দেওয়াল জুড়ে ঢাউস পদ্ম-পোস্টার দেখে চমকে উঠেছিলেন তিনি— ‘তৃণমূলের ফুলটা এমন ডাগরটি হল কী করে!’
বছর কয়েক আগের নির্বাচন। পদ্ম-প্রতীকের সঙ্গে আলাপ না-হওয়া ডোমকল এমনই অবাক প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছিল। প্রান্তিক মানুষের সঙ্গে পরিচয় না হওয়া সেই দলটাই এ বার শাসক কিংবা জোটের ভোট-কেটে নির্ণায়ক হয়ে ওঠার সম্ভাবনা তৈরি করেছে। তা-ও প্রায় পঁচানব্বই শতাংশ সংখ্যালঘু প্রভাবিত প্রান্তিক ডোমকলে। শুক্রবার, সেই ডোমকলেই ঘুরে গেলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলিপ ঘোষ। লম্বা মিছল থেকে বেরিয়ে এসে অনুগামীদের অনুরোধে এক লাফে মোটরবাইক চেপে ধোঁয়াশাও ছড়িয়ে গেলেন, ‘‘দেখুন না কী হয়!’’
তবে, নিতান্ত সামান্য হলেও বিজেপি-র বাক্সে ভোট পড়লে তাতে যে কপালে তাঁদেরই ভাঁজ পড়ার কথা তা মেনে নিচ্ছেন, কংগ্রেস-বাম দু’ পক্ষই। তৃণমূলের এক নেতা হিসেবটা আরও স্পষ্ট করে দিচ্ছেন— ‘‘বিজেপি-র আস্তিনে লুকানো আছে, কিছু হিন্দু ভোট। আর মনে রাখবেন সেটা বাম-কংগ্রেসের। কারণ, তৃণমূলের ভোট ব্যাঙ্কটা নির্দিষ্ট। কংগ্রেস এমনকী বামেদের একটা অংশের ভোট এ বার হতাশ হয়ে বিজেপিকে ভোট দিতে পারে। আর তাতে আখেরে লাভ তৃণমূলের।’’
সামান্য হলেও, মাথার উপরে চড়া রোদ্দুর নিয়ে হুড খোলা জিপে সেই বোটেরই খোঁজ এ দিন সেরে গেলেন দীলিপবাবু। ঘুরে দেখলেন, বাজিতপুর গ্রামের ক্লাবের সামনে বোমাবাজির এলাকাটা। বললেন, ‘‘সন্ত্রাসের ডোমকলে আমরা ২০ টা ওয়ার্ডে প্রার্থী দিয়েছি। সন্ত্রাসের ডোমকলকে বদলে পেলাটাই আমাদের সংকল্প।’’
যে চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত হয়েছে পুরসভা, সেখানে ইতিপূর্বে এক-দু’টির বেশি প্রার্থী দিতে পারেনি বিজেপি। এই প্রথম পুরভোটে লড়তে নেমে তারা ২০ ওয়ার্ডে প্রার্থী দিয়েছে। বিজেপির দাবি, কেবল প্রার্থী দেওয়া নয়, এই এলাকায় তাদের সাত জন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ প্রার্থী হয়েছেন। তাহলে?
জেলার এক বাম নেতা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘হিসেববের বাইরেও একটা হিসেব থাকে, দেখুন না!’’