নজরবন্দি: এই ক্যামেরা লাগানো থাকছে পুলিশ আধিকারিকদের পোশাকে। যার দৌলতে পুলিশের কাছে থেকে যাচ্ছে যাবতীয় তথ্য। —নিজস্ব চিত্র।
পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে বা পুলিশকর্মীকে মারধর করে ভিড়ে মিশে যাওয়ার দিন শেষ! এ ধরনের ঘটনায় এ বার থেকে নজর রাখবে পুলিশের ‘অদৃশ্য চোখ’।
পুলিশের ওই ‘অদৃশ্য চোখ’ আসলে শক্তিশালী একটি স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরা। যার নাম ‘বডি ওর্ন ক্যামেরা’। নজরদারি এবং নিরাপত্তার কাজে অত্যন্ত কার্যকরী ওই ক্যামেরা এবার থেকে ব্যবহার করবে নদিয়ার সব ক’টি থানা। ক্যামেরাগুলি লাগানো থাকবে ওসি বা আইসিদের পোশাকে। কলকাতা পুলিশে এই ক্যামেরার ব্যবহার আগেই শুরু হয়েছে। নদিয়া পুলিশের উদ্যোগে ইতিমধ্যে জেলার ২৩টি থানার আইসি এবং ওসির কাছে পৌঁছে গিয়েছে ওই ক্যামেরা। শুরু হয়ে গিয়েছে তার ব্যবহারও। নদিয়ার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার বলেন, “পুলিশের সব ধরনের কাজেই এ ক্যামেরা কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।” কোনও ঘটনার স্বয়ংক্রিয় ছবি তোলাই নয় পাশাপাশি ‘সিপি প্লাস’ নামে ওই ক্যামেরার সাহায্যে জিপিএস পদ্ধতিতে ব্যবহারকারীর অবস্থান সম্পর্কেও জানা যাবে। ১২৮ জিবি’র ক্যামেরায় কোনও ঘটনার লাইভ মনিটরিং করার পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন কোণ থেকে ছবি তোলার ক্ষমতাও। ওয়াইফাই সংযোগ সম্পন্ন ওই ক্যামেরা এক টানা আট ঘণ্টা কাজ করতে পারে। পারে অত্যন্ত কম আলোতেও ঝকঝকে ছবি বা ভিডিয়ো তুলতে। পুলিশের ওয়াকিটকি এবং অন্যান্য ক্যামেরার সঙ্গে সহজেই যুক্ত করা যায় এটি।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যে কোনও পুলিশি অভিযানে থাকবে ওই ক্যামেরা। যা দিয়ে গোটা ঘটনার ছবি ধরা পড়বে। কোনও অবরোধ বা আন্দোলন হিংসাত্মক হয়ে উঠলে ওই ক্যামেরার মাধ্যমে জানা যাবে কারা তাতে কী ভূমিকা পালন করেছিলেন। কোথাও পুলিশি নিগ্রহের ঘটনা ঘটলে সেখানে কারা উস্কনি দিয়েছিল, সবই ধরা থাকবে ক্যামেরায়। বিভিন্ন সময়ে পুলিশের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ ওঠে। বিশেষ করে নাকাবন্দির সময় সাধারণ মানুষকে হেনস্থা করার যে অভিযোগ ওঠে, সে ক্ষেত্রে ওই ক্যামেরার ছবি থেকে প্রকৃত সত্য জানা যেতে পারে। কোনও বড়সড় অপরাধ ঘটলে দুষ্কৃতীরা যাতে এলাকা ছেড়ে পালাতে না পারে কিংবা কোন জঙ্গি হামলার আশঙ্কা থাকলে তার ছক বানচাল করতে বা সন্দেহভাজনকে ধরতে পুলিশ প্রশাসন নাকাবন্দি করে।
আবার উৎসবের আগে, বিশেষ দিনে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বা রাস্তার গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে গাড়ি তল্লাশি করা হয়। এ সব ক্ষেত্রে ‘সিপি প্লাস’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।
এছাড়া রাজনৈতিক দলের বিক্ষোভ কর্মসূচি, থানায় ডেপুটেশন ইত্যাদি অনেক ক্ষেত্রেই প্রশ্ন ওঠে। সে সব ক্ষেত্রেও এই ক্যামেরা নিরপেক্ষ ভূমিকা নিতে পারে।