে অনায়াসেই তৃণমূল-বিরোধী বোর্ড গড়ার অবস্থায় ছিল বিরোধীরা। যেমন অর্জুনপুরে মোট ১৭টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ৮, কংগ্রেস ৬, সিপিএম ২ ও নির্দল একটি আসন পেয়েছে। মহেশপুরে ১২টি আসন। তৃণমূল পেয়েছে ৩টি, ৪টি সিপিএম ও ৫টি কংগ্রেস। ২৬ আসনের বেনিয়াগ্রামে তৃণমূল ১২টি, বিজেপি ৮টি , কংগ্রেস ৫টি ও সিপিএম একটি আসনে জয়ী হয়েছে। বেওয়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট আসন ১৫টি। তৃণমূল ৬টি, কংগ্রেস ৫টি ও বিজেপি পেয়েছে ৪টি আসন। বেওয়া ২ পঞ্চায়েতে ১২টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস পেয়েছে ৫টি আসন, সিপিএম একটি ও ৩টি করে আসনে জয়ী হয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি। কিন্তু জয়ী বিরোধী সদস্যদের বেশির ভাগই পরে দল বদল করে তৃণমূলে ভেড়ায় অনায়াসেই অর্জুনপুর, মহেশপুর-সহ ৫টি দখল নিয়েছে তৃণমূল। ২’টি বোর্ড গঠন বাকি রয়েছে। কিন্তু বহু চেষ্টা সত্বেও বেওয়া এক ও দুই পঞ্চায়েতে বিজেপি ও কংগ্রেসিদের মধ্যে এক জন ছাড়া কাউকেই দলে আনতে পারেনি তৃণমূল। তাই শেষ পর্যন্ত সেই দুই পঞ্চায়েতের দখল নিয়েছে কংগ্রেস ও বিজেপি জোট।
ফরাক্কার কংগ্রেস বিধায়ক মইনুল হক বলছেন, “তৃণমূলের তরফ থেকে দুই গ্রাম পঞ্চায়েতেই বোর্ড গড়তে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল কংগ্রেসের কাছে। কিন্তু জয়ী সদস্য ও সেখানকার দলীয় নেতা ,কর্মীরা রাজি হননি তৃণমূলের সঙ্গে বোর্ড গড়তে। তাই তারা যেটা ভাল বুঝেছেন করেছেন।” বিজেপি’র মুর্শিদাবাদ (উত্তর) জেলা সভাপতি সুজিত দাসের কথায়, “দলের স্পষ্ট নির্দেশ তৃণমূল বিরোধী বোর্ড গড়তে পরিস্থিতি মত যে কোনো দলকে সমর্থন করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে ফরাক্কার স্থানীয় নেতৃত্ব যেটা ভাল বুঝেছেন সেটাই করেছেন।”