প্রশাসনের ঢক্কানিনাদই সার। সেই নজরদারির অভাব, সেই অতিরিক্ত যাত্রী— আর তার জেরেই ফের নৌকাডুবি। শান্তিপুরের নৌকাডুবির আতঙ্ক উসকে দিয়ে মঙ্গলবার নৌকাডুবির ঘটনা ঘটল তেহট্টে। কিন্তু, এ ক্ষেত্রে প্রাণহানি না ঘটায় হাফ ছেড়ে বেঁচেছে প্রশাসন।
মাস তিনেক আগে শান্তিপুর-কালনাঘাটের ফেরিতে অতিরিক্ত যাত্রী উঠে পড়ায় মাঝ রাতে মাঝ গঙ্গায় ডুবে গিয়েছিল নৌকা। ২০ প্রাণের বিনিময়ে প্রশাসনের নজরদারির গাফিলতি চোকাতে হয়েছিল নিরীহ যাত্রীদের।
মঙ্গলবার তেহট্ট-চকবিহারি ঘাট থেকে ফেরি ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই উলটে যায়।
এই ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও ক্ষুব্ধ ও আতঙ্কিত এলাকার মানুষ। প্রশাসন ও স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, বহু পুরনো এই ফেরিঘাটে প্রতিদিন দুই পারের কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করে। বছরভর নদীতে জল কম থাকায় বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে পারাপার করলেও বর্ষাকালে জল বেড়ে যাওয়ায় শুরু হয় নৌকা চলাচল।
সোমবার রাতে জলঙ্গি নদীর জল হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় বাঁশের সাঁকো ভেঙে যায়। মঙ্গলবার সকাল থেকে ঘাটের ইজারাদারদের একমাত্র হালটানা একটি নৌকা চালু হয়। এদি সকাল থেকেই নদীর দুই পাড়ে কয়েকশো মানুষের ভীড় জমে যায়।
যে নৌকায় সর্বোচ্চ ৫০ জন যাত্রী উঠতে পারে, তাতে শতাধিক যাত্রী উঠে পড়ে। নৌকা ঘাট থেকে ছাড়ার পরেই সেটি উলটে যায়। যাত্রীদের চিৎকার চেঁচামতিতে তখন ঘাটে আতঙ্কের পরিবেশ।
নদীর পারে স্কুল পড়ুয়ারাও অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু ভিড় দেখে তাঁরা আর নৌকায় চড়েননি। পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীরাই জল থেকে যাত্রীদের পাড়ে তোলেন। এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, মাঝ নদীতে নৌকাডুবি ঘটলে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতেই পারত। অভিযোগ, বড় নৌকা না চালিয়ে ছেট নৌকা চালানোর জন্যই এই ঘটনা ঘটল।
কেন ছোট নৌকা চালানো হল? সেই প্রশ্নের উত্তর দেননি ইজারাদার গঙ্গা চৌধুরী। তিনি বলেন, “ছ’-সাতদিনের মধ্যে বড় নৌকার ব্যবস্থা করা হবে।’’ তেহট্টের মহকুমা শাসক অর্ণব চট্ট্যোপাধ্যায় বলেন, “ওই ফেরিঘাটে এভাবে ছোট নৌকা চালানো বিপজ্জনক। আমরা নজরদারি শুরু করব। দু’-এক দিনের মধ্যেই ঘাটে বড় ভুটভুটি নৌকা চালানোর ব্যবস্থা করা হবে।’’
কিন্ত এই ঘটনার প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ, ‘‘আগে থেকে প্রশাসন যদি ইজারাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বড় নৌকা চালানোর ব্যবস্থা করত তাহলে এমন বিপত্তি এড়ানো যেত। এ দিন কিছু ঘটে গেলে তার দায় কে নিত?’’